তুলসী : দি অ্যাডভেঞ্চারস অফ আ বেঙ্গলি হাউসওয়াইফ ২য়

পর্ব ৮ 

চোর ধরতে গিয়ে নিজেই ধরা পড়ে গিয়েছিল তুলসী। মানে, ছেলের বয়সি কমপিউটার হ্যাকার কেটুর প্রেমে পড়ে গিয়েছিল সে। নিজের হাসবেন্ড সমীরের ইমেল হ্যাক করে কৃষ্ণকুমার মিত্র, ওরফে কে.টু.মি শর্টে কেটু, যে ভিডিও তাকে দেখিয়েছিল সেটা দেখে বহুদিনের সেক্সএ উপেক্ষিতা তুলসী আর নিজেকে সামলে রাখতে পারেনি। সমীর আর তার কল-গার্ল স্বাতির উদ্দাম রতিক্রীয়া দেখে তুলসী এতটাই বিহ্বল হয়ে পড়েছিল যে সে তখন‌ই কেটুকে একটা ব্লো-জব দিয়ে দেয়। আর তার পরে‌ই অবশ্য আরো দুবার লাগিয়ে কৃষ্ণকুমারের কুমারত্ব চিরকালের জন্য ঘুচিয়ে দেয় তুলসী। ​

তবে এইবার আসুন, দেখি কিরকম এক্রোপোলিস মলের ছাদে, ওসোরা বারে বসে দুই প্রেমিক পিনাকোলাডার প্রেমে, থুড়ি একে ওপরের প্রেমে, হাবুডুবু খাচ্ছে। ​

“তোদের অফিসের পিকনিকে আমি কোন মুখে যাবো? আমি কি তোর ওয়াইফ?”​

কেটুর কোমপানি, পেরিমিটার কন্ট্রোলস‌এর বাত্‍সরিক গেটটুগ্যাদারে নিয়ম হচ্ছে যে একলা এলে হবে না। কাপল হিসেবে আসতে হবে।​

“ওয়াইফ ছাড়া কি কেউ কাপল হতে পারে না? কানু-দার রুল হচ্ছে ওয়াইফ, গার্ল ফ্রেন্ড, আত্মীয় যে কেউ হলেই হোল। ব্যাস উল্ট জেন্ডার হতে হবে যাতে পার্টির সেক্স রেশিও এক থাকে।”​

“গার্ল-ফ্রেন্ড? তো এতদিন তোর কে গার্লফ্রেন্ড ছিল শুনি?”​

“ছিল না। তাই প্রথম বছর, যাই নি। ডিচ মেরেছিলম। কানু-দা ভিষন রেগে গিয়েছিলেন। বলেছেন যে এবার ব্যবস্থা করতে না পারলে ওল্ড-এজ হোম থেকে এক বৃদ্ধাকে সঙ্গে ভিড়িয়ে দেবেন আর তার দায়িত্ব আমার হবে।”​

তুলাসিরও ব্যাপারটা খুব খারাপ লাগছিল না। ছেলে ক্লাস ১১এর পরীক্ষা দিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে গোয়াতে বেড়াতে যাবে। আর সমীর তো লেডি রানুকে নিয়েই ব্যস্ত। তাহলে আর কি..​

“ঠিক আছে লাভার-বয় । তোর সাথে তোর মাসি সেজেই তোদের পিকনিকে চলে যাব। তবে এখন তোর পিনাকোলাডাটা শেষ কর।” নিজের তিন-নম্বর ককটেলটা বটম্‌স্-আপ করে তুলসী ঢুলু ঢুলে চোখে কেটুর দিকে চাইলো। “অনেক রাত হোল। চল এবার আমায় বাড়ি পৌঁছে দে। “​

সেদিন রাতে তুলসীকে বাড়িতে পৌঁছে দিতে গিয়ে কেটু একটা সাংঘাতিক দুঃসাহসিক কাজ করেছিল। এরকম রিস্ক নেওয়ায় একটা থ্রিলিং মাদকতা আছে । বাড়ির ভেতরে ওর হাসবান্ড আর ছেলে থাকলেও, বহুতল বিল্ডিংএর ফ্লাটের ফয়ারে দাঁড়িয়ে দুজনে দুজনকে গভীর থেকে গভীরতর থেকে গভীরতম চুমু খেয়ে তারা তুলসীর উদাসীন পরিবারের দিকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ছিল। তারা যে আপাতত অফিশিয়ালি কাপল। তাই না?​

শহরের নানা জায়গা থেকে পিকনিক যাত্রীদের তুলে দুটো বড় বড় লাকশারি বাস চলেছে হুগলি নদীর উপকূলবর্তি এক নিভৃত বাগানবাড়ীর দিকে। কেটুর সঙ্গে তুলসী বাসে উঠতেই, বাসের হেল্পার তাদের দুজনকে দুটো ছোট ছোট মুখোস দিল।​

“স্যার, ম্যাডাম এদুটো পরে নিন।”​

কপাল থেকে নাক অবধি ছোট্ট মাস্ক — মাস্কারেড বল‌এ যেমন পরে । চশমার তলা দিয়েও বেশ পরা যায়। তুলসী দেখল যে বাসের বাকি সব যাত্রীরা সকলেই সেই রকম মাস্ক পরে রয়েছে।​

“পরে ফেল মাসী, আমাদের পিকনিকের এইটাই নিয়ম।”, বলে খ্যাক খ্যাক করে হেসে মাস্কটা পরে নিল কেটু তারপর তুলসীকেও পরিয়ে দিল। বাসের অনেক লোক‌ই হেসে বা হাত নেড়ে কেটুকে ওয়েলকাম করলো। আবার পেছন থেকে কে একজন বলে উঠলো, “তোর এবারের নতুন পার্টনার কেরে?”​

সঙ্গে সঙ্গে কে আবার বলে উঠলো। “ক্যানট আস্ক এগেনস্ট দ রুলস ।” সবাই আবার হেসে উঠলো।​

বাগানবাড়িতে পৌঁছেই আর একটা ছোট্ট অনুষ্ঠানে তুলসীর শরীর মন আবার রোমাঞ্চিত হয়ে উঠলো। একটা বিশাল বটবৃক্ষের ঝুরি নামা অসংখ্য শিকড়ের জঙ্গলের মাঝে এক মহিলা দাঁড়িয়ে রয়েছেন। চোখ নাক সকলের মতো মাস্কে ঢাকা, কিন্তু ছোট্ট কাঁচুলি দিয়ে বুক ঢেকে রাখা ছাড়া ঊর্ধাঙ্গ একেবারে খালি। সাদা-কালো সল্ট-অ্যান্ড-পেপ্পার চুলের ঢল খোলা পিঠের ওপর দিয়ে কোমর অবধি নেমে গেছে, নিচু করে বাঁধা শাড়ি অবধি।​

আর তাকে দেখে তুলসীর কৌতূহল তখন তুঙ্গে। শেষে আর জিজ্ঞেস না করে থাকতে পেড়ে সে কেটুকে বলল,”আই, ইনি কে রে?”​

“উনি কানু-দার পার্টনার। প্রত্যেক পিকনিকেই থাকেন আর..”​

“মন্ত্রগুপ্তির সময় হয়ে গেছে, সবাই এদিকে চলে এস। যাদের এটা প্রথমবার, তারা সামনে এসে দাঁড়াও।”​

মহিলা সকলকে আহ্বান করলেন। তুলসী আর আরো দুজন, এক পুরুষ আর এক নারী, সামনে এদিয়ে গেল আর বাকিরা তাদের ঘিরে ধরলো।​

“পেরিমিটার কন্ট্রোলসের পিকনিকে আজ আমি, লোলিতাবুড়ি, তোমাদের সকলকে এই পিকনিকে সাদর আমন্ত্রণ জানাই। আমাদের এখানে তিনটে সহজ নিয়মের কথা সকলকে মনে করিয়ে দেব। এক, হোয়াট হ্যাপ্পেনস ইন দিস পিকনিক, স্ট্যেস ইন দ পিকনিক। এই পিকনিকের কথা বা ছবি বাইরে কোথাও রটানো যাবে না। দুই, মুখের মাস্ক খোলা যাবে না। আর পরনের সব কিছু খুলে ফেলা যেতে পারে, কিন্তু মাস্ক নয়। আর তিন, যা হবে তা হবে ওইথ সকলের কনসেন্ট। কোন রকম জোর জুলুম হবে না।” ​

“হ্যাঁ হ্যাঁ.. নিশ্চয়.. এগ্রিড ” চারদিক থেকে সবার সম্মতি এল ।​

“তাহলে এবার আমদের ভোডকেশ্বরীর মন্ত্রগুপ্তির পালা ।” লোলিতা, যাকে বুড়ি বলতে কেমন ইতস্তত লাগে এবার একটা ছোট্ট স্পিরিট স্টোভ বার করে সামনে রাখলো। তারপর হঠাৎ পাশ থেকে একজন একটা লিকারের বোতোল বার করে সেই ক্লিয়ার স্পিরিটের কিছুটা ঢেলে দিল সেটার ওপর। ​

” স্পিরিটাস রেক্টিফিকোওয়ানি – ১৯২ প্রুফ । সাংঘাতিক স্ট্রং পোলিশ ভোডকা। ” সেই বোতলের দিকে ইশারা করে কেটু ফিস ফিস করে তুলসীকে বলে উঠল। ​

এরপর লোলিতা একটা দেশলাই জ্বেলে ভোডকা ভর্তি স্টোভের গায়ের ধরতেই, ৯৬% ইথাইল দ্বপ করে জ্বলে উঠলো। ​

এইবার তুলসী আর অন্য দুজন নবীন আগন্তুক সেই শিখার ওপর হাত রেখে, সকলের সঙ্গে গলা মিলিয়ে বলল,”মন্ত্রগুপ্তি। মন্ত্রগুপ্তি। মন্ত্রগুপ্তি। ভোডকেশ্বরীর মন্ত্রগুপ্তির জয়।”​

সেই রিচুয়ালটা (অনুষ্ঠান) শেষ হতেই লোলিতার আসল আহবান এল,”ওইদিকে বার খোলা আছে। কার্লসবার্গ, হাইনিকেন, স্মার্ণফ, ব্ল্য়াক ডগ, বুড়ো সাধু আর ডাবের জল দিয়ে এবার আসল পিকনিক শুরু হোক।” 

পর্ব ৯ 

“সত্যি কথা হল যে মেয়েরা যতটাই শরীর দেখাতে ভালোবাসে, ছেলেরা ততটাই মেয়েদের শরীর দেখতে ভালবাসে। কিন্তু ভিক্টোরিয়ান হিপোক্রাসি আর বাঙ্গালি ন্যাকামির ঘুরপাকে পড়ে সকলেই বড় বড় কথা বলে।”​

“যা বলেছো লোলিতা-দি। আর বাঙ্গালি আঁতেল হলে তো আর কথাই নেই? প্রেম, ভালোবাসা কালচার, শেষের কবিতার অমিত রায় আর লাবন্য অথবা ঠাকুররের বুলি।”​

তুলসী আর লোলিতা দুটো ডেকচেয়ারে শুয়েছিল। গাছের নরম ছায়া, সামনে হুগলি নদীর ওপর দিয়ে কোলকাতা পোর্ট গামি জাহাজের দৃশ্য আর পাশে দুটো টল গ্লাসে ভোডকা উইথ ডাবের জল। ব্যাস! পিকনিকে আর কি চাই?​

“এই হিপোক্রেসি থেকে কোমপানির লোকজনকে এক দিনের জন্য রেহাই দেবার জন্য কানু আর আমি সকলকে বছরে একবার করে এইখানে নিয়ে আসি। মনের অতলে চাপা পড়ে যাওয়া ফ্যানটাসি গুলো একদিন বাধা ছাড়া ভোগ ভাবে করে নিলে, সারা বছর আবার সব ঠিক চলে। নারী পুরুষের মধ্যে যৌনরশায়নের পি-এইচ ব্যালেন্সটা এসিড-এলকালির মাঝে ৬তে দাঁড়িয়ে যায়। আমাদের ছোট্ট সমাজে শান্তি বজায় থাকে।”​

“জানি। রোমান লুপারক্যালিয়া আর আমাদের হোলি বা দোলযাত্রা এক‌ই রকম। নেশা করে ছেলে মেয়েরা দুষ্টুমি করে”​

প্রথমে এতসত না বুঝলেও, তুলসী পিকনিকের শুরুতেই বেশ কিছুটা আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিল। মন্ত্রগুপ্তির শপথ নিয়েই সকলে দৌড়েছিল বারের দিকে কিন্তু তুলসী দেখেছিল যে ড্রিংসের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতেই বেশ কিছু মেয়ে ব্লাউস, টপ আর টি-শার্টের ভেতরে হাত ঢুকিয়ে নিজেদের ব্রা গুলো টেনে বার করে বারের কাউন্টারে ফেলে দিল। তারপর মহা উৎসাহে প্রথম ড্রিংকটা বটম্‌স আপ করেই হৈহৈ করে সুইমিং পুলে নেবে পড়ল। ছেলেগুলো প্যান্ট শার্ট খুলে, জাঙ্গিয়া পরে নাবলেও, প্রথমে মেয়েগুলো একটু রাখা ঢাকা ছিল। তবে আর একটা ড্রিংক্সের পরেই বেশ কিছু মেয়েকে টপলেস দেখে তুলসীর মধ্যবিত্ত চক্ষু চড়কগাছে উঠে গেল। এখানে হচ্ছে কি রে বাবা? তাকেও কি এবার সকলের সামনে ন্যাংটো হতে হবে? ​

“ঘাবড়াবেন না ম্যাডাম,” তার মনের কথা বুঝে পাশের একটি ছোকরা আশ্বস্ত করলো। “যখন‌ই জলে নামতে ইচ্ছে করবে, বলবেন, আমরা সবাই আছি আপনার জন্য। কেটু না থাকলেও আপনার কোন চিন্তা নেই।” বলে একটা কি মিষ্টি হাসি হাসল ছেলেটা।​

আর সেই আবেদনে নিজেকে সামলতে না পেরে ছেলেটিকে জড়িয়ে ধরে একটা হামি খেয়ে বসল তুলসী আর সেই ফাঁকে ছেলেটিও টুক করে তার বড় বড় মাইদুটো টিপে দিল। অন্য সময়ে এসব ভাবাই যায় না। কিন্তু যস্মিন দেশে যদাচার। কেটুকে পুলের মধ্যে এক ঝাঁক হাফ-ন্যাংটো মেয়েদের কাছে রেখে, তুলসী সেই মিষ্টি ছেলটির সঙ্গে একটু এগিয়ে গেল। দেখল একদঙ্গল নারী-পুরুষ গাছের ছায়ায় বসে তাস পেটাচ্ছে । তবে সকলেই বেশ ভাল করে জামাকাপড় পরা।​

“ওরা স্ট্রিপ গেমস খেলছে ম্যাডাম…”​

“এই ছেলে, তুই আমায় ম্যাডাম বলিস না প্লিস। নিজেকে বড্ড বুড়ি বুড়ি লাগে ম্যাডাম ডাকটা শুনলে”​

“ঠিক আছে দিদি, তবে এই যে দেখছেন এত জামাকাপড় পরে আছে, হারলেই সব খুলে ফেলতে হবে।” বলে ছেলেটা সেই দলে বসে পড়ল।​

Leave a Reply