আমি সুতনু। পিসির কাছে মানুষ। সব ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু পিসির অবসরের পর কথা হল যে পিসি গ্রামের বাড়ি চলে যাবে। আমি তখন সবে হায়ার সেকেন্ডারি পাশ করে কলেজে চেষ্টা করছি। সেই সময় কি করব ভাবছি। পিসির চলে যাবে। এমন সময় অন্য রাজ্যের এক কলেজ থেকে ডাক এল। জায়গাটা দূরে হলেও বাঙালি অধুষ্যিত। স্থির করলাম ওখানে বাড়িভাড়া নিয়ে থাকব।
ওখানে চলে গেলাম। কপাল ভালো এক বয়স্ক মহিলা রীতা মিত্র একাই থাকতেন। পঁচাত্তর বছর বয়স। ওনার বাড়ি ভাড়া নিলাম।
আমাকে বেশ ভালোবাসত আমি দিদা বলে ডাকতাম। কলেজ শুরু করলাম। পড়াশোনা বেশ চলছিল। তিন বছর প্রায় কাটতে যায়। সেই সময় একটি মেয়ের সাথে পরিচয় হল- রচনা সেন। দেখলাম বিরাট বড়লোকের মেয়ে। বিরাট ব্যবসা। মাল্টিন্যাশনাল। ওর বাবা বিদেশে থাকে। মা এখানকার ব্যবসা দেখে।
তৃতীয় বছরের শুরুর একটু পর থেকে দেখলাম রচনা ঘনিষ্ঠতা টা করল। আমি ও খুব খুশী। নিজেদের মধ্যেই একটা প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠলো। কলেজে বা মাঝে মাঝে তার পরেও গল্প । আমি একটা ভাললাগার মধ্যে চলে গেলাম।বিরাট বড়লোকের মেয়ে অবশ্য রচনা। সে যে আমাকে ভালবাস এটাই ব্যাপার। আমার সেরকম বন্ধু ছিল না যেহেতু আমি অন্য রাজ্যের থেকে গিয়েছিলাম।একদিন রচনা আমাকে ওদের বাড়ি নিয়ে গেল। গিয়ে তো আমার চক্ষু ছানাবড়া। রাজপ্রাসাদ। লোক থাকে অল্প। ও আর ওর মা আর ঠাকুমা। আর যা তা সব কাজের লোক। ড্রাইভার দারোয়ান।ওদের সাথে আলাপ হতে তো ঘাবড়ে যাওয়ার উপক্রম। কথা বলব কি ওই অবস্থা দেখে আমি চুপ। এই বাড়ি। এই ফ্যামিলি আমার সাথে বিয়ে দেবে? ভেবেই তো আমি চুপ।ওর মা সুনীতা সেন এলেন। দেখে তো আমি অবাক। দারুন শাড়ি পরে। ওর যা দাম তাতে বোধহয় আমাদের দু মাসের সংসার খরচ চলে যাবে।সুনীতা: তোমার নাম সুতনু।আমি: হ্যাঁ।আমার সম্পর্কে অনেক কিছু জিজ্ঞাসা করলেন। জানতে চাইলেন। তারপর নিজের কি দরকারি কাজ বলে একটা গাড়ি চড়ে বেরোলেন।বাড়িতে আটটা গাড়ি। কাজের মহিলারা যে সব জামাকাপড় পড়ে আছে সেগুলোর দাম কত কে জানে। যা হোক রচনার সাথে কথা বলে সেদিন বাড়ি চলে এলাম।
রচনার সাথে একটা প্রেমের সম্পর্ক তৈরী হতে লাগল। মনে মনে আমিও ভাবলাম যে হিল্লে হল একটা। ওই রকম ব্যবসায়ী বাড়ি এতয়েব দারুন।প্রেম আস্তে আস্তে আস্তে জমতে লাগল। কলেজে না গেলে হাঁপিয়ে যাই। মে হয় যেন সারাদিনই কলেজ হলে ভাল। সন্ধ্যা বেলা পড়াশোনা টা অবশ্য করতাম।এর মধ্যে একদিন আমার আরেক বান্ধবী মিতা রেডকর আমার কাছে এল।মিতা মারাঠী। ভালো মেয়ে।মিতা আমাকে কেন জানি রচনার ব্যাপারে বার বার বিভিন্ন কথা বলে। আসলে মিতা ওর মাসীর কাছে থাকে। ওর বাবা মার ডিভোর্স এর পর। ও আমাকে খানিকটা পছন্দ ও করে। কিন্তু আমি এতটা পাত্তা করি না। তাই আমি জানি যে এটা ওর ঈর্ষা। রচনার সাথে ওর রিলেশন ভাল না।যাইহোক এইভাবে চলতে চলতে একদিন।আমি: রচনা আমরা বিয়ে কবে করব?রচনা: করব। পরীক্ষার পর ই।কিন্তু একটা জিনিস মনে হয় বারবার যে এই ব্যাপারে রচনা যেন দায়সারা কথা বলে বারবার। কিন্তু আমি এটাও ভাবি যে পরীক্ষা বলে হয়তো রচনা অতটা বেশি বলে না।আরেকদিন।আমি: রচনা কি হবে।রচনা: আরে আগে পরীক্ষা দাও সব হবে।এর মধ্যে ওদের বাড়ি তে বসে দু একবার ওই চুমু খাওয়া ছাড়া আর কিছুই হয়নি। বুঝলাম রচনা খুব ভাল মেয়ে। বিয়ের আগে কিছু করতেই রাজি নয়।
যাই হোক পরীক্ষা এসে যাওয়াতে পড়াতেই মন দিলাম। এর মধ্যে একদিন মিতা আমার বাড়ি এল। কথা বলতে বলতে একসময়।মিতা: সুতনু।আমি: বলো।মিতা: তোমার কি মনে হয়। রচনার মা তোমার সাথে ওর বিয়ে দেবে?আমি: মিতা তুমি খুব রেগে যাও রচনার নাম শুনলে কেন?মিতা: সুতনু তুমি আমার বন্ধু। তাই সাবধান করি।আমার রাগ হল।আমি: মিতা আমি ত তোমার ব্যাপারে কোন কথা বলি না। তুমি কেন আমাদের। তুমি রচনাকে হিংসা করো।মিতা দেখলাম চুপ করে গেল।মিতা: সুতনু। তোমাকে বন্ধু বলে বললাম। আচ্ছা আসি।দেখলাম মিতার চোখে জল। খারাপ লাগল।আমি: সরি মিতা।মিতা: ইটস ওকে। ভাল থেকো। বাই।মিতা সেই যে গেল আর পরীক্ষা অবধি দেখা নেই। ফোন করলেও ধরে না। আমার খারাপ লাগল। মনে মনে ভাবলাম সত্যিই অতটা খারাপ কথা বলা উচিৎ হয়নি।যা হোক পরীক্ষার সময় এক দুদিন দেখা হলেও কথা বলত গেলে চলে গেছে মিতা। কথা বলে নি। পরীক্ষার শেষদিন পরীক্ষা র পর ওকে দেখে গেলাম।মিতা: সুতনু। টেক কেয়ার।বলে চলে গিয়েছিল মিতা।রচনা: ছাড়ো ওর কথা। জেলাস উইচ।ছেড়ে দিলাম।তারপর তিন চারদিন রচনা আমার সাথে বিভিন্ন জায়গায় দেখা করল। মাস দুয়েক আমরা একেবারে প্রেমে হাবুডুবু।একদিন রেস্টুরেন্ট এ বসে আমি কথা তুলতেই রচনা বলল।রচনা: ইয়েস সুতনু মা তোমাকে ডেকেছে।আমি: বিয়ে টা।রচনা: কাল এস। জানতে পারবে।
পরদিন আমি সন্ধ্যা ছটায় গেলাম ওদের বাড়ি। বসলাম রচনার সাথে। একটু পরে সুনীতা এল। বিভিন্ন কথা বার্তা চলতে লাগল। কিন্তু আস্তে আস্তে এমন সব কথা বলত লাগল সত্যিই আমি গোলমালে পড়লাম।সুনীতা: তোমার ইনকাম আদৌ কিছু আছে?আমি: না মানে আপাতত টিউশনিসুনীতা: শোন সুতনু আমার মেয়ের হাতখরচ প্রতিমাসে তিনলাখ টাকা। আলাদা খরচ ছেড়ে দিলাম।আমি চুপ করে বসে রইলাম। এটা সেটা শুনে আমি হাল ছেড়ে দিলাম।রচনা দেখলাম ওর মার সাথে কথা বলছে।রচনা: মম্ ও দারুন ছেলে ইত্যাদি।যা হোক আমি দেখলাম আর না এগোনোর ভাল। উঠে আসব ভাবছি।সুনীতা: কাল একবার এসো তুমি। রচনা কাল হয়তো আমি কিছু ভাল খবর দেব।বলে হাসল সুনীতা।সুনীতা বেরিয়ে গেল।রচনা: সুতনু আজ একটা বিদেশী কোম্পানির সাথে মিটিং আছে মমের। কাল মম্ ঠিক বিয়ের ব্যবস্থা করবে ডোন্ট ওয়ারি।পরদিন ঘুম থেকে ওঠার পর দিদার ফোনে ফোন এল।দিদা: সুতনু ফোন।ফোন ধরলাম ওপাশে রচনা।রচনা: আজ একবার এসো। সন্ধ্যা ছটায়।সন্ধ্যা বেলা গিয়ে পৌঁছালাম।আমরা বসে আছি। ওর মা এল।সুনীতা: সুতনু কেমন আছ।আমি: ভাল।সুনীতা: কালকের ব্যাপারে কিছু মনে কোর না। শোন খুব ভাল খবর।রচনা: শোন কালকের যে মিটিংটা ছিল সাকশেসফুল। ওই কোম্পানির সাথে আমাদের টাই আপ হবে। আমাদের ব্যবসা আরো বাড়বে। এই টাই আপ টা হলেই বিয়ে।আনন্দ হলো।সুনীতা: কিন্তু সুতনু এই ব্যাপারে তোমার একটু হেল্প চাই।আমি: বলুন।সুনীতা: শোন। এই বাড়িতে আমি, রচনা আর আমার শাশুড়ি মা থাকি।আমি: হ্যাঁ।সুনীতা: পরের শনিবার আমাদের বাড়িতে একটা পার্টি হবে। আমরা আর ওই কোম্পানির কিছু মহিলা। ওরা এখানে হোটেলে আছে। ওই দিন দুই কোম্পানির ব্যবসায়ী চুক্তি হবে। সেই জন্যই পার্টি। ওটা হয়ে গেলেই আর বিয়ে তে কোন প্রবলেম নেই। আরো বাড়বে ব্যবসা।আমি: আমাকে কিসুনীতা: শোন ওরা পার্টিতে মেল স্ট্রিপার চাইছে। এত তাড়াতাড়ি তো জোগাড় করা সম্ভব নয়। আমি চাইছি তুমি ব্যাপার টা করে দাও।আমি একটু অবাকই হলাম।আমি: কিন্তুসুনীতা: শোন সুতনু আমরা তিনজন ছাড়া এটা কেউ জানবে না। আর যারা থাকবে চুক্তির পর সবাই আমেরিকা ফিরে যাবে। অতয়েব বাড়ি র জামাইকে সেভাবে কেউ ট্রেস করতে পারবে না। আর দেখ এটা না হলে বিয়ে টা প্রবলেম হবে।রচনা: প্লিজ সুতনু আমার জন্য এটা করো।ওদের সব কথা শুনে বুঝলাম আমাদের বিয়ে দেবার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে সুনীতা। দেখলাম আমারও এগিয়ে আসা উচিৎ। রাজী হলাম। রচনা আনন্দে আমাকে চুমু খেয়ে নিল।সুনীতা: না রচনা আমি নিশ্চিত সুতনু তোর জন্য সব করতে পারে।
তারপর সেই সপ্তাহে আমাকে আরো বার দুয়েক দের বাড়ি যেতে হল। ওখানে একজন মহিলা আমাকে কিছু কিছু ট্রেনিং দিল যে একটা পার্টিতে পুরুষ স্ট্রিপারদের কি কি করতে হয়। সেই মহিলা খুব ভালো ট্রেনিং দিল। আমাকে বেশ কিছু বিদেশী পার্টি ফিল্ম দেখাল। মেল স্ট্রিপারদের কাজ। আমি বিয়ে হওয়ার কথায় সিরিয়াসলি বিষয়টাকে রপ্ত করলাম।পার্টির আগেরদিন রাতে ওদের বাড়িতে আমি বসে। রচনা, সুনীতা আর মনোরমা( রচনার ঠাকুমা) ও বসে। সবাই খুশী।মনোরমা: যাক কাল তাহলে কাজটা হচ্ছে।সুনীতা: হ্যাঁ। তবে সুতনুর ওপর অনেকটা নির্ভর।মনোরমা: ও পারবে। আমার রচনা দিদিভাইয়ের জন্য ও সব করবে।বলে উঠে এসে আমার গাল দুটো ধরে কপালে চুমু খেল একটা। আমি আনন্দে আত্মহারা। সত্যি এরা আমাদের বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।সুনীতা: সুতনুআমি: হ্যাঁ।সুনীতা: কাল তুমি কিন্তু চারটের মধ্যে ঢুকে পোড়ো এখানে। সাড়ে ছটা থেকে পার্টি। আর বলে এস কাল রাতে বাড়ি যাওয়া হবে না কিন্তু তোমার।আমি চলে এলাম । রচনা দরজা অবধি ছেড়ে দিল।রচনা: সুতনু কাল। আমাদের দি ডে।আমি: একটাই ব্যাপাররচনা: কেউ জানবে না। শুধু আমরা তিনজন। ভয় পেও না। ইউ দ্য স্মার্টেস্ট গাই ইন আর্থ নাও।রচনা একটা চুমু খেল আমার ঠোঁটে। বাড়ি র পথ ধরলাম।বাড়ি ঢুকতে যাবো একটা গাড়ি খুব আস্তে গেল পাশ দিয়ে। কেন জানি মনে হল মিতা গাড়িটিতে বসে। কি জানি মনের ভুল ও হতে পারে।রীতা মিত্র কে কিছু বললাম না। দেখা হল যদিও সামনে। কিন্তুরীতা: কি গো।আমি: হ্যাঁ দিদা ।রীতা: তুমি কি কাল কোথাও যাবে?আমি অবাক।আমি: হ্যাঁ। আসলে।রীতা: তা ঘুরে এস কদিন।