আউট অফ কলকাতা ‌৪থ ফষ্টি নষ্টি

অন্যদিকে তিস্তা উদ্বিগ্ন হচ্ছিলো তাদের সেই বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কথা চিন্তা করে | “এতদিন থাকতে শুধু আজকেই কেন হল এটা | এটা কোনও অশুনি সংকেত নয়তো ?” সে নিজেকে নিজেই প্রশ্ন করলো কিন্তু চোখের সামনে সেই রসালো দৃশ্য দেখে সে আস্তে আস্তে অন্যমনস্ক হয়ে যেতে লাগলো | রুদ্র নিজের কম্পিউটারের পেছনে বসে নিজের কাজ করতে ব্যাস্ত ছিল আর সেই সুযোগে দীপার নগ্ন দেহটাকে তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করতে লাগলো তিস্তা | দীপার দেহটাকে কাঁপতে কাঁপতে পাণ্ডে-জির উপরে দোল খেতে দেখে সেও খুব কামুক বোধ করতে লাগলো । নিজের অজান্তেই যোনির উপর হাত চলে গেল তিস্তার আর উত্তেজনায়…দীপার সেই ঘামে ভেজা ল্যাংটো শরীর দেখে স্কার্টের ওপর দিয়েই আঙ্গুল ঘষতে আরম্ভ করলো নিজের যোনির ওপর | ​

মাঝে মধ্যেই পাণ্ডে-জি নিজের বিচিতে চাপ অনুভব করে আনন্দে চিৎকার করে উঠতে লাগলেন। রুদ্র লক্ষ্য করছিলো যে তার সামনের ডায়ালটাও মাঝে মধ্যে বেড়ে যাচ্ছে আর সেটা বাড়লেই সে বুড়োর যৌনাঙ্গে একটা ক্ষুদ্র বৈদ্যুতিক শক প্রেরণ করতে লাগলো | পাণ্ডে-জিও কিছু একটা ফুটন্ত জিনিস বেরোনোর অনুভূতি পেয়ে প্রত্যাশার চেঁচিয়ে উঠলেন । দীপাও আসন্ন ব্যাপারটা বুঝতে পেরে উপর থেকে আরও তীব্র ভাবে ঝাঁকুনি দিয়ে চোদন দিতে শুরু করলো | আসন্ন বানের ঢেউ একেবারে চরম সীমায় পৌঁছে গেল কিন্তু হঠাৎ করেই সেই ঢেউয়ের জোয়ারটা ভেঙে জেতেই আস্তে আস্তে সব কিছু শান্ত হয়ে যেতে লাগলো আর সাথে সাথে রুদ্র তার সামনের ডায়ালগুলকে সেই আগের মতন শূন্যতে স্থির হয়ে যেতে দেখল |

পর্ব ২২​

এক ঘণ্টা ধরে পরিশ্রম করে যখন মনে হচ্ছিল যে শেষ অবধি উনি বীর্যপাত ঘটাতে সক্ষম হবেন ঠিক সেই মুহূর্তে এসে তার জোয়ার ভেঙে গেল আর ভাঙ্গার সাথে সাথে নিজেকে আর সামলাতে না পেরে দীপা পাণ্ডে-জির বুকের উপর ক্লান্তিতে নেতিয়ে পড়লো | সত্যি আর পারছিলো না দীপা, বড্ড ক্লান্ত হয়ে গেছিলো! পাণ্ডে-জিও প্রচণ্ড রকমের হাঁপাতে লাগলেন আর তাকে দেখে মনে হচ্ছিলো যেন এই বুঝে তার প্রাণটা বেরিয়ে গেল বলে। সেই অবস্থা দেখে রুদ্র ছুটে এসে দীপার উলঙ্গ শরীরটাকে আস্তে আস্তে পাণ্ডে-জির ওপর থেকে টেনে সরিয়ে নিলো| সেইলিংয়ের আলো পরে দীপার শরীরটা ঘামে ঝলমল করছিলো। রুদ্র একটা রুমাল নিয়ে আলতো করে দীপার মুখটা মুছিয়ে দিতে লাগলো। তিস্তাও পাণ্ডে-জির প্রতি নিজের কেয়ার দিতে লাগলো| সে হঠাৎ দৌড়ে গিয়ে তাদের ফ্রিজ থেকে রেড বুল এনার্জি ড্রিংকের দুটি ক্যান নিয়ে উপস্থিত হল তারপর একটা দীপার হাতে ধরিয়ে দিয়ে আরেকটা ধীরে ধীরে পাণ্ডে-জির মুখে ঢেলে দিতে লাগলো ।​

“আমি নিশ্চিত যে এই…এইরকম পজিশনে বসে কেউ কোনও দিন এনার্জি ড্রিংক খাইনি কখনো।” দীপা বলে উঠলো “তবে আমার মনে হয় যে এই পোজে যদি রেড বুল কোম্পানির লোকেরা আমাদেরকে দেখে তাহলে নিশ্চই আমাদের অ্যাডে চান্স দিয়ে দেবে” বলে দীপা এক চুমুক দিলো ওই ক্যানে​

“হুম সে আর বলতে, দীপা দি” বলে হালকা হাসল তিস্তা​

“এই রু….আমার ওই ফোনটা দে তো,” রুদ্রকে বলে উঠলো দীপা। ​

“কিন্তু ওতে তো সিম টিম কিছুই নেই……”

“আরে বাবা সিম টিম দিয়েও আমার কোন কাজ নেই, আমি এই সময়ের একটা ছবি তুলে রাখতে চাই । লাইক অ্যা মেমোরি…”

“গ্রেট, দীপা দি” বলে তিস্তা হেসে উঠলো আর পাণ্ডে – জির পেছন থেকে উঠে দীপার উলঙ্গ শরীরে পিছনে গিয়ে দাঁড়াল । তারপর একটা হাত দীপার মাইয়ের ওপর রেখে আরেকটা হাতে রেড বুলের ক্যানটা তুলে ধরে মুখ বেকিয়ে একটা পোষে দিলো সে । ফচাত করে আওয়াজ করে একটা নিজশি তুলে নিলো দীপা “​

“নাইস……তবে এই সবের মধ্যে সব থেকে ভালো বিষয়টা তোমরা জানো কি বা বুঝতে পেড়েছ কি?” দীপা বলে উঠলো ​

“কি? কি বিষয়…?” তিস্তা আর রুদ্র একসাথে বলে উঠলো​

“আমি পুরোপুরি ১০০% শিওর না হলেও আমার এটা একটা দৃঢ় বিশ্বাস যে পাণ্ডে-জি এই প্রথম তার বীর্যপাত ঘটানোর দোরগোড়ায় পৌঁছেছিলেন এই মাত্র…..কি পাণ্ডে-জি ঠিক বলেনি আমি….?” ​

“হা দীপা…তুমি…..তুমি একদম ঠিক বলেছ,” পাণ্ডে-জি হাঁপাতে হাঁপাতে বলে উঠলেন “আর শুধু একটা রাউন্ড….তারপরেই আমি শিওর যে আমি…বা..”​

“পাণ্ডে-জি..আপনি যদি রাজি থাকেন তাহলে….,” রুদ্র পাশ থেকে কিন্তু কিন্তু কণ্ঠে বলে উঠল ​

“তাহলে কি ভাই…? কিচ্ছুতে দ্বিধা বোধ করো না তুমি…..আই এম অল ইয়ার্স নাও…”​

“ঠিক আছে….হ্যাঁ যা বলছিলাম , যে আমরা আরও একটুখানি ঝুঁকি নিয়ে একটা জিনিস করে দেখতে পারি….” ​

“ঝুঁকি? রিস্ক? কি রিস্ক….? কি জিনিস….?”​

“না মানে আমার কম্পিউটারের ডায়ালগুল দেখে আমি বুঝতেই পারছিলাম যে আপনি প্রায় শেষে পৌঁছে গিয়েছিলেন তাই…তাই আমি ভাবছিলাম যে যদি আমি ডায়ালের ভোল্টেজটাকে প্রস্তাবিত মানে রেকমেন্ডেড লিমিটের থেকে একটু বেশি বাড়িয়ে দি তাহলে নিশ্চই আপনি আপনার কাজে পুরোপুরি সফল হতে পারবেন……দিস ইস জাস্ট মাই থিওরি পাণ্ডে-জি কিন্তু এটা আমরা একবার করেই দেখতে পারি, তাই না…?”​

রুদ্রর কাছ থেকে এই কথা শুনে তিস্তার মুখটা উদ্বেগে আরও ছোট হয়ে যেতে দেখে পাণ্ডে-জি তাকে কোনও কথা বলতে দেওয়ার আগেই নিজে বলে উঠলেন, “ডু হোয়াট ইউ নিড টু ডু বয়, কিন্তু যা করার তাড়াতাড়ি করো বাচ্চা, আমাদের বেশি দেরি করলে আর চলবে না”। ​

“না…বস, আপনি….” তিস্তা নিজের অমত প্রকাশ করতে যেতেই পাণ্ডে-জি নিজের হাত তুলে ওকে থামিয়ে দিলেন ​

“কিন্তু…..” বলে কিছুক্ষণ দিশেহারা হয়ে একবার দীপার দিকে একবার রুদ্র দিকে তারপর শেষে পাণ্ডে-জির দিকে তাকাল তিস্তা | যখন বুঝল যে সত্যিই সবাই সেটাই চায় তখন একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে আবার বলতে আরম্ভ করলো “ঠিক..ঠিক আছে তবে কেবল এক মিনিটের জন্যই কিন্তু, আই ডোন্ট ওয়ান্ট এনি এক্সিডেন্টস আর সেটা তোমার উদ্দেশ্যেও বলছি দীপা দি…সাবধানে…”​

“ব্যাস হয়ে গেল…সব ঠিক।” বলে দীপার পাছায় একটা চাপড় মারল রুদ্র, তারপর কানের কাছে নিজের মুখটা নিয়ে গিয়ে বলল “গেট রেডি টু গেট প্রেগন্যান্ট !”​

তবে এইসবের মধ্যে সব থেকে আশ্চর্যের বিষয় হল, পাণ্ডে-জির ধনটা এই সবের মধ্যেও একবারের জন্য নরম হয়নি | তিস্তা পাণ্ডে-জিকে আবার শুইয়ে দিয়ে বালিশটা আবার তার মাথার নিচে গুঁজে দিলো | দীপা আবার পাণ্ডে-জির ওপরে উঠে বসলো তারপর আবার নিজের হাতে ল্যাওড়াটাকে ধরে নিজের গুদের ভেতরে চালান করলো | প্রথমে ধীরে ধীরে তারপর আস্তে আস্তে নিজের গতি বাড়িয়ে চোদা খেতে লাগলো দীপা। ​

“আঃহ্হ্হঃ বাবাগো আহ্হ্হঃ উহ্হঃ আহ্হ্হঃ” বলে শীৎকার নিতে নিতে নিজের কলসির মতন পোঁদটাকে দুলিয়ে দুলিয়ে উপর থেকে থাপের পর থাপের খেতে লাগলো দীপা। তবে এবার দীপার কেন জানি না মনে হল যে এইবারের চোদনটা একদম আলাদা। পান্ডে-জির শরীরে এক নতুন উত্তেজনা অনুভব করতে পেরে তার শরীরের উম্যানলি সেনসেসগুলো তার মাথা খারাপ করে দিতে লাগলো, কিছু যেন একটা ঘটতে চলেছে সেই সংকেত বারবার দিতে লাগলো। রুদ্র নিজের কম্পিউটারের সামনে বসেছিল আর অপেক্ষা করছিলো ডায়ালগুলো চূড়ান্ত পজিশনে পৌঁছোবার জন্য | এই রকম অপেক্ষা করতে করতে রুদ্র হঠাৎ দেখল ডায়ালগুলো একদম চূড়ান্ত পজিশনে গিয়ে আটকে গেল আর সেটা হতেই ও সাথে সাথে রিমোটের সুইচটা চেপে ধরল তবে এইবার ভোল্টেজটা একটু বাড়িয়ে দিয়ে আর তারপরেই সেটা ঘটে গেল …..​

আসলে অনেক কিছুই ঘটে গেল নিমেষের মধ্যে, কেউ যদি সেটা স্লো মোশনে দেখত তাহলে সেটা কিছুটা এইরকম হতো:​

প্রথমত পাণ্ডে-জি আনন্দে চিৎকার করে উঠলেন যখন তিনি অনুভব করলেন তার আগ্নেয়গিরি থেকে অবশেষে লাভা বেরিয়ে আসতে | দীপা আরও জোরে চিৎকার করে উঠলো যখন সে অনুভব করলো যে তার মধ্যে কোনও একটা গরম কিছু ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাচ্ছে | থকথকে বীর্য সেই শক্তিশালী স্প্রের ফলে অভ্যন্তরে ছড়িয়ে পড়তে লাগলো আর বীর্যপাতের বন্যাকে প্রবাহিত করে সরাসরি তার গর্ভতে ঢুকিয়ে দিতে লাগলো। তবে রুদ্র সেই শক দেওয়ার জন্য শুধু সেটাই হল না! শকটা অনুভব করতেই হঠাৎ করেই পাণ্ডে-জি একটা শক্ত ঝাঁকুনি অনুভব করলেন যা তার পাছা থেকে গিয়ে তার মেরুদণ্ডে আঘাত করলো| তিনি সেই ধাক্কা সামলাতে না পেরে হঠাৎ করে উঠে বসতে যেতেই তার কোলের উপর থাকা দীপা ছিটকে পেছনে দিকে পরে গেল | আর সেটা লক্ষ্য করেই রুদ্র আর তিস্তা চেঁচিয়ে উঠলো সামনে এগিয়ে যেতে লাগলো দীপাকে সাহায্য করার জন্য…​

খুব ভাগ্যের জোরে দীপা প্রাণে বেঁচে গেল কারণ ছিটকে পড়লেও ও সেই মেঝেতে বিছানো গদিতে ওপরে গিয়ে পড়েছিল। ​

আর ঠিক সেই মুহূর্তেই, দরজায় একটা ভীষণ জোরে আওয়াজ হল…আওয়াজটা এতই জোরে হল যে তাদের মনে হল যেন তাদের সামনে বাজ পড়লো আর সাথে সাথে তিন তিনটে সশস্ত্র গুণ্ডা ঘরে ঢুকে পড়লো। সব কিছু এত তাড়াতাড়ি হয়ে গেল যে ওরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই গুন্দাগুল নিজেদের কাজ শুরু করে দিলো | প্রচণ্ড আওয়াজ করে মেশিন গানগুলো গর্জে উঠল আর সেই কানফাটানো আওয়াজে সারা অফিস ঘর কেঁপে উঠলো | বিশ্বস্ত ও সদা সতর্ক দেহরক্ষী তিস্তা সঙ্গে সঙ্গে তড়িতের গতিতে ঝাঁপিয়ে পড়লো একদিকে, রুদ্র তার কম্পিউটারের সামনে ঝুঁকে পরে নিজের মাথার ওপর হাত দিয়ে চাপা দিয়ে দেখতে লাগল তিস্তার সেই ভীষণ রূপ| স্কার্ট সরিয়ে নিজের উরুর বেল্ট থেকে দুহাতে দুটো বন্দুক বের করে নিয়ে চালাতে লাগলো তিস্তা | প্রতিটা গুলি মারাত্মক নির্ভুলতার সাথে চালাতে চালাতে দুটো গুণ্ডার মাথার খুলি উড়িয়ে দিলো তারপর একপাশে লাফিয়ে সোফার পেছনে বসে রিলোড করলো নিজের বন্দুকগুলোকে | নিজের মনে মনে ১..২..৩ গুনে আবার উঠে একের পর এক গুলি চালিয়ে যেতে লাগলো তিস্তা সেই শেষ শত্রুর দিকে, কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে, তৃতীয় গুণ্ডাটার কাছে ছিল একটা ফুল অটোমেটিক রাইফেল | তিস্তার দিকে একবার শয়তানি হাঁসি দিয়ে রাইফেলের ট্রিগারটা টিপে ধরে গুণ্ডাটা অন্ধের মতন গুলো চালাতে আরম্ভ করল | ​

সারা রুমে সেই কান ফাটানো গুলের আওয়াজ প্রতিধ্বনিত হতে লাগলো আর টেবিল চেয়ার সোফা কম্পিউটার সব কিছু গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে যেতে লাগলো | মেঝেতে সেই গদির উপর দীপা সুরক্ষিত থাকলেও পাণ্ডে-জির ভাগ্য সেদিন আর তার সঙ্গ দিলো না| পাণ্ডে-জি সোজা হয়ে বসে সামনের সেই দৃশ্য ভয়ার্ত চোখে দেখছিলেন আর দুর্ভাগ্যক্রমেই সেই বন্দুক থেকে একের পর এক গুলি তার বুকে এসে লাগলো | গুলিগুলো লাগার সাথে সাথে পুরো এফোঁড়ওফোঁড় করে দিতে লাগলো পাণ্ডে-জির দেহটাকে । “বসসসস” বলে তিস্তা পাণ্ডে-জির সামনে ঝাঁপিয়ে পরে সেই শেষ গুণ্ডাটার গলায় গুলি করল, কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয় গেছিল… শেষ নিশাস ত্যাগ করবার আগে গুণ্ডাটা নিজের সমস্ত জোর দিয়ে শেষবারের জন্য ট্রিগারটা চেপে ধরল আর সাথে সাথে ম্যাগাজিনের শেষ দুটো গুলো ছিটকে এল তিস্তার দিকে | একটা গুলি পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে গেলেও আরেকটা সরাসরি গিয়ে লাগলো তিস্তা কাঁধে ! গুলীটার এতই জোর ছিল যে লাগার সাথে সাথে তিস্তা ছিটকে দূরে গিয়ে পড়লো আর তারপর সব কিছু একদম নিস্তব্ধ হয়ে গেল | ​

হঠাৎ নিজের চোখের সামনে এত ধ্বংসাত্মক ঘটনা দেখে ভয়ে কম্পিউটারের টেবিলের তলায় বসে বসে কাঁপছিল রুদ্র, ভয়ে তার গলা একদম কাঠ হয়ে শুখিয়ে গেছিলো | হঠাৎ একটা গোঙানির আওয়াজ কানে আসতেই রুদ্র আস্তে আস্তে নিজের মাথাটা তুলল তারপর উঠে দাঁড়ালো, সামনে কাঁচ ভেঙে পড়েছিল তাই খুব সাবধানে উঠে সেই আওয়াজ লক্ষ করে এগিয়ে যেতে লাগলো | একটু সামনে যেতেই বুঝতে পারলো যে সেটা তিস্তার গলার আওয়াজ আর সাথে সাথে ও তিস্তার দিকে দৌড়ে গেল | তিস্তা ঝাঁকুনি দিয়ে দেওয়ালের দিকে ইশারা করে কিছু দেখতে চাইছিল ওকে।​

“রু..রুদ্র ওই লাল-সুইচ ” সে বলে উঠলো…রুদ্র দেরি না করে সেই সুইচটা টিপে ধরল আর সেটা টিপতেই ধড়াম ধড়াম করে আওয়াজ হতে লাগলো আর কিছুক্ষনের মধ্যেই বিল্ডিঙের প্রতিটা দরজা আর জানালা বন্ধ হয়ে গেল….সব জানালা বন্ধ হয়ে যেতেই তাদের ঘরটাকে অন্ধকারে গ্রাস করে নিলো কিন্তু আবার সাথে সাথেই একটা লাল রঙের আলো জ্বলে উঠলো সেইলিংয়ের কোনে | বিল্ডিং এর সব দরজা জানালা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে বিল্ডিঙের সবাইকার মানে মিত্র আর শত্রু উভয়ের সমস্ত চলন বন্ধ হয়ে গেল | সেই লাল আলোর আভা এসে তিস্তার উপর পড়তেই রুদ্র দেখল যে তিস্তা রক্তে ভেসে যাচ্ছিলো…তার পরনের পোশাকটা রক্তে ভিজে লাল রঙে পরিণত হয়ে ছিল | রুদ্র আস্তে করে তিস্তার আরও একটু সামনে যেতেই তিস্তার কাঁধে সেই বড় ক্ষতটা দেখতে পেলো | সেই ক্ষত থেকে বিচ্ছিন্ন একটা ধমনী দিয়ে রক্ত ঝরে পড়ছিল । ​

“তিস্তা…!” ওর ক্ষতর উপর হাত দিয়ে চেপে ধরল রুদ্র​

“ব..বস..দীপ…দি…রু..” বলে নড়ে উঠলো তিস্তা | তিস্তার কথা শুনে রুদ্র তাড়াতাড়ি বাকি দুজনের দিকে দৌড়ে গেল |​

পাণ্ডে-জি আর দীপার কাছে যেতেই লক্ষ করলো যে তারা তখনও মেঝেতে জড়িয়ে পড়ে ছিল। এক নজরে দেখে বোঝাই যাচ্ছিলো যে পাণ্ডে-জি মারা গেছেন কিন্তু দীপাকে তার নিচে পড়ে থাকতে দেখে রুদ্রর মনে কু ডাকল | “দীপা!!!…না না না…দীপা…!!!” বলে চেঁচিয়ে উঠলো রুদ্র “দীপা…..না তুমি….!!!” ​

তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই পাণ্ডে-জির নিচ থেকে আওয়াজ আসতেই ও হাঁপ ছেড়ে বাঁচল । ​

“রু…রুদ্র…আমাকে….” দীপার কথা শেষ হওয়ার আগেই রুদ্র পাণ্ডে-জির দেহটাকে দীপার ওপর থেকে সরিয়ে দূরে সরিয়ে দিতে লাগলো | পাণ্ডে-জির কাঁধ ধরে টান দিতেই সে দেখল যে পাণ্ডে-জির লিঙ্গটা তখনও দীপের যোনির ভিতরে আটকে ছিল | রুদ্র পাণ্ডে-জির দেহটাকে আরও জোরে চেপে ধরে নাড়াতেই ওনার লিঙ্গটা দীপার যোনির ভেতর থেকে বেরিয়ে এলো আর শেষ কয়েক ফোঁটা মূল্যবান বীর্য তার লিঙ্গ থেকে বেরিয়ে দীপার যোনির ঠোঁটের উপর পড়ল।​

এক পাশে পাণ্ডে-জির দেহটাকে সরিয়ে দিয়ে দীপার সামনে দিয়ে দাঁড়ালো রুদ্র| দীপার সারা শরীরে লালে লাল হয়েছিল পাণ্ডে-জির রক্ত লেগে| ​

“তুমি…তুমি ঠিক আছো….?” দীপার মুখের ওপর থেকে রক্ত মুছতে মুছতে বলে উঠলো রুদ্র | পাণ্ডে-জির নিচে অতক্ষণ আটকে থাকার জন্য দীপা তখনও হাঁপাচ্ছিল…কোনও মতে নিজের মাথা নাড়িয়ে রুদ্রকে আস্বস্ত করলো দীপা | ​

কিছুক্ষণ ঐরকম বসে থাকার পর দুজনে পাণ্ডে-জির দেহের দিকে তাকিয়ে তাকাল | তার বুকে পেটে এত গুলোই গুলি লেগেছিল যে গুলির প্রেসারে তার কোমরের দিকে দিয়ে সব হাড়গুলো বেরিয়ে গেছিলো তবে হঠাৎ করে আরও একটা গোঙানির আওয়াজে ওদের সম্বিত ফিরল | ​

“তিস্তা…!!!” বলে দু’জনে মেঝে থেকে তাড়াতাড়ি উঠে তিস্তার দিকে ছুটে গেল তবে সেখানে যেতেই আরেক নির্মম দৃশ্য দেখতে পেল ওরা।​

“তিস্তা!!!” বলে রুদ্র তিস্তা পাসে মেঝেতে বসে পড়ল ” তুমি…তুমি ঠিক আছো তো? তিস্তা???” বলে তিস্তার কপালে হাত বুলতে লাগল রুদ্র ​

“পাণ্ডে-জি…? বস….?” রুদ্রর দিকে তাকিয়ে বলে উঠল তিস্তা। তিস্তার প্রশ্নের কোন উত্তর না দিয়ে রুদ্র নিজের মাথা নিচু করে নিতেই তিস্তা সব কিছু বুঝতে পেরে জোরে চেঁচিয়ে উঠল “আমিমিমি….পারলাম…না!!!!! আমি তাকে বাঁচাতে পারলাম…না…না…না…না!!!!!!” তিস্তার চোখের কোন বেয়ে অশ্রু ধারা বেরিয়ে এলো “দীপা দি…তুমি…বই..বইয়ের কেস, দীপা……” ​

“বইয়ের কেস? তিস্তা কি….কি বলতে…” দীপার সাথে সাথে কিছুদিন আগের ঘটনার কথা মনে পরে গেল | তিস্তা তাকে দেখিয়েছিল যে ওই বইয়ের কেসের মধ্যে একটা বই একপাশে ঠেলে দিলেই সামনের দেওয়ালটা সরে গিয়ে একটা এলিভেটর বেরিয়ে যায় | সে এটাও বলেছিল যে সেই এলিভেটরটা শেষ অব্দই কলকাতা মেট্রো-রেলের পরিত্যক্ত টানেলগুল পর্যন্ত নিয়ে যায় আর সেখানে যে অসম্পূর্ণ মেট্রো লাইনের সুড়ঙ্গ আছে সেটা অনুসরণ করে এগিয়ে গেলেই যে কেউ হুগলী নদীর ওই পারে পৌঁছে যাবে, পাণ্ডে-জির পুরনো সেফ হাউসে। ​

“দীপা…দি…যাওয়ার আ…আগে…ওই নীচের তাকের কালো ব্যাক……প্যাকটা..” তিস্তা কাতরাতে কাতরাতে বলে উঠলো “তোমরা…যা…যাও..বা..চ্চাটাকে… বাঁচাত…বাঁচা…” তবে কথা শেষ করতে পারলো না তিস্তা ​

“তিস্তা!! আই তিস্তা!! তিস্তা…চোখ খোলো” তিস্তাকে ধরে ঝাঁকুনি দিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলে উঠলো রুদ্র “মাসি, তিস্তা…তিস্তা আর…..” 

পর্ব ২৩ ​

তিস্তার পাসে মেঝের উপর বসে দীপা ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগল, তারপর ওর কাঁধের ক্ষতর দিকে তাকাল। ক্ষতর জায়গাটার ওপর থেকে তিস্তার ড্রেসটা ছিঁড়ে সরিয়ে দিয়ে কিছুক্ষণ একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকলো দীপা তারপর :

“না রুদ্র না, আই থিংক উই ক্যান শেভ হার….ওর এখনো চান্স আছে…আই উইল নট…” বলে তিস্তার ঠোঁটে একটা হালকা চুমু খেলো দীপা “তুমি মরবে ন তিস্তা, অন্তত আমি বেঁচে থাকতে তো না”

“কিন্তু তিস্তা…?”

“কিচ্ছু হবে না ওর..তুই ভয় পাসনা..তুই ভয় পেলে আমাদের কি হবে রু..?”

দীপার সেই কথা শুনে হঠাৎ ওর মনে আবার সাহসে ভরি উঠলো, তাদের সেখান থেকে পালাতেই হবে সেই একমাত্র লক্ষ্য তাদের, এই কথা ভেবে রুদ্র উঠে দাঁড়িয়ে নিজের চোখ মুছে দীপার দিকে তাকাল ” আমাদের এখন থেকে এক্ষুনি পালাতে হবে, কিন্তু তিস্তার এই অবস্থায় কি করে কি করবো আমরা….ওকে কি ভাবে….”

“যেমন করে সব সময় হয়ে আসছে সেই ভাবে, রু ” বলে তিস্তাকে দাঁড় করিয়ে রুদ্রর হাতে ওকে সোপে দিলো, তারপর তিস্তার স্কার্ট থেকে একটা বড়ো কাপড়ের টুকরো ছিঁড়ে সেটাকে কাঁধের জখমের উপর শক্ত করে চেপে বগলের নিচ দিয়ে বেঁধে দিলো |

“এতে আপাতত কাজ চলে যাবে, কিন্তু যত তাড়াতাড়ি….” হঠাৎ দরজা ধাক্কানোর আওয়াজ ওদের কানে ভেসে আসতেই ওরা ভয়ে কাঠ হয়ে গেল.. ওইপাশ থেকে কেউ বা কারা সেই লোহার দরজা ধাক্কাচ্ছিলো তবে আওয়াজ শুনে মনে হচ্ছিলো যে ওরা দরজা ভাঙারই চেষ্টা করছিল| নষ্ট করার মতন কোনও সময় ছিল না তাদের কাছে, রুদ্র তিস্তাকে আবার দীপার কাছে দিয়ে দৌড়ে পাণ্ডে-জির অফিসের সেই বইয়ের কেসের দিকে ছুটে গেল | দীপা তিস্তাকে নিজের শরীরে ভর দিয়ে নিয়ে আস্তে আস্তে এগোতে লাগলো | রুদ্র বইয়ের কেসের সমানে গিয়ে দাঁড়িয়ে চেঁচিয়ে উঠলো :

“কোন বইটা….এখানে তো অনেক বই রয়েছে….”

“সব থেকে পুরনো বইটা খোঁজ…..যেটার ওপর আগের দিন তুই সব থেকে বেশি ধুলো জমে থাকতে দেখেছিলি সেইটা….তাড়াতাড়ি রুদ্র….তাড়াতাড়ি…ওই ডোন্ট হ্যাভ মাচ টাইম” দীপা বলে উঠলো

রুদ্র আর সময় নষ্ট না করে সেই ধুলোয় ঢাকা বইটা ঠেলতেই তাদের পালানোর গোপন পথটা বেরিয়ে এলো।

“দাঁড়াও, ব্যাক-প্যাকটা….ব্যাক-প্যাকটা কোথায়?” তিস্তার শেষ কথা মনে পরে গেল রুদ্রর।

“ঐ…ওইখানে, নীচের ড্রয়ারে।” দীপা বলে উঠলো | রুদ্র দৌড়ে আবার সেই টেবিলের সামনে গেল তারপর ড্রয়ার খুলে সেই ব্যাগপ্যাকটাকে টেনে বের করল | নিচে নামিয়ে চেন খুলতেই ভেতরের সব কিছু দেখতে পেলো ওরা যার মধ্যে ছিল দুটো ছোট হ্যান্ড-গান, কয়েক রাউন্ড ম্যাগাজিন, একগুচ্ছ চাবি, একটা টর্চ, সেলফোন | সেগুলো একপাশে সরাতেই বেরিয়ে পড়লো একটা ছোট ধাতব কাস্কেট, একটা নোটবুক, নগদ কিছু টাকার বান্ডিল আর পাণ্ডে-জির আর তিস্তার আইডি কার্ড । এটা ওদের কাছে স্পষ্ট ছিল যে তারা দু’জন ইমার্জেন্সি সিচুয়েশানের জন্য সব পরিকল্পনা আগে থেকেই করে রেখেছিলো। রুদ্র ব্যাগের জিনিসগুলো ঘাঁটতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো এমন সময় দীপা ওর হাতটা খপ করে ধরে ওকে ইশারায় চুপ করতে বলল |

চুপ করতেই ওদের কানে ভেসে এলো করা যেন দৌড় দৌড়ী করছে দরজার ঐপারে আর সাথে সাথে আবার দরজা ধাক্কাবার আওয়াজ ভেসে এলো | আর সময় নষ্ট না করে রুদ্র দীপা আর তিস্তা ওই গোপন প্যাসেজে ঢুকল, তবে হঠাৎ দীপা চেঁচিয়ে উঠলো ;

“আই…আই আমার ফোনটা ওখানে…..ওতে”

“ওই ফোনের আর কোনও অস্তিত্ব নেই…..চলো এখন থেকে….” বলে দীপা আর তিস্তাকে ভেতরে ঢুকিয়ে নিয়ে পিছনের বুক-কেসটা টেনে বন্ধ করে দিলো রুদ্র।

পেছনের দরজাটা বন্ধ হতেই তাদের কে ঘিরে ধরল দুর্ভেদ্য অন্ধকারে, রুদ্র ব্যাগ হাতড়ে টর্চটা বের করে জ্বলতেই কিছুটা দূরে সেই লিফটাকে দেখতে পেল, যে লিফটের কথা তিস্তা বলেছিল দীপাকে | আলো ফেলে আস্তে আস্তে সামনে এগিয়ে গেল ওরা | লিফটের সিলিংয়ের টিম টিম করে একটা ছোট বাল্ব জ্বলছিল আর তারই ক্ষীণ আলোতে ওরা বাইরে থেকেই ভেতরে থাকা দু’টো সুইচ দেখতে পেলো | একটাতে লেখা ছিল টি আর আরেকটায় বি আর সম্ভবত সেই দুটোর মানে টপ আর বটম। আর অপেক্ষা না করে দীপা তিস্তাকে নিয়ে লিফটে উঠতে যেতেই রুদ্র বাধা দিলো |

“না…না দাড়াও, আগে আমি উঠি” বলে টর্চের আলো সামনের দিকে ফেলে লিফটে উঠলো রুদ্র “এইবার তোমরা এস ” বলে লিফটের মধ্যে থেকে ওদের দিকে নিজের হাত বাড়াল | দীপা এক হাতে তিস্তাকে জাপটে ধরল আর আরেক হাত দিয়ে রুদ্রর হাত ধরে লিফটে উঠল | আর সময় ব্যায় না করে রুদ্র বি লেখা সুইচটা টিপে ধরল।

‘ঘটাং’ করে একটা যান্ত্রিক আওয়াজ করে লিফটটা নড়ে উঠলো আর তার সাথে সাথে সিলিঙে থাকা বাল্বটা ফ্ল্যাশ করে উঠে কেটে গেল । দেখতে না পেলেও ওরা বুঝতে পারল যে ওরা আস্তে আস্তে নীচের দিকে সেই অন্ধকারের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছিল | সেই অন্ধকার গহ্বরে রুদ্র হাত বাড়িয়ে দীপা আর তিস্তাকে টেনে নিজের বুকে চেপে ধরল | কত কিছুই না ঘটে গেল এইটুকু সময়ে মধ্যে, রুদ্র ভাবল তবে পরক্ষনেই দীপার শরীরে হাত দিতেই আনুভব করল যে দীপা সেই আগের মতন সম্পূর্ণ উলঙ্গ!

পর্ব ২৪ ​

টি সেন্টারে সেই এস্কেপ লিফ্ট এসে থামল অন্ধকার গহ্বরের মধ্যে। অন্ধকারটা এতটাই ঘন ছিল যে সব কিছুই যেন ফাঁকা বলে মনে হতে লাগলো ওদের | কে বা কারা তাদের জন্য সেখানে অপেক্ষা করছে সেটা না জানতে পেরে টর্চটা ভয়ে জ্বালতে পারল না রুদ্র |​

“রু…..এইবার জ্বাল টর্চটা…”দীপা ফিসফিস করে বলে উঠল​

“নাহ…..দাড়াও..আরও কিছুক্ষণ, অন্তত ৭৫% শিওর হতে দাও..দাড়াও” দীপাকে বলে উঠলো রুদ্র​

অনেক্ষন অপেক্ষা করার পর শেষে রুদ্র খুব চকিতে টর্চটা এক মুহূর্তের জন্য জেলে আবার বন্ধ করে দিলো | তারপর আরও কিছুক্ষণ পর অবশেষে টর্চটা ওপরে মেলে ধরে জ্বলতেই তারা দেখতে পেলো যে তারা একটা টানেলের মধ্যে রয়েছে। টর্চটা নিচের দিকে নামিয়ে এনে আলোটা মাটিতে ফেলতেই কিছুটা দূরে রেল লাইন দেখতে পেল ওরা , তবে সেটা পুরোটাই পরিত্যক্ত | তিনজনে সেই টানেল অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে এগিয়ে যেতে লাগলো তবে টর্চ বন্ধ করে | মাঝে মধ্যে সামনের পথটা দেখার জন্য এক মুহূর্তের জন্য টর্চটা ফ্ল্যাশ করে আবার এগিয়ে যেতে লাগলো ওরা | খালি পায়ে হাঁটার তাদের অভ্যাস ছিল কিন্তু এই অন্ধকারের মধ্যে কোথায় কিসের ওপর পা পড়ছিল তাদের অজানা ছিল | এইরকম হাটতে হাটতে অবশেষে তারা এসে একটা চৌমাথাতে পৌঁছল। রুদ্র টর্চের আলো জ্বালিয়ে প্রতিটা রাস্তার দিকে একবার একবার করে আলো ফেলতে লাগল |​

“কোন দিকে?” ফিসফিস করে বলল দীপা।​

“জানি না! জানলে এখানে এরকম দাঁড়িয়ে থাকতাম” বলে টর্চের আলোটা আবার জ্বালিয়ে রাস্তা গুলোর দিকে মেলে ধরল রুদ্র​

“ওই….ওইটা কি…..” বলে দীপা আঙ্গুল তুলে একদিকে ইশারা করল​

“জানি না….তবে দেখে দরজার মতন মনে হচ্ছে…”​

“চল…ওই দরজার কাছটায় চল, দেখি একবার,” ​

দূর থেকে দরজা মনে হলেও সামনে গিয়ে দরজার অস্তিত্ব দেখতে পেলো না ওরা | আরেকটু সামনে যেতেই একটা ছোট্ট ঘর দেখতে পেলো ওরা, নোংরা এবং সম্পূর্ণ খালি এককালে এর ঢোকার মুখে দরজা থাকলেও এখন শুধু দরজার ফ্রামটাই অবশিষ্ট | ভেতরে ঢুকে একটা কোনে গিয়ে টর্চটা জ্বালিয়ে দিলো রুদ্র | সারাদিনের সেই ভয়ানক মুহূর্তের পর এই ভাঙাচোরা ঘরটা তাদের অনেকটাই নিরাপদ মনে হল |​

“এইটা হয়তো একসময় মেনটেনেন্স রুম ছিল….দেখ ওই ইলেকট্রিক প্যানেলটা…” বলে দেওয়ালের ওপর ভাঙা মরচে ধরা একটা প্যানেলের দিকে ইশারা করল দীপা ​

“তিস্তা…ঠিক আছে তো?” রুদ্র হঠাৎ প্রশ্ন করল​

দীপা মাথা ঘুরিয়ে তিস্তার ক্ষতর জায়গাটা ভালো করে আবার চেক করে নিয়ে ওর পাল্‌স মেপে দেখল “হ্যাঁ….আপাতত রক্ত বেরোনো বন্ধ করতে পারলেও ওর ভেতরে আটকে থাকা গুলিটা বের করতে হবে আমাদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব…”​

“ঠিক আছে” বলে রুদ্র টর্চটা ঘুরিয়ে ঘরের এইদিক ঐদিক কাজে লাগানর মতন কিছু খুঁজতে লাগলো | টর্চের আলো হঠাৎ দীপার উপর পড়তেই তার অবস্থা দেখতে পেলো রুদ্র, তবে ভালো লাগার থেকে সম্ভবত খারাপই লাগলো ওর। দীপা উলঙ্গ তো ছিলই তাছাড়া তার শরীর জুড়ে লেগেছিল লাল রক্ত। কিছু কিছু জায়গায় রক্ত শুকিয়ে গিয়ে বাদামি রঙের মতন হয়ে গেছিলো আবার কিছু জায়গায় তখনও টকটকে লাল ছিল | আলোটা আরেকটু নিচে নামাতেই রুদ্র দেখল যে পাণ্ডে-জির ছাড়া কিছুটা বীর্য দীপার যোনির মুখ দিয়ে বেরিয়ে তার উরু বেয়ে গড়িয়ে পড়ছিল। দীপার ওই অবস্থা দেখে রুদ্রর খুবই কষ্ট হল আর সাথে সাথে নিজের পরনের কুর্তা শার্টটা খুলে ওর হাতে ধরিয়ে দিলো তবে প্যান্টটা খুলতে যেতেই দীপা ওকে বাধা দিলো।​

“না…না,” দীপা তাকে থামিয়ে বলে উঠলো। “তোর প্যান্ট আমার হবে না রু, ওটা অনেক লম্বা আর আমার পাছা দিয়ে ওটা ঢুকবে না, তবে তোর এই কুর্তা যথেষ্ট কাজ করে দেবে আমার জন্য, তুই একটু তিস্তাকে ধর সোনা…” বলে তিস্তাকে রুদ্রর কাছে দিয়ে হাতের কুর্তাটা নিজের মাথা দিয়ে গলিয়ে পরে নিলো দীপা | কুর্তাটা পড়লেও সেটা দিয়ে বেশি কিছু একটা কাজ হল না দীপার, কারণ তার পুরো পাছাটা তখনও বেরিয়ে রইলো। ​

“যাহ! পেছনটা বেরিয়ে রইলো যে….”​

“অরে কিছু হবে না… এখানে তোমাকে দেখার মতো কেউ আছে বলও? তবে……এবার কি করবো আমরা ? মানে রাস্তা…”​

“আমাকে একটু চিন্তা করতে দে দাঁড়া…” বলে গভীর ভাবে চিনতে করতে লাগলো দীপা ​

কিছুক্ষণ সেইরকম কেটে যাওয়ার পর হঠাৎ দীপা ঘুরে রুদ্রর দিকে তাকিয়ে বলল​

“কোনও ধরণের ম্যাপ ছাড়া এই টানেল-গুলর মধ্য দিয়ে পথ খুঁজে পাওয়া ইস ইম্পসিবল…..আমাদের কাছে ইট ইস অসম্ভব সো”​

“এই… কি বললে? ম্যাপ?? দাড়াও দাড়াও….আমার মন বলছে যে এই ব্যাগে আমি একটু আগেই একটা ম্যাপ দেখেছি আর তাছাড়া পাণ্ডে-জিরা যদি এত পরিকল্পনা করেই থাকেন তবে তিস্তা ম্যাপের ব্যাপারটা মিস করবে না…এই টর্চটা ধরো একটু ” বলে রুদ্র আস্তে আস্তে ব্যাগের চেন খুলে এইদিক ঐদিক খুঁজতে লাগলো আর সত্যি একটা ম্যাপ বেরিয়ে পড়লো কিছুক্ষণের মধ্যে !​

“তিস্তা ইস ব্রিলিয়ান্ট না…?”​

“একদম…তবে এবার ম্যাপটা দেখা একবার…..” দীপা বলে উঠলো​

“এইতো….এই দ্যাখো” বলে দীপার সামনে ম্যাপটা মেলে ধরল রুদ্র “আমরা এই…এইখান দিয়ে এসেছি এতক্ষণ আর এই হল ওই সামনের জংশনটা মানে চৌরাস্তা আররররর……এইতো….এই বাঁ দিকের রাস্তাটা ধরে এগোলেই”​

“চল..রাস্তা যখন পেয়ে গেছি তখন আর দেরি করা ঠিক হবে না” বলে তিনজনে আবার সেই ঘর থেকে বেরিয়ে সেই চৌরাস্তাতে এলো তারপর সেখান থেকে বাঁদিকের রাস্তা ধরে আস্তে আস্তে এগিয়ে যেতে লাগলো|​

“টর্চটা বন্ধ করে দে….এখানে আর লাইন নেই…হাটতে তেমন অসুবিধে হবে না আর….” দীপা ফিসফিস করে বলে উঠল​

ম্যাপটা অনুসরণ করতে করতে সেই পরিত্যক্ত অন্ধকার টানেলের মধ্যে দিয়ে ওরা খালি পায়ে হেটে চলল | অজ্ঞান অবস্থাতে থাকার জন্য তিস্তা নিজের শরীরে সব ভার দীপার ওপর ছেড়ে দিয়েছিলো | প্রায় ঘণ্টা দুই ওই ভাবে হাঁটার পর, তাদের নাকে একটা ভেজা স্যাঁতস্যাঁতে গন্ধ ভেসে আসতে লাগলো কিন্তু সেটা কিসের গন্ধ সেটা ওরা বুঝতে পারলো না | তবে আশ্চর্য ভাবে কিছুদূর চলার পর সেই গন্ধটা আস্তে আস্তে কমে যেতে লাগলো | রুদ্র টর্চটা জ্বালিয়ে চারিদিকে দিকে আলো ফেলতেই দেখতে পেলো যে ওপরের দেওয়াল গড়িয়ে জল পড়ছে | ​

“এটার মানে বুঝতে পারলে…?” ভেজা দেওয়ালের দিকে ইশারা করে রুদ্র প্রশ্ন করে উঠলো​

“আমরা এতক্ষণে নদীটা পেরলাম..তাই তো ?”​

“হ্যাঁ….আর আসা করি বেশি দূর যেতে হবে না আমাদের, চলো..”​

তবে আরও কিছুটা এগিয়ে যাওয়ার পরে ওদের যাওয়ার রাস্তা শেষ হয়ে গেল | দেখে ডেড-এন্ড মনে হলেও ওরা জানতো সেটার নিশ্চয়ই অন্য কোনও মানে আছে…হয়ত গুপ্তপথ আবার…​

“কোন দিকে এবার রুদ্র…?”​

“দাঁড়াও.” বলে ম্যাপটার ওপর আলো ফেলে এইদিক ওদিক করে দেখতে লাগলো রুদ্র | তারপর আলোটা নিচে মাটির দিকে ধরতেই একটা ট্র্যাপ-ডোর দেখতে পেলো ওরা | রুদ্র নিজের মুখে করে টর্চটা ধরে দুহাতে দরজার হাতলটায় আস্তে করে চাপ দিতেই দরজা খুলে গেল | দরজা খুলতেই ওরা নিচের দিকে নেমে যাওয়ার সিঁড়ি দেখতে পেলো|​

“আমাদের কাছে এছাড়া আর কোনও চয়েস নেই রুদ্র, এখন দিয়েই যেতে হবে আমাদের…” বলে আগেই তিস্তাকে নিয়ে ভেতরে ঢুকে গেল দীপা​

“আরে!..টর্চটা তো নাও…দেখতে…”​

“লাগবেনা..আমার চোখ সয়ে গেছে..”​

রুদ্র ভেতরে ঢুকে সেই ট্র্যাপ-ডোরটা বন্ধ করে দিয়ে দীপার পেছন পেছন যেতে লাগলো | টর্চের আলতা দীপার ওপরে পরতেই দীপার সেই কলসির মতন পাছা দেখতে পেল রুদ্র। সিঁড়িটা কিছুদূর ঐরকম সোজা হয়ে নিচে নেমে যেতে লাগলো তারপর হঠাৎ আবার ওপর দিকে উঠতে লাগলো | শেষমেশ একটা দরজার সামনে এসে পৌঁছল ওরা তবে সেই দরজাতে না ছিল কোনও ছিটকিনি না ছিল কোনও লক | রুদ্র টর্চটা বন্ধ করে দিয়ে আস্তে করে দরজা ঠেলতেই দরজাটা খুলে গেল আর বাইরের ঠাণ্ডা বাতাস এসে লাগলো তাদের শরীরে | অতক্ষণ সেই গুমোট অন্ধকার অবস্থায় থাকার পর সেই জলইও ঠাণ্ডা বাতাস অনুভব করে তাদের সারা শরীর জুড়িয়ে গেল | ​

দরজা দিয়ে বেরিয়েই প্রথম যে জিনিসটা তাদের চোখে পড়লো সেটা হল একটা পুরনো পরিত্যক্ত বাড়ি | এইদিক ঐদিক তাকাতে ওরা বুঝতে পারলো যে সেখানে সেই বাড়িটা ছাড়া আর কোনও কিছুর চিহ্ন ছিল না, আর তারপরই বুঝতে পারল যে সেইটাই পাণ্ডে-জির পুরনো সেফ হাউস | আস্তে আস্তে সেই বাড়ির দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে নিজের টর্চটা আবার একবার জ্বাললও রুদ্র |​

“একি…কোনও লক নেই তো..তাহলে…?”​

“এখানে লক করার প্রয়োজন হয়না রু, এই জায়গায় কে আসবে বলে তোর মনে হয় বলতো..?”​

“কিন্তু রাস্তা দিয়ে লোকজন এলে…”​

“এই রাস্তা দিয়ে লোকজন আর যাতায়াত করে না..ওই দ্যাখ” বলে দূরে ভাঙ্গা ফ্লাইওভারের দিকে ইশারা করল দীপা​

রুদ্র আর দেরি না করে দরজাটা ঠেলা দিতেই একটা বিকট আওয়াজ করে খুলে গেল দরজাটা | বাড়িটার ভেতরটা সেই টানেলের মতন গুমোট অবস্থায় ছিল আর অনেকদিন যে কেউ সেখানে পা রাখেনি সেটাই তার প্রমাণ ছিল | রুদ্র দরজাটা বন্ধ করে তার সামনে একটা ভাঙা টেবিল টেনে চেপে দিলো | তিস্তাকে একটা ঘরে মধ্যে নিয়ে গিয়ে দেওয়ালে হেলান দিয়ে বসিয়ে দিলো দীপা | আরেকবার তিস্তার পাল্‌সটা চেক করে নিজের মাথা নাড়ল দীপা তারপর সটান উঠে রুদ্রর কাছে গেল |​

“না না….তুমি…তুমি কি করে করবে? তুমি তো আর ডাক্তার নয়…”​

“তবুও….আমাদের চেষ্টা করতে হবে রুদ্র, নাহলে অনেক দেরি হয়ে যাবে…বোঝার চেষ্টা কর প্লিজ..”​

“মানে তুমি বলতে চাইছ যে ওই সিনেমাতে যেমন দেখায় ঐরকম করবে তুমি? সুপ্ত প্রতিভা নাকি…তোমার ডাক্তারি করা…? “​

“রুদ্র, ইয়ার্কি মারিস না, যেটা বুঝিস না সেটা নিয়ে কথা বলিস না | এটা একটা প্রাণের ব্যাপার সেটা বুঝতে পারছিস না তুই ?” শক্ত গলায় বলে উঠলো দীপা​

“আমি ইয়ার্কি মারছিনা….তুমি তিস্তাকে যতটা ভালোবাসো আমি ঠিক ততটাই ভালোবাসি, তাই…..”​

“ওসব সেন্টিমেন্টের কথা রাখ এখন, তোকে আগে যেটা খুঁজতে বলেছি সেটা খোঁজ | ইটস ভেরি ইম্পরট্যান্ট রুদ্র নাহলে….”​

“নাহলে কি মারা…”​

“এইবার কিন্তু আমার হাত চলবে রুদ্র…আর সেটা আমি একদমই করতে চাইনা…তিস্তার জন্য…প্লিজ রু…” ​

রুদ্র সেই উভয়সঙ্কটের মুহূর্তে এসে কিছুক্ষণ চুপ করে ভাবে তারপর অবশেষে দীপার কথা মেনে নিলো আর সেই সব জিনিসগুলো খুঁজতে লাগলো | অবশেষে একটা রাফ সার্জারি করার সব জিনিসপত্র জোগাড় করে ফেললো ওরা |​

“নে এবার ওর ওই উন্ডটার ওপরে লাগানো কাপড়টা কেটে দে” রুদ্র একটা ভাঙা কচি দিয়ে কোনও মতে সেই কাপড়ের টুকরোটা কেটে আস্তে আস্তে সরিয়ে দিতেই ওদের সামনে তিস্তার ক্ষতটা ফুটে উঠলো | ইসসস কত নৃশংস ভাবেই না ওকে গুলি করেছে ওই গুণ্ডাটা |​

“ঠিক আছে, এবার ওকে জাগাতে হবে…দাঁড়া…..তিস্তা…এই…তিস্তা, তিস্তা ওঠো” দীপা একবার বলে কোন সারা না পাওয়ায় তারপর আবার একবার ডাকল | এই রকম অনেক্ষন ধরে ওকে ঝাঁকিয়েও কোনও ফল না মেলায় দীপা ওর চোখে মুখে জলের ঝাপটা দিতে বলল রুদ্রকে | রুদ্র সামনের টেবিলের ওপর রাখা নোংরা বোতল থেকে হাতে জল নিয়ে ঝাপটা দিতেই, তিস্তা নিজের চোখ খুলল | তার শরীর থেকে অনেকটা রক্ত বেরিয়ে যাওয়ার ফলে সে খুবই দুর্বল হয়ে গেছিল , এতোটাই দুর্বল যে নিজের চোখের পাতা অব্দই খুলে রাখতে পারছিল না সে | ​

“তিস্তা?…অ্যাই তিস্তা…আমাদের কে চিনতে পারছ তো..এই তিস্তা…” কোনও উত্তর না দিয়ে কোনও রকমে ওদের মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো তিস্তা | ​

“ও…কথা বলছে না কেন?” রুদ্র কাঁদো কাঁদো গলায় বলে উঠল ​

“এই তিস্তা….তুমি ওকে চেনও না? ওর নাম জানো না তুমি?” রুদ্রর দিকে ইশারা করে প্রশ্ন করলো দীপা​

তিস্তা কিছুক্ষণ রুদ্রর দিকে তাকিয়ে থেকে হঠাৎ একটা অস্ফুট স্বরে বলে উঠল “রু…”​

“হ্যাঁ….আর..আর আমাকে ? আমার নাম কি?”​

“দীপ…পা” আবার হালকা অস্ফুট স্বর ভেসে এলো তিস্তার গলা দিয়ে​

“এইতো সোনা..কিচ্ছু হয়নি তোমার কিন্তু তিস্তা…” বলে তিস্তার মাথায় হাত রাখল দীপা “উই নিড টু অপারেট অন ইউ, তোমার কাঁধ থেকে ওই গুলিটা বার করতে হবে”​

কোনও কথা না বলে নিজের মাথাটা নাড়াল তিস্তা তারপর হঠাৎ রুদ্রর দিকে তাকিয়ে ওকে কাছে আসতে বলল | রুদ্র কাছে আসতেই তিস্তা নিজের হাত দিয়ে রুদ্রর হাতটাকে শক্ত করে চেপে ধরল |​

“আমি এখানেই আছি তিস্তা….আমি তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাচ্ছি না…” বলে তিস্তার সামনে বসলো রুদ্র​

ঘর থেকে খুঁজে পাওয়া লাইটারটা জ্বালিয়ে তার ওপর একটা ছুড়ি ধরল দীপা, ওটাকে স্টেরাইল করার জন্য| রুদ্র এক হাতে টর্চটাকে আর আরেক হাতে তিস্তার হাত শক্ত করে চেপে ধরল | ছুড়িটা স্টেরাইল করা হয়ে গেলে দীপা তার ওপর একটা ভাঙা চিমটে গরম করতে লাগলো | তারপর একটা কাপড়ের টুকরোকে অল্প জলে ভিজিয়ে ওর ক্ষতর জায়গাটা পরিষ্কার করে দিলো |​

“তিস্তা, আই হোপ ইউ আর রেডি…খুব লাগবে সোনা, খুব কিন্তু যতই লাগুক প্লিজ চেঁচাস না | চেঁচালে সব কিছু বিগড়ে যাবে আমাদের” এই বলে তিস্তার গালে হাত বোলাল দীপা | “রেডি?”​

“হুম” তিস্তার এতক্ষণে এই প্রথম শক্ত ভাবে বলে উঠলো তিস্তা তবে তার কথা শেষ হতে না হতেই সেই ক্ষতর জায়গাতে অপারেট করতে আরম্ভ করল দীপা | যতই দীপা গভীরে যেতে লাগলো ততই তিস্তা রুদ্রর হাতটা জোরে চেপে ধরতে লাগলো | ব্যথায় যন্ত্রণায় তিস্তার চোখ দিয়ে জল বেরোতে থাকলেও একটা টু শব্দ বের করল না মুখ দিয়ে ।।​

“আরও একটু কাটতে হবে” বলে ছুড়িটা দিয়ে ওই ক্ষতর মুখটা আরও কিছুটা কেটে দিলো দীপা আর সাথে সাথে সেই নতুন ক্ষত দিয়ে টকটকে লাল রক্তর ধারা গড়িয়ে পড়তে লাগলো । ​

“এ তুমি করছ বলতো, মেরে দেবে নাকি ওকে” রুদ্র রাগে চেঁচিয়ে উঠলেও, ওর কথায় কোনও সারা দিলো না দীপা | ক্ষতর মুখটা হাঁ করিয়ে চিমটেটাকে আবার গরম করে সেই ক্ষতর মধ্যে ঢুকিয়ে দিলো দীপা | তিস্তার ব্যথায় চেঁচাতে না পেরে রুদ্রর হাত ধরে ছটফট করতে লাগলো আর তার সেই করুন অবস্থা দেখে রুদ্রর নিজের চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে এলো | অনেক্ষন পর অবশেষে তিস্তার ক্ষত থেকে গুলিটা বার করতে সক্ষম হল দীপা তবে তিস্তা তখন প্রায় অজ্ঞান অবস্থাতে বসে | দীপা আবার ওই জায়গাটা ভাল করে মুছিয়ে দিলো ।​

“এইবার..এইবার কটারাইস করতে হবে ওই জায়গাটা” ​

“মানে….?”​

“মানে ওর ক্ষতটার মুখটা বন্ধ করতে হবে যাতে না ইনফেকশন হয়”​

“কি..কি করে করবে তুমি…ওটা?” ভয়ার্ত কণ্ঠে দীপাকে প্রশ্ন করল রুদ্র যদিও সে জানত যে কোন ভালো কিছু উত্তর পাবেনা দীপার কাছ থেকে….​

“পুড়িয়ে”​

“মানে??”​

“পুড়িয়ে…বার্ন…” ঠাণ্ডা ভাবে বলে উঠল দীপা​

“না না একদম না, আর না….আর ওকে কত কষ্ট দেবে না তুমি..”​

“আমারও ওকে এই অবস্থাতে দেখতে একদম ভাল লাগছে না কিন্তু কটারাইস না করলে ওই জায়গা থেকে ইনফেকশন হয়ে ও মরেও যেতে পারে, সেটা নিশ্চয়ই তুই চাস না বল? ” দীপা চেঁচিয়ে বলল ​

“না…চাইনা..কিন্তু আমি…”​

“ব্যাস তাহলে চুপ…একদম চুপ” বলে রুদ্রকে থামিয়ে দিলো দীপা | তারপর নিজের হাতের ছুরিটা এলকোহল দিয়ে ধুয়ে আবার লাইটারের ওপরে ধরল গরম করার জন্য তবে এবারে আরও একটু বেশিক্ষণের জন্য | ছুড়িটা গরম হতে হতে একদম আগুনের মতন লাল হয়ে জ্বলতে লাগলো |​

Leave a Reply