কালো মেয়ের লাল গুদ ১ম

আমি চুপ করে রইলাম | ডাক্তার দিদি আবার বলল, “নিজেকে সাম্ভলাও, ছেলেগুলো কেউ তোমাকে বিয়ে করবে না, খালি বদনাম হবে তোমার, তোমার ভালোর জন্য বলছি |”
আমাকে তার চেম্বার এর বিছানায় সুইয়ে সারা শরীর পরীক্ষা করলো |
গম্ভীর হয়ে বলল, “তোমাকে কি কেউ রেপ করেছে |”
আমি চুপ করে ছিলাম |

ডাক্তার দিদি বলতে লাগলো, “এইরকম অমানুষিক ভাবে তোমাকে ছিড়ে খেয়েছে আর তুমি চুপ করে আছ | পুলিশ এ খবর দাও | যদি তুমি খবর না দাও আমি পুলিশ ডাকছি |”
আমি দিদির হাথ ধরে কেঁদে ফেললাম আর সম্পূর্ণ ঘটনাটা বললাম |
কাঁদতে কাঁদতেই বললাম, “পুলিশ এ পারব না জানাতে | বাবা মা জানলে মরে যাব | আপনি বাচান |”
ডাক্তার দিদি অনেক খন চুপ করে থেকে বলল, “ঠিক আছে, কিন্তু ওই মেয়েটির কাছে আর কোনদিন যাবে না |”
ওষুধ নিয়ে বাড়ি ফিরলাম |

ভয় ছিল পেটে বাচ্চা আসবে না তো, না অসুধ খেয়েছি, কিছু হবে না | ছেলে দুটো আবার কোনো রকম বিপদে ফেলবে না তো… ভগবান বাচাও | এই সব চিন্তা করতে করতে চার দিন পার হয়ে গেল | মানসিক দিক থেকে এই চার দিনে আমিও নিজেকে সামলে নিলাম | আরও দু দিন পরে আচমকা সকাল ১০ টা নাগাদ যিষ্ণুদা আমাদের বাড়ি এসে হাজির | আমি আর লজ্জায়ে ঘর থেকে বেরই নি | যিষ্ণুদা ও বেশিক্ষণ থাকে নি | দাদাকে নিয়ে কোথায় বেরিয়ে গেল | বিকেলে দাদা একা ফেরত এলো | মা কে বলল, যিষ্ণুর সঙ্গে গিয়ে কয়েকটা কারখানা তে চাকরির আবেদন দিয়ে এসেছে | দাদা যিষ্ণুদার খুব প্রসংসা করলো | আবার কেন জানিনা আমার বুকের ভেতর একটা জমাট ব্যাথা উঠলো |

সেদিন রাত্রে স্বপ্ন দেখলাম, আমি আর জিশ্নুদা কোনো একটা বাগানে বসে আছি | যিষ্ণুদার হাথ আমার পিঠে, আমার মাথা যিষ্ণুদার কাঁধে, দুজনে দুজনার দিকে তাকিয়ে আছি | ঘুম ভেঙ্গে গেল | আমি ঘামাচ্ছিলাম | এ কি চিন্তা আমার | কোথায় যিষ্ণুদা আর কোথায় আমি | যিষ্ণুদা কত হ্যান্ডসম, ফর্সা, প্রায় ৫’ ৮” লম্বা, আর আমি একটা কালো মেয়ে, মাত্র ৫’ লম্বা | ছিঃ, কি আজে বাজে চিন্তা করছি | তার উপর সম্পর্কে আমি ওর মাসি হই | ও আমার বোন্-পো | আমার মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে | না, আজে বাজে চিন্তা আর করব না | কিন্তু আর ঘুমোতে পারলাম না | খালি স্বপ্নর কথা মনে পরে যাচ্ছিল |

যিষ্ণুদা ১০ – ১২ দিন অন্তর প্রায়ই আসতো | সকালে ১০ টা নাগাদ | দাদা আর ছোরদার সাথে বসতো | আমাকে দেখলে শুধু কেমন আছ জিজ্ঞেসা করত | বেসি কিছু কথা আমাকে বলত না | দাদা আর ছোরদার সাথে বেরিয়ে যেত চাকরির খোজে |
এক দিন যিষ্ণুদা এসে ছিল, দাদা আর ছোরদার সাথে কি কথা হচ্ছিল, আমি চা নিয়ে ঘরে ঢুকছিলাম, যখন সুনলাম যিষ্ণুদা বলছে, “নিজের মনে কনফিডেন্স রাখো | পারব, চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখব না | ঠিক সফল হব জীবনে | এমন কোনো কাজ নেই যেটা আমরা করতে পারব না | শুধু নিজের উপর বিশ্বাস রাখো, নিজের মনে কনফিডেন্স আন, একটা মনে জেদ ধরো, আমি চাই, আদায় করে ছাড়ব |”

আমি হা করে কথা গুলো শুনছিলাম | চা দিয়ে আস্তে আস্তে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলাম | মনে মনে চিন্তা করলাম, জেদ, আমার চাই, কনফিডেন্স, পারব, বিশ্বাস রাখো…. কিন্তু কি চাই, যিষ্ণুদার ভালবাসা | ছিঃ, আবার এ কি যা তা চিন্তা করছি | কিন্তু কি করব, আমি কি যিষ্ণুদা কে ভালোবাসতে শুরু করেছি? সারাটা দিন বুকের মধ্যে একটা জ্বালা নিয়ে কাটালাম |
অধীর হয়ে অপেখ্যা করতাম কবে যিষ্ণুদা আসবে | আমি যেন একবার চোখের দেখা পেলেই শান্তি পেতাম | বুঝতাম এটা আমার এক তরফা ভালবাসা | এই ভালবাসার পরিনাম যে অতি ভয়ানক বুঝতাম তবু মনে মনে আমি যিষ্ণুদার স্বপ্ন দেখতাম | আমার যিষ্ণুদার প্রতি প্রেম যেন দিন দিন বেড়ে যেতে লাগলো | কিন্তু যিষ্ণুদা একবারের জন্য ও এই কালো মেয়ের দিকে ফিরে তাকালো না |

দেখতে দেখতে একটা বছর পার হয়ে গেল | এক দিন দাদার নামে চিঠি আসলো, স্টেট ইলেকট্রিসিটি বোর্ড এ দাদাকে অপ্প্রেন্তিসশিপ এর জন্য জইন করতে বলেছে | এক বছর অপ্প্রেন্তিসশিপ এর পরে চাকরি | বাড়িতে এত দিন পরে যেন একটা খুশির খবর পেয়ে সবাই লাফা লাফি শুধু করলো | দাদা বলতে লাগলো যিষ্ণুর জন্যই এই চাকরিটা সম্ভব হয়েছে | যিষ্ণু নিজে জোর করে ফর্ম ভরে ছিল দাদার জন্য | দাদাকে স্টাডি মেটেরিয়াল যোগার করে দিয়েছিল পরীক্ষা তে যাতে পাস করতে পারে | দাদা, ছোরদা, দুই জনে যিষ্ণুদার খুব প্রসংসা করতে লাগলো | বাবা মা ও যিষ্ণুদার খুব গুণ গান করলো | আমার বুকের ভিতর যেন গর্বে ফুলে উঠলো | মিষ্টি নিয়ে দাদা আর ছোরদা চলে গেল যিষ্ণুদার বাড়ি |

দাদার ট্রেনিং কলকাতা তেই ছিল, তাই বাড়ির থেকেই যাতায়াত করত | দাদার চাকরি হয়ে যাবার পর যিষ্ণুদার আসা যাওয়া ও কমে গেল | দুই মাস পরে হঠাত যিষ্ণুদা আসলো | হাতে অনেক মিষ্টি | বলল ওর ও চাকরি হয়ে গিয়েছে, তবে কলকাতা তে নয় | বাঙ্গালোর এ | সুনে আমার বুক ফেটে কান্না উঠে আসলো | আমি কোনো রকম নিজেকে সম্ভলে বাথরুম এ গিয়ে খুব কাঁদলাম | আর যিষ্ণুদার সাথে দেখা হবে না | অতি কষ্টে নিজেকে সম্ভলে সবার সাথে বসলাম | সে দিন ছিল রবিবার, তাই সবাই বাড়িতে ছিল | সবাই বিকেল পর্যন্ত হই হই করলো |

বিকেলে যিষ্ণুদা, বাবা আর মা কে প্রনাম করে, দাদা আর ছোরদার সাথে কোলা কুলি করে শ্যামল আর আমার মাথায়ে হাথ বুলিয়ে, “চলি গ ছোট্ট মামা আর আমার ছোট্ট মাসি” বলে হাসলো |
আমি জিজ্ঞেসা করলাম, “আবার কবে আসবে |”
যিষ্ণুদা বলল, “এখন কিছু বলতে পারছি না, তবে এক বছরের মধ্যে নয় | নিশ্চিন্ত থাক, ছুটিতে আসলে, এখানে ঠিক দেখা করতে আসব |”
যিষ্ণুদা চলে গেল | আমার বুকের ভেতর যেন হাজার পোকা কুকড়ে কুকড়ে আমার হার মাংস চিবিয়ে খাচ্ছিল | অতি কষ্টে নিজেকে সাম্ভলালাম যিষ্ণুদার কথা মনে পড়ল, জেদ ধর, বিশ্বাস রাখো, পারবে আদায় কারো, মনে কনফিডেন্স আন |

আমি নিজেকে নতুন ভাবে তৈরি করতে শুরু করলাম | পড়াশুনায় মন দিলাম | ছাত্র পরাতে লাগলাম | এই ভাবে দিন কাটতে লাগলো | মাঝে মাঝে যিষ্ণুদার চিঠি আসতো দাদার আর ছোরদার কাছে | সেখান থেকেই যিষ্ণুদার খবর পেতাম | দেখতে দেখতে বছর ঘুরে গেল | বাবার রিটায়ারমেন্ট এর সময় ও ঘনিয়ে আসলো | দাদার চাকরি পের্মানান্ট হয়ে গেল | ছোরদা ও একটি গাড়ি তৈরী কারখানায় চাকরি হয়ে গেল | বাবা মা আমার বিয়ে দেবার জন্য উঠে পরে লাগলো | বেশ কয়েকটা পাত্র পক্ষ্য আমাকে দেখতে আসলো | সবার মুখে একই কথা, ‘মুখশ্রী খুব মিষ্টি, চোখ দুটো ভারী সুন্দের, ফিগার ও চোখ ঝলসানো, কিন্তু….. মেয়ে ভীষণ কালো…. আর একটু বেটে ….’ মা এর চিন্তা বাড়তে লাগলো | যিষ্ণুদার স্বপ্ন এখনো আমার মন এ গেথে ছিল |

আমি ২১ বছরে পা দিলাম | তিনটি বছর পার হয়ে গেল সেই বিভিসিখার দুপুর থেকে | দোলার সাথে আর আমার কোনো দিন দেখা হয় নি | ওরা খারাগ্পুর চলে গিয়েছে |

দেখতে দেখতে ৩ টি বছর পার হয়ে গেল যিষ্ণুর সাথে প্রথম দেখা হবার পর | আমি ও আগের থেকে আনেক মেচুওরড হয়ে গিয়ে ছিলাম | কিন্তু যিষ্ণুর প্রতি দুর্বলতা কিছুতেই কমে নি | তবে মনে মনে ঠিক করে ছিলাম আমার জীবনের সব ঘটনা এক দিন বলব যিষ্ণুকে | হেঃ যিষ্ণু কে, আর যিষ্ণুদা চিন্তা করতে ভালো লাগত না | যিষ্ণু… যিষ্ণু | আবার মনে ভয় ও ছিল, যিষ্ণু সব শুনে যদি আমাকে ঘৃনার চোখে দেখে? আমি তো নষ্ট মেয়ে | সেচ্ছায়ে না হলেও, আর তো কুমারী নই | কিন্তু যিষ্ণু কে যত টুকু আমি চিনেছি, সে ভীষণ প্রাকটিক্যাল | হয়তো আমাকে ক্ষমা করে দেবে | এই সব এলো মেলো চিন্তা নিয়েই আমার দিন কাট ছিল |

একদিন সকল ৯ টার সময় যিষ্ণু এসে হাজির | বাড়িতে হুল্লোর পরে গেল | সবাই খুব খুসি | আমার বুকের ভিতর আনন্দে যেন ঢাকের কাঠি বাজতে শুরু করলো | দাদা আর ছোরদা যিষ্ণু কে পেয়ে যেন নতুন জীবন ফিরে পেল | দুজনারই অফিস এ যাবার তারা ছিল | ওরা যিষ্ণু কে বিকেল পর্যন্ত থাকতে রিকোয়েস্ট করলো, ওরা না ফেরা পর্যন্ত | যিষ্ণু রাজি হয়ে গেল | মা আমাকে জল খাবার বানাতে বলল যিষ্ণুর জন্য | আমি অতি উত্সাহের সাথে লুচি তরকারী বানাতে বসলাম, যেন আনেক দিন পর আমার বর ফিরেছে, তাকে সেবা করার একটা সুযোগ পেয়েছি | মনে মনে প্রনাম করে যিষ্ণু কে জল খাবার দিলাম | যিষ্ণু হাসতে হাসতে খেল | আমি আর শ্যামল ও ওর সাথে খেলাম | বাবা, দাদা আর ছোরদা ভাত খেয়ে নিলো | দাদা আর ছোরদা অফিস এ চলে গেল |

আমিও আজকাল বেশ কথা বলতে শিখে গিয়েছি | একটা কনফিডেন্স যেন আমাকে পেয়ে বসেছিল | পারব, আমি পারব | যিষ্ণুর পাসে বসে আমি যিষ্ণু কে বাঙ্গালোর কেমন শহর, চাকরি কেমন লাগছে, কত দিন ছুটি ইত্যাদি জিজ্ঞেসা করতে লাগলাম | যিষ্ণু আমার প্রশ্নের উত্তর তো দিল কিন্তু আনুভব করলাম যে ও যেন আমাকে নতুন ভাবে দেখছে | এই আলো কে যেন এর আগে কোনো দিন দেখে নি | তাহলে কি আমি পারছি যিষ্ণুর মন কাড়তে? অনুভব টি মনে আসতেই আমার চোখে মুখে যেন একটি বিজয়িনীর হাসি ফুটে উঠলো | যিষ্ণুর যেন আমার সাথে কথা বলতে কি রকম অস্বস্তি হতে শুধু করলো | ঠিক তখন শ্যামল ও এসে আমাদের মাঝে বসলো | যিষ্ণু আবার সাধারণ ভাবে আমার সাথে কথা বলতে লাগলো |

বাবা রিটায়ারমেন্ট এর আগে একটি বাড়ি তৈরী করছিল | তার কাজ দেখতে যাবার কথা ছিল | শ্যামল ও বাবার সাথে যাবে | যিষ্ণু তা শুনে বাবার সাথে যাবার কথা বলল |
মা শুনে বলল, “না বাবা, এই গরম আর ধুলোর মধ্যে দুপুর টা কাটিয়ে কি করবে, এখানেই থাক, বিশ্রাম কারো |”
বাবা ও যিষ্ণু কে বাড়িতেই থাকতে বলল | বাবা আর শ্যামল বেরিয়ে গেল | আমরা তিন জনে রয়ে গেলাম বাড়িতে, মা, আমি আর যিষ্ণু | মা চা করে আমাদের সাথে বসলো |
মা আমার বিয়ের কথা তুলে যিষ্ণু কে কালো আর বেটে মেয়ের বিয়ে দেবার কত যে জ্বালা বলতে শুরু করলো | বলতে বলতে একসময় যিষ্ণু কে মা বলল, “যিষ্ণু, তোমার তো অনেক চেনা জানা আছে, দেখো না বাবা, যদি তুমি একটা ভালো পাত্র যোগার করে দিতে পার আলোর জন্য | আমি তোমাকে একটা ফটো ও দিয়ে দেব, দেখো না যদি পার |”

যিষ্ণু হাসতে হাসতে ঠাট্টার ছলে বলল, “দিদা, তুমি কি আলোকে জিজ্ঞেসা করেছ ও নিজে কোনো ছেলে ঠিক করে রেখেছে কিনা নিজের জন্য|”
মা ও হাসতে হাসতে বলল, “যদি ও নিজে কোনো ছেলে কে পছন্দ করে থাকে, তবে আমরা হাসি মুখে তাকে জামাই করে নিয়ে আসব |”
দুজনে হাসতে শুরু করলো, আর আমি মনে মনে মা কে বললাম, “তোমার সামনেই তো বসে আছে পাত্র, তাকেই জামাই কারো না |”
মাথায় তখন আমার দুষ্টু বুদ্ধি ঘুরছে, চোখে মুখে দুষ্টু হাসি | এক মনে যিষ্ণু কে দেখ ছিলাম আমি | যিষ্ণু একবার আমার দিকে তাকিয়ে চোখ ঘুরিয়ে নিলো |

মা তার রান্নার কাজ আর ঘরের কাজ করতে চলে গেল | আমি আর যিষ্ণু সাধারণ কথা বার্তা করতে লাগলাম | আবার আমার মনে হলো যিষ্ণু একটু অস্বস্তি বোধ করছে | মনে মনে হাসি পেল | মাথায় দুষ্টুমি চাপলো | আমি যিষ্ণুর পাসে গিয়ে বসলাম আর খেপাবার তালে জিজ্ঞেস করলাম, “তা তুমি তো আমার জন্য বর যোগার করে আনবে, নিজের জন্য কি বউ যোগার করেছ আগে?” চোখে মুখে তখন আমার হাসি ফুটছিল | যিষ্ণু আমার দিকে তাকিয়ে বলল, “আমি তো না হয় তোমার বর খোজার দায়িত্ব নিলাম, তা তুমিই না হয় আমার বউ যোগার করার দায়িত্বটা নিয়ে নাও |”
দুজনেই হেসে উঠলাম |

মাথায় কু বুদ্ধি চেপেছিল | আমি যিষ্ণুর হাথের উপর আলগা আমার হাথ রেখে মুচকি হেসে বললাম, “আর যদি বলি যে আমি কাউকে ভালোবাসি, তাহলে |”
যিষ্ণু ও হাসতে হাসতে উত্তর দিল, “আলাপ করিয়ে দাও, তোমার বাবা মা র সাথে আমি কথা বলছি |”

মাথা নেড়ে আমি বললাম, “আলাপ আমি তোমার সাথে করিয়ে দিতে পারি, কিন্তু তোমাকে কথা দিতে হবে যে আপাতত এই কথা তুমি কাউকে জানাবে না |”
“বা রে বা, যদি তোমার বাবা মা কে কিছু না বলি, তারা জানবে কি করে তোমার পছন্দের ছেলের সম্বন্ধে?” হাসতে হাসতে যিষ্ণু প্রশ্ন করলো |

আমি উত্তর দিলাম, “আপাতত আমি চাইনা যে কেউ জানুক আমার প্রেম কাহিনীর ব্যাপারটা |”
“কেন?” যিষ্ণু জানতে চেল |

“বলব তোমাকে, সব বলব পরে, কিন্তু তোমাকে আগে আমাকে ছুয়ে কথা দিতে হবে তুমি কাউকে কিছু বলবে না | গোপন রাখবে!” আমি আস্তে করে বললাম |
“আচ্ছা বাবা কথা দিলাম.” যিষ্ণু আমার মাথায়ে হাথ রেখে বলল |
“প্রমিস |”
“প্রমিস |”
“হমমম… বেশ, আসছে সোমবার আমার কলেজ খুলছে, তুমি আমার সাথে সোমবার সকাল ১১ টার সময় কলেজ এর সামনে দেখা কর | কাউকে বলবে না কিন্তু |”

যিষ্ণু আমার দিকে এক আশ্চর্য দৃষ্টি দিয়ে তাকিয়ে ছিল | তার পর বলল | “ঠিক আছে |”
খুসি তে আমার বুক ফেটে গেল | আনন্দে যিষ্ণু কে জড়িয়ে ধরলাম | মুখ থেকে বেরিয়ে গেল, “তোমাকে অশেষ ধন্যবাদ |”

যিষ্ণু কে ছেড়ে পাসে বসলাম | দেখলাম যিষ্ণু ভীষণ একটা অস্বস্তি বোধ করছে | আমার ও অবস্থা শোচনীয় | যিষ্ণু উঠে দাড়ালো আর বলল, “আলো, আমি একটু ছাদ থেকে ঘুরে আসছি, একটা সিগারেট খাব |” ওর গলার স্বর কেমন পাল্টে গিয়েছে | আমি কিছু বলতে ভয় পাচ্ছিলাম | যিষ্ণু ছাদ এ চলে গেল |

নিজের ঘরে এসে বসলাম, সারা শরীর উত্তেজনায় কাঁপছে, আগুন নিয়ে খেলা করছিলাম আমি, সবাইকে কি পুড়িয়ে ছাড় খার করে দেব আমি | একটা জেদ চেপে ছিল আমার মধ্যে, আমাদের মতো কালো মেয়েদের কেউ ভালবাসে না? কেন | ভালবাসা আদায় করব, যিষ্ণুর ভালবাসা আদায় করব আমি |

আধ ঘন্টা পর যিষ্ণু ছাদ থেকে নেমে আসলো | মনে হচ্ছে চোখ মুখ জল দিয়ে ধুয়েছে | কেমন যেন বোকার মতো তাকাচ্ছিল আমার দিকে | মা খেতে ডাকলো | আমরা খেতে বসলাম, মা, আমি আর যিষ্ণু | মা যিষ্ণু কে তাদের দেশের বাড়ির গল্প সোনাচ্ছিল | যিষ্ণু মন দিয়ে শুনছিল |

খাওয়া দাওয়ার পর মা যিষ্ণু কে দাদার ঘরে বিশ্রাম করতে বলল | মা আর আমি নিজেদের ঘরে গেলাম | আমার ঘুম পাচ্ছিল না | শুধু যিষ্ণুর মুখটা ভাসছিল | আজ যখন যিষ্ণু কে জড়িয়ে ধরে ছিলাম, আমার দুধ দুটো ওর বুকের মধ্যে সক্ত হয়ে গিয়ে ছিল | যিষ্ণু কি টের পেয়েছিল? কি ভাববে আমাকে | ছিঃ, ওটা করা টা বোধ হয় উচিত হয় নি, কিন্তু তখন আবেশের মাথায়ে জড়িয়ে ধরে ছিলাম, ওকে একা পাবো সারা দিন ভেবে | এত তারা তারি যে আমি একা যিষ্ণুর সাথে সারা দিন প্রেমিক প্রেমিকার মতো কাটাতে পারব ভাবি নি | কি করবো সারা দিন? কথায়ে যাব, কি করে আমার মনের কথা ওকে সোনাব | কিছু একটা উপায় বার করতে হবে |

বিকেল ৫ টা নাগাদ মা আর আমি উঠে চা করলাম | মা যিষ্ণু কে ডেকে তুলল | যিষ্ণু হাথ মুখ ধুয়ে আমাদের সাথে চা খেতে বসলো | তখনি বাবা আর শ্যামল বাড়ি ফিরল | আর কিছুক্ষণ পর ছোরদা আর দাদা ও বাড়ি ফেরত এলো | সবাই মিলে যিষ্ণু কে ঘিরে গল্প করতে লাগলো, আমি শুধু দূর থেকে সবার চোখ বাঁচিয়ে যিষ্ণুর মুখটা দেখছিলাম | রাত আট টা নাগাদ যিষ্ণু নিজের বাড়ির দিকে রওনা দিল |

আমি কাছে গেলাম না, ভীষণ মন খারাপ লাগছিল তাই | ছাদ থেকেই দেখলাম | অন্ধকারে যিষ্ণু বুঝতে পারল না আমি ওকে দেখছি | বুকটা যেন ফাকা হয়ে গেল, চোখ দিয়ে আমার জল গড়িয়ে পড়ল | ঘরে ঢুকে আমার মাথায় কু বুদ্ধি ঢুকলো, গত কাল আমার পিরিয়ড শেষ হয়েছিল. মা কে বললাম একটা মাথা ব্যাথার ওষুধ নিয়ে আসছি | ওষুধের দোকানে গিয়ে একটা মাথা ব্যাথার ওষুধ আর এক মাসের গর্ব নিরোধক ট্যাবলেট কিনলাম | বাড়ি ফিরলাম | ওষুধ খেতে শুধু করলাম |

ছয়টা দিন…….এই ছয়টা দিন যেন কিছু তেই কাটছিল না | সময় যেন আটকে আছে |তার মধ্যে কাটা ঘায়ে নুন ছেটাতে পাসের বাড়ির কাকিমা আসলো | কাকিমা যিষ্ণু কে দেখেছিল | মা কে জিজ্ঞেস করলো ছেলেটি কে, মা বলল | কাকিমা বলল ছেলেটি খুব ভালো | মা ও যিষ্ণুর প্রচুর প্রসংসা করলো |
কাকিমা বলল, “আমার মধুর বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে তা না হলে তোমাদের বলতাম যদি ওদের জাত বিচার না থাকে সম্বন্ধ পাতানো যেত |”
কথাটা শুনে আমার হিংসাতে গা জ্বলে গেল | ইচ্ছে করছিল চেঁচিয়ে বলি, ‘নজর দেবে না যিষ্ণুর দিকে | চোখ গেলে দেব |’
মা কাকিমাকে তখন হাসতে হাসতে বলল, “বলতো তোমার ছোট মেয়ের জন্য কথা পারতে পারি |”

কাকিমা বলল, “দীপ্তি তো সবে ১৯ এ পড়ল | দুই বছর পরে বিয়ের চেষ্টা করব | তত দিন কি ওর বাবা মা অপেক্ষা করবে |”
মা কি বলল শুনবার জন্য অপেক্ষা করিনি, রাগে, আমার শরীর কাঁপছিল | কাউকে কিছু বুঝতে না দিয়ে উঠে নিজের ঘরে গেলাম | ভীষণ হিংসা হচ্ছিল |