বজ্রাঘাত ১ম অংশ

মাস্টার্বেশন ব্যাপারটা প্রথম শিখেছিল মধুময়ন্ত্রীর কাছে, তখন সে স্কুলের ফাইনালের ছাত্রী। একদিন ওর বাড়িতে গিয়েছিল কিছু নোটস্‌ আনতে সন্ধ্যেবেলায়। সেদিন ওদের বাড়িতে কেউ ছিল না, কোথাও গিয়েছিল বোধহয়। বাড়িতে শুধু মধুময়ন্ত্রীই ছিল। ওর ঘরের বিছানায় বসে কথা বলছিল ওরা, হটাৎ ওকে জিজ্ঞাসা করে মধুময়ন্ত্রী, ‘এই, তুই আঙলী করিস?’

কথাটা যে ওর কাছে নতুন, তা ঠিক নয়, আগেও শুনেছে অন্য বন্ধুদের কাছে, কিন্তু নিজে করার উৎসাহ বোধ করেনি কখনও, তাই নির্লিপ্ত মুখে উত্তর দিয়েছিল, ‘না রে, কখনও করি নি।’

ওর কথা শুনে খিলখিল করে হেসে উঠেছিল মধুময়ন্ত্রী… ‘কি বলছিস রে, আগে কখনও আঙলী করিস নি? সত্তিই?’

কাঁধ ঝাঁকিয়ে উত্তর দিয়েছিল পৃথা, ‘না, করি নি, তো?’

‘তো কি রে? আসল মজাই তো তাহলে এখনও এঞ্জয় করতে পারিসনি…’ বলে এগিয়ে এসে ওর সদ্য গজিয়ে উঠতে থাকা টাইট অথচ নরম স্পঞ্জের বলের মত গোল গোল বুকগুলো টিপে দিয়েছিল হাত বাড়িয়ে।

নিজের কচি বুকে হাতের টেপনে কেমন একটা সিরসির করে উঠেছিল শরীরটা… ‘আহহহহ…’ করে শিৎকার দিয়ে উঠেছিল সে।

‘কি রে, মাই টিপতে লাগলো নাকি?’ ওর ‘আহহহ’ শুনে প্রশ্ন করে মধুময়ন্ত্রী।

‘না রে, লাগে নি ঠিক, কেমন সিরসির করে উঠল শরীরটা…’ স্বীকার করে পৃথা বন্ধুর কাছে।

‘মানে ভালো লাগলো, বল?’ হেসে জিজ্ঞাসা করে বন্ধু।

‘হু, বলতে পারিস… বেশ অন্য রকম ফিলিংস…’ মাথা নেড়ে উত্তর দেয় সে।

‘দাঁড়া… আরো ভালো ফিলিংসএর ব্যবস্থা করছি…’ বলে বিছানার থেকে নেমে, ঘুরে সামনে এসে ওর ফ্রকটা তুলে গুটিয়ে দিয়েছিল কোমর অবধি, তারপর টেনে নামিয়ে দিয়েছিল পরণের ছোট্ট প্যান্টিটা।

বন্ধুর সামনে আধ-ন্যাংটো হয়ে হাল্কা লোমে ঢাকা শরীরের সবচেয়ে গোপন জায়গাটা খুলে ওই ভাবে মেলে থাকতে একটু যে লজ্জা করছিল না তা নয়, কিন্তু নতুন কিছু আবিষ্কারের আশায় গুরুত্ব দেয় নি তাতে… মধুময়ন্ত্রী তার পা দুটোকে ধরে যে ভাবে ফাঁক করে সরিয়ে দিয়ে রাখে, সেই ভাবেই বসে থাকে সে।

নিজেরও শরীর থেকে প্যান্টি খুলে রেখে পরনের স্কার্টটা কোমর অবধি গুটিয়ে নিয়ে ফের বিছানায় উঠে বসে বন্ধুর পাশে মধুময়ন্ত্রী, দুই পা মেলে রেখে। তারপর বিজ্ঞের মত ওর দিকে তাকিয়ে বলে সে, ‘দেখ, হাতের আঙুলটাকে এই ভাবে গুদের মুখের ওপরে রাখবি… বুঝেছিস… এই যে দেখছিস এই গুদের ওপর দিকের উঁচু মাংসপিন্ডটা… হ্যা, হ্যা, ওই যে, তোরও দেখ… হ্যা… ওইটা… ওখানটায় এই ভাবে আঙুলের চাপ রেখে ঘসতে থাকবি… ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে… এক কাজ কর… মুখ থেকে একটু থুতু নিয়ে নে আঙুলের ডগায়… তাতে বেশ হড়হড়ে হবে জায়গাটা… শুকনো থাকলে লাগবে… এই দেখ… আমিও নিচ্ছি… উমমম… নিয়ে ভেজা আঙুলটাকে এইটার ওপরে রেখে এই ভাবে নাড়া… হ্যা… কর… নাড়া… নাড়া… ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে কর… ভালো লাগছে না… ইশশশ… আমার দেখ গুদের মধ্যে থেকে জল কাটতে শুরু করেছে… দেখতে পাচ্ছিস… তোরও তো বেশ ভিজে উঠেছে রে… একটা আঙুল নিয়ে গুদের মুখটায় রাখ… মাঝের আঙুলটা নে… ওটা বড়, সুবিধা হবে… আঙুলটাকে আস্তে করে ঢুকিয়ে দে গুদের মধ্যে… আরে আস্তে… দাঁড়া… দেখাচ্ছি।’

বন্ধুর দেখানো পথে নিজের যোনির মধ্যে আঙুলটাকে ঢোকাবার চেষ্টা করে পৃথা, কিন্তু ঠিক যেন মধুময়ন্ত্রী যে ভাবে করছে, সেই মত হয় না… এর আগে ওর মত করে নিজের ক্লিটের ওপরে আঙুল ঘসে বেশ মজা লাগছিল, কিন্তু আঙুল ঢোকাতে গিয়ে দেখে বিপত্তি… ঠিক বন্ধুর মত ব্যাপারটা হচ্ছে না।

মধুময়ন্ত্রী উৎসাহ নিয়ে ঝুঁকে পড়ে ওর পায়ের ওপরে, তারপর নিজের হাতের আঙুলটাকে সোজা করে ঠেকায় পৃথার কুমারী যোনির মুখটায়… আঙুলের ডগাটা যোনির মধ্যে থেকে চুঁইয়ে বেরুনো রসে ভালো করে ভিজিয়ে নিয়ে আলতো হাতের চাপে ঢুকিয়ে দিতে থাকে ভেতরে… পৃথার মনে হয় যেন কারেন্ট মারলো শরীরের মধ্যে… হাত তুলে খামচে ধরে মধুময়ন্ত্রীর কাঁধটাকে… দম বন্ধ করে তাকিয়ে থাকে নিজের পায়ের ফাঁকের দিকে… মন দিয়ে দেখে বন্ধুর আঙুলটা একটু একটু করে নিজের শরীরের মধ্যে হারিয়ে যাচ্ছে কি ভাবে… পা দুটোকে আরো খুলে মেলে দেয় দুই দিকে… ‘উমমমম…’ মুখ থেকে একটা গোঙানি বেরিয়ে আসে তার।

মধুময়ন্ত্রীর আঙ্গুলটা যতক্ষন পর্যন্ত না বাধা পায়, সে ঢুকিয়ে দিতে থাকে আরো ভেতরে, তারপর একটা সময় আর এগোয় না সেটি… কোথাও, একটা কিছুতে বাধা পায় আঙুলটা… বুঝতে অসুবিধা হয় না পৃথার বন্ধুর, কিসের বাধায় আটকাচ্ছে তার আঙ্গুলের ডগাটা… বিজ্ঞের মত মাথা নেড়ে বলে সে, ‘বুঝলি, তোর তো এখনো সিল ভাঙে নি, তাই আঙ্গুলটা পুরো যাচ্ছে না, অবস্য তাতে কিছু অসুবিধা নেই, বুঝলি… আরাম এটাতেও পাবি… সিলটা আঙলী করতে করতেই হয়তো এক সময় ভেঙে যাবে, কিন্তু জোর করে না করাই ভালো… খুব লাগবে তাতে… রক্তও বেরিয়ে আসবে।’

বন্ধুর বোঝানোতে কতটা বুঝল সেই জানে, সেও মাথা নাড়িয়ে বলে, ‘সেই ভালো, যত অবধি যাচ্ছে, ততটাই কর বরং…’ বলে নিজের যোনিটাকে নীচ থেকে একটু তুলে ধরে বন্ধুর হাতের মধ্যে।

পৃথার যোনির মধ্যে আঙুল চালাতে থাকে মধুময়ন্ত্রী… আগু পিছু করে… পৃথার মনে হয় শরীরের মধ্যেটা কেমন ভরে উঠেছে… একটা অদ্ভুত না বোঝাতে পারা সুখ ছেয়ে যাচ্ছে শরীরের ভেতরে, আরো ভেতরে। শরীরটাকে আরো শিথিল করে মেলে দেয় বন্ধুর হাতের মধ্যে।

‘কি রে… আমিই তোকে করে দেব নাকি? তুই নিজে কর… নয়তো শিখবি কি করে?’ হাতটাকে পৃথার যোনির মধ্যে থেকে বের করে নিয়ে বলে ওঠে মধুময়ন্ত্রী… পৃথা দেখে তার বন্ধুর আঙুলটা নিজের শরীরের রসে কেমন ভিজে চকচকে হয়ে রয়েছে ঘরের আলোয়…

‘আমি করবো?’ বোকার মত প্রশ্ন করে বন্ধুকে।

‘হ্যা… তুই তো করবি… আমি তো শুধু তোকে দেখিয়ে দিলাম কি করে আঙুলটাকে নাড়াবি ভেতরে ঢুকিয়ে… নে কর…’ বলে উঠে বসে মধুময়ন্ত্রী… তারপর সে যেটা করে, তার জন্য প্রস্তুত ছিল না পৃথা একেবারে… অবলীলায় বন্ধুর যোনির রসে মাখা আঙুলটাকে মুখের মধ্যে পুরে দিয়ে চুষে নেয় মধুময়ন্ত্রী… আঙুল ঘুরিয়ে ফিরিয়ে চাটে লেগে থাকা রসগুলো আঙুলের ফাঁকফোকর থেকে।

‘ইশশশশ… তুই কি রে, ওই ওখানকার রসটা চাটছিস?’ অবাক হয়ে নাক কুঁচকে বিস্ময় প্রকাশ করে পৃথা।

‘হ্যা… চাটছিই… তো? কি দারুন তোর রসের টেস্টটা… একদম মাক্ষন…’ হেসে উত্তর দেয় মধুময়ন্ত্রী… মুখের ভঙ্গিমাটা এমন করে যেন ভিষন স্বাদের কিছু একটা চাটছে সে। ‘তুইও চেটে দেখিস কখনো… বেশ লাগবে…’ বন্ধুকে বিজ্ঞের মত সাজেশন দেয় মধুময়ন্ত্রী।

‘হু… দেখবো’খন…’ ছোট করে বলে পৃথা… সে এই মুহুর্তে তার শরীরের রসের স্বাদ পেতে যত না আগ্রহী তার থেকে অনেক বেশি তার আগ্রহ দেহের মধ্যে শুরু হওয়া এক নতুন সুখের সন্ধান পাওয়ার আশায়। নিজের ডান হাতের আঙুলটাকে এগিয়ে এনে যোনির মুখে রাখে… একবার মুখ তুলে তাকায় বন্ধুর দিকে… মধুময়ন্ত্রী মাথা নেড়ে এগোবার ইশারা করে… পৃথা বন্ধুর দেখানো পদ্ধতি মেনে ধীরে ধীরে ঢুকিয়ে দেয় নিজের শরীরের মধ্যে… অসম্ভব একটা ভালো লাগা অনুভব করে দুই পায়ের ফাঁকে… কেমন ভরে যায় ওই ছোট্ট টাইট ছিদ্রটা… আঙুলের চামড়ায় স্পর্শ পায় হড়হড়ে রসের… আর কালবিলম্ব করে না পৃথা… ভেতর বাইরে করে চালাতে থাকে আঙুলটাকে, যোনির মধ্যে পুরে রেখে… আঙুলের ডগায় শরীরের ভেতরের নরম মাংসের ছোঁয়া পাচ্ছে বলে মনে হয় তার… গতি বাড়ায় হাত নাড়ানোর… যত বেশি জোরে তার হাত চলতে থাকে তত বেশি করে যেন সুখ ছড়িয়ে পড়তে থাকে শরীর জুড়ে… মাথা ঝুঁকিয়ে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে নিজের হাতের দিকে… কি ভাবে আঙুলটা শরীরের মধ্যে ঢুকছে বেরুচ্ছে সেই দিকে। আস্তে আস্তে নিঃশ্বাসের গভীরতা বেড়ে উঠতে থাকে তার… নাকের পাটা ফুলিয়ে নিঃশ্বাস নিতে হয় তাকে… এক নাগাড়ে এই ভাবে হাত নাড়ানোর ফলে ব্যথা হয়ে যাচ্ছে হাতটা… কব্জির কাছটা টনটন করে… তবুও বন্ধ করে না আঙুলের কাজ… দাঁতে দাঁত চিপে চোয়াল শক্ত করে হাত চালিয়ে যায়… পচপচ করে একটা ভেজা শব্দ বেরিয়ে ঘরটা ভরে ওঠে… আর সেই সাথে একটা অদ্ভুত গন্ধ… সোঁদা সোঁদা গন্ধ একটা… অদ্ভুত কিন্তু খারাপ লাগে না… বরঞ্চ সেই গন্ধটা নাকে যেতে কেমন মাথাটা ঝিমঝিম করতে থাকে… নেশা করার মত হাল্কা লাগে মাথার মধ্যেটা।

কখন মধুময়ন্ত্রী বিছানায় উঠে এসে তার পিছনে বসেছে সে জানে না… খেয়াল করে যখন সে দুপাশ থেকে বগলের নীচ দিয়ে হাত গলিয়ে তার কচি টাইট বুক দুখানা হাতের মুঠোয় ধরে আলতো করে টিপতে শুরু করে দিয়েছে… উফফফফফ… কোঁকিয়ে ওঠে সে আরামে… তার মনে হয় যেন পায়ের থাইদুখানি কেমন গরম হয়ে উঠেছে… শুধু থাই কেন? তলপেটের মধ্যেটাও যেন অস্বাভাবিক গরম ঠেকে তার। ততক্ষনে মধুময়ন্ত্রী খুঁজে পেয়ে গিয়েছে পৃথার ফ্রকের কাপড়ের আড়ালে প্রচন্ড উত্তেজনায় শক্ত হয়ে ওঠা বুকের বোঁটাটাকে… দুই আঙুলের চাপে ডলতে থাকে সে দুটিকে ধরে… আর পারে না পৃথা… মনে হয় যেন সুনামীর একটা বিশাল ঢেউ এসে আছড়ে পড়ল তার তলপেটের গভীরে… স্থান কাল পাত্র ভুলে চিৎকার করে ওঠে সে… ‘ওমাআআআআ আআআআআআ ইশশশশশশশ…’ মুঠোর মধ্যে খামচে ধরে নিজের যোনিটাকে সবলে… সারা শরীরটা কেমন থরথর করে কেঁপে কেঁপে ওঠে। প্রায় তিন থেকে চার সেকেন্ড জুড়ে চলে সেই অবিস্মরনীয় সুখের ঝাপটা… শরীরের মধ্যে তখন কি যে সুখ ঘুরে বেড়াচ্ছে তা বলে বোঝানোর ক্ষমতাও যেন হারিয়ে ফেলেছে সে… নিজের থাইদুটোকে পরস্পরের সাথে চেপে ধরে সেই সুখটাকে ধরে রাখার অদম্য প্রচেষ্টা করতে থাকে শুধু… কিন্তু একটু একটু করে স্তিমিত হয়ে আসতে থাকে সুখের বোধটা। তারপর একটা সময় হটাৎ করেই যেন উধাও হয়ে যায় শরীর থেকে… এই ভাবে সদ্য পাওয়া সুখটা হারিয়ে যেতে দেখে কোঁকিয়ে ওঠে যেন পৃথা, পাগলের মত নতুন উদ্যমে নিজের আঙুলটাকে নাড়াতে থাকে যোনির মধ্যে পুরে দিয়ে… আপ্রাণ চেষ্টা করে সুখটাকে ফিরিয়ে আনার… কিন্তু কোথায় কি, আর ফিরে আসে না সেই অপার্থিব সুখটা… বরং এত জোরে আঙুল নাড়ানোর ফলে টাইট যোনির মধ্যেটা ব্যথা হয়ে ওঠে। আর খানিক চেষ্টার পর যখন বোঝে যে আর ওটাকে এখনকার জন্য ফিরে পাবে না, তখন ক্লান্ত অবসন্ন পৃথা, এলিয়ে পড়ে পেছন দিকে বসা বন্ধুর বুকের ওপরেই।

সেই প্রথম তার শরীরি সুখ পাবার স্মৃতি… তারপর প্রায় অভ্যাসে পরিণত হয়ে গিয়েছিল মাস্টার্বেট করাটা… সময় অসময় সুযোগ পেলেই সেই অপার্থিব সুখের সন্ধানে লেগে পড়ত সে… শরীর নিঙড়ানো সুখের তরীতে ভেসে যেত হাতের কারুকার্যের সাহায্যে। পরের দিকে নিজেই আরো অনেক রকম স্টাইল এক্সপেরিমেন্ট করে করে বের করেছিল মাস্টার্বেট করে সুখ পাওয়ার জন্য।

এর বেশ কিছুদিনের পর যখন সে প্রথম ইন্টারকোর্সের স্বাদ পেলো, সেটা তার সুখের আধারে একটা নতুন মাত্রা যোগ করল যেন।

লোকে ওর এই স্বভাবের কথাটা জানতে পারলে হয়তো বলবে, তাহলে অলোকবাবুর দেখা নিয়ে অত ন্যাকামি কেন? না… সেটা ন্যাকামি নয়… ও কি জানে না যে ওর এই শরীরটা দেখে কত লোক রাস্তা ঘাটে চোখ দিয়ে চাটে? চাটতেই পারে… এমন একটা হিলহিলে ফিগার, চোখ দিয়ে চাটার মতই তো… কিন্তু তাও… কেন জানে না পৃথা… ওই অলোকবাবু লোকটাকে দেখলেই কেমন গা জ্বলে যায় তার… ওনার তাকানোটার মধ্যেই কেমন যেন একটা ঘিনঘিনে ব্যাপার রয়েছে… ঠিক বলে বোঝানো যায় না… কেমন যেন মনে হয় অলোকবাবু, তাকানোর মধ্যে দিয়েই ওর সারা শরীরের ওপরে ওনার মুখের লালা মাখিয়ে দিচ্ছে। সামনাসামনি দেখা হলে কখনও ওনাকে চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে দেখেনি সে, কথা বলার সময় সর্বদাই যেন তার বুকের দিকে চোখ রেখে কথা বলেন উনি।

ভাবতে ভাবতেই হটাৎ কেমন পৃথার মেয়েলি সত্তা তীক্ষ্ণ হয়ে ওঠে… কেন সে জানেনা, তার মনে হয় ঘরের মধ্যে সে ছাড়াও আর কেউ উপস্থিত রয়েছে… পেছন থেকে তার দিকেই তাকিয়ে রয়েছে… দৃষ্টি দিয়ে উপভোগ করছে তার সুঠাম শরীরটাকে। চকিতে ঘুরে দাঁড়ায়… কিন্তু কই, কাউকে দেখতে পায় না… ফাঁকা… কেউ কোথাও তো নেই! পরক্ষনেই সে নিজের বোকামীতে হেসে ফেলে ফিক করে… সত্যিই তো… থাকবেই বা কে? ঢোকার সময় দরজাটা তো নিজের হাতেই ঠেলে বন্ধ করে দিয়ে এসেছে। তাও… মাথা ঝাঁকিয়ে ঝেড়ে ফেলে মনের মধ্যে উঠে আসা অস্বস্থিটাকে… লঘু পায়ে গিয়ে এগিয়ে গিয়ে সুইচ টিপে আলো জ্বেলে নিয়ে ঢোকে বাথরুমে… শাওয়ারের তলায় দাঁড়িয়ে কল খুলে দেয়… ছাদের ট্যাঙ্কের জমা ঠান্ডা জল ঝরে পড়ে তার লোভনীয় তারুণ্যে ভরা সুঠাম শরীরটার ওপরে, ঝরনা ধারায়… খোলাই থাকে বাথরুমের দরজাটা হাট করে… কেই বা দেখছে তাকে!

সত্যিই কি কেউ দেখছে না?

৩।।

সামনের সেন্টার টেবিলটার ওপরে পা তুলে সোফায় শরীর এলিয়ে কাগজের মধ্যে ডুবে পৃথা… আজ সেকেন্ড সাটার্ডে, অফিস ছুটি… তাই একটু বেলা করেই ঘুম থেকে উঠেছে… এখনও ঘুমের মেজাজটা কাটেনি পুরোপুরি… একবার চা খেলেও হাই উঠছে বার বার… হাতের কাগজটাকে পাশে রেখে দিয়ে সামনে ঝুঁকে সেন্টার টেবিলের ওপর থেকে গোল্ড ফ্লেক লাইটের প্যাকেটটা টেনে নেয়, ভেতর থেকে একটা সিগারেট বের করে ঠোঁটের কোনে ঝুলিয়ে প্যাকেটটা ছুঁড়ে রেখে দেয় টেবিলের ওপরে ফিরিয়ে, লাইটারটা তুলে সিগারেটটা ধরিয়ে একটা লম্বা সুখ টান দিয়ে ধোয়া ছাড়ে মুখটাকে ওপর দিকে তুলে… ঘরের মধ্যেটায় হাল্কা কুয়াশার সৃষ্টি হয় সিগারেটের ধোঁয়ায়… আরো একটা টান দেয় সিগারেটএ… ফের ধোয়া ছেড়ে দুই আঙুলের ফাঁকে সিগারেটটাকে চেপে ধরে মোবাইলটাকে তুলে নেয়… ‘ইশশশশ… কাল ফোনটাকে চার্জে বসাতে ভুলে গিয়েছি… বন্ধই হয়ে গেছে…’ টেবিল থেকে পা নামিয়ে উঠে দাঁড়ায়… দেওয়ালের ধারে রাখা শো’কেসটার সামনে গিয়ে চার্জারটা বের করে আনে, প্লাগে গুঁজে দিয়ে চার্জে বসায় মোবাইলটাকে… ‘কেমন যেন পটি পটি পাচ্ছে মনে হচ্ছে… যাই করেই আসি…’ ভাবে পৃথা… বাথরুমে ঢুকে কোমডের ওপরে পরনের পাজামাটাকে টেনে হাঁটু অবধি নামিয়ে বসে… কলকল ধারায় সোনালী হিসি ঝরে পড়ে কোমডের জমা জলে.. বসে বসে সিগারেট টানতে থাকে পটির বেগ আসার অপেক্ষায়।

এই ফ্ল্যাটে আসা ইস্তক এক দিনের জন্যও সে কোন রান্না বান্না করে নি, বাইরের থেকেই আনিয়ে চালিয়ে নিয়েছে। অবস্য রান্না করেনি ভালো লাগেনি বলে নয়, আসলে গ্যাস কানেকশনটাই তো পায় নি গতকাল অবধি। কালকে সুশান্তই একটা সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করে দিয়েছে কাজ চালাবার মত করে। সত্যিই, সুশান্ত অনেক হেল্প করছে ওকে। কতটুকুই বা চেনে ওকে? শুধু মাত্র নিছক অফিস কলিগ বই তো আর কিছুই নয়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই নিজের থেকেই এগিয়ে এসে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বারে বারে। ও না থাকলে যে কি করত পৃথা এই অচেনা শহরে এসে কে জানে। কিছুই তো প্রায় চিনতো না। মোটামুটি প্রথম দিন থেকেই বেশ ভালো বন্ধুত্বের সম্পর্ক হয়ে গিয়েছে ওদের মধ্যে। প্রথম প্রথম একটা সংকোচ ছিল বটে দুজনার মধ্যে, কিন্তু সেটাও কেটে যেতে বেশিদিন লাগে নি। আপনি থেকে তুমি তে নেমে এসেছে খুব সহজেই, কখন তা বোধহয় নিজেরাও খেয়াল করে নি।

‘গ্যাস যখন পেয়েই গেছি, দেখি, আজ একবার কাছাকাছি কোথাও গিয়ে কিছু জিনিস পত্তর কিনে নিয়ে আসব’খন… এই দুই’দিনের ছুটিতে যতটা সম্ভব গুছিয়ে নেবার চেষ্টা করতে হবে…’ পটি করতে করতে ভাবে পৃথা। ‘মা ক’দিন ধরেই পেছনে পড়ে রয়েছে, নিজে রান্না কর, নিজে রান্না কর, বলে, বাইরের খাবার খেয়ে নাকি শরীরের বারোটা বাজাচ্ছি আমি… আরে বাবা, সেধে কি কেউ সব সময় বাইরের খাবার খায়?’ চলতে থাকে পৃথার ভাবনা। সেই সাথে মুখ থেকে নির্গত সিগারেটের ধোয়ার কুন্ডুলী সারা বাথরুমের মধ্যেটায় একটা হাল্কা কুয়াশার জাল বিস্তার করে চলে… খানিকটা ধোঁয়া উঠে ঘুলঘুলি দিয়ে বেরিয়ে যায়, আর খানিকটা এগিয়ে যায় খোলা বাথরুমের দরজার দিকে।

‘কি কি কেনা উচিত এখন? হুমমম… চিনি, চা পাতা, নুন, চাল, একটু ডাল, কিছু সবজি, আর আর…’ মাথা নিচু করে চিন্তা করে পৃথা, মনের মধ্যে একটা লিস্ট তৈরী করার চেষ্টা করে।

হটাৎ যেন গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে তার… হাতের লোমগুলো খাড়া হয়ে ওঠে… চোখের কোন দিয়ে তার যেন মনে হয় বাথরুমের দরজার দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া ধোঁয়াগুলো একটা কারুর শরীরে ধাক্কা খেয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছে… ধোঁয়ার কুন্ডুলি একটা শরীরকে ঘিরে ধরে কেমন যেন একটা অস্পষ্ট অবয়ব তৈরী করে তুলেছে… বুকের মধ্যেটায় কেমন ধকধক করে ওঠে… গলাটা শুকিয়ে ওঠে মুহুর্তে… পটি হওয়া যেন বন্ধ হয়ে যায় নিমেশে। মুখ তুলে দেখতেও ভিষন ভয় করতে লাগে তার। বুকের মধ্যেটায় হৃদপিন্ডটা যেন সবেগে ধকধক করে ধাক্কা মারতে শুরু করেছে… গলার মধ্যেটা শুকিয়ে ওঠে… সারা শরীরে কাঁটা দেয়… হাতের সুক্ষ্ম লোমগুলো জেগে দাঁড়িয়ে পড়ে… তবে কি… তবে কি…

না, না, তাই বা কি করে সম্ভব? সে ছাড়া আর কেউ এই ফ্ল্যাটে আছে… সেটাই বা কি করে হবে? তবে কি সুশান্তর কথাই ঠিক… কেউ বা কিছু আছে এই ফ্ল্যাটে? সেই জন্যই এতদিন ফাঁকা পড়েছিল ফ্ল্যাটটা? বেশিই সাহস দেখিয়ে ফেলেছে সে? সত্যিই যদি কিছু বা কেউ ওই অশরীরি টাইপের থাকে? না, না, এই সাতসকালে ভুত আসবেই বা কোথা থেকে? যাঃ… ভুত বলে আবার কিছু হয় নাকি? ও…ও সব তো মনের ভুল… চোখের ভ্রম… সত্যিই ভুত বলে কিসসু নেই… শুধু শুধুই হয়তো একটা ভয় ভয় লাগছে… ‘ছি ছি পৃথা, দিনের বেলায় এই ভাবে ভয় পাচ্ছিস?’ নিজেকেই সাহস যোগাবার চেষ্টা করে মনে মনে, মনের মধ্যে সাহস সঞ্চয় করে শেষমেষ মুখ তুলে তাকায় খোলা দরজাটার দিকে… ফাঁকা… কিচ্ছু নেই… কারুর উপস্থিতির লেশমাত্রও নেই সেখানে। একটা বড় হাঁফ ছাড়ে সে… তারপর নিজেকেই মনে মনে গাল পাড়ে নিজের বোকামীর কথা ভেবে। সত্যিই তো, তার মত অমন একটা ডাকাবুকো সাহসী মেয়ে, বেকার বেকার ভয় পেয়ে গেল? তাও কি না এই সাত সকাল বেলায়? ছ্যাঃ। লোকে শুনলে বলবে কি তাকে? কিন্তু… কিন্তু তাও, তাও সে একেবারে নিঃসন্দেহ যেন হতে পারে না। এটা নিয়ে দু’বার তার এই ধরণের অনুভূতি হল। সত্যিই এ সবই তার মনের ভুল? সে যেন স্পষ্ট দেখল ধোঁয়াগুলো দরজার সামনে গিয়ে যেন কারুর শরীর ঘিরে জড়িয়ে ধরেছিল… তৈরী করেছিল একটা ঝাপসা দেহের কাঠামো… নাঃ, নিশ্চয়ই ভুল দেখেছে সে… হতেই পারে হয়তো সেই মুহুর্তে ধোঁয়াগুলো বাতাসের অভাবে ওই জায়গাটায় ঠিক সেই মুহুর্ততেই থমকে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল, আর তাই তার মনে হয়েছিল সেটা কারুর শরীরের সাথে জড়িয়ে রয়েছে… যেমনটা দেখতে লাগে আকাশের মেঘগুলোকে, কেমন মাঝে মধ্যে এক একটা অবয়েব তৈরী করে মেঘের দল… সেই রকমই হবে নিশ্চয়। নিজের মনকে বোঝানোর চেষ্টা করে প্রবল ভাবে ঠিকই, কিন্তু মনের কোন এক কোনে তখনও যেন একটা সংশয় লুকিয়ে থাকে তার… সত্যিই চোখের ভুল? নাকি…?

যে ভাবে পটিটা চমকে গিয়েছে, আর নতুন করে হবার সম্ভবনা নেই… তাই উঠে কোমড শাওয়ারটা হাতে নিয়ে পরিষ্কার হয়ে নেয়… আরো একবার চোখ তুলে তাকায় দরজাটার দিকে, তারপর কেন জানে সে, এগিয়ে গিয়ে বাথরুমের দরজাটা ভিজিয়েই দেয় হাত দিয়ে… ফিরে এসে শরীর থেকে রাতের পোষাকগুলো খুলে কোনে রাখা বালতিটার মধ্যে রেখে শাওয়ারটা চালিয়ে জলের ধারার নীচে দাঁড়ায়। মাথার চুলটাকে ভিজিয়ে হাত বাড়িয়ে শাওয়ারের কলটা বন্ধ করে তাক থেকে শ্যাম্পুর বোতলটা পেড়ে নেয় পৃথা।

৪।।

স্নান সেরে বাথরুম থেকে বেরোয় পৃথা, সকালবেলার ঠান্ডা জলে শরীরটা বেশ তরতাজা হয়ে ওঠে… খানিক আগের মনের মধ্যের অনুভূতিটা জলের সাথেই ধুয়ে নেমে গিয়েছে মাথার মধ্যে থেকে… চুলটাকে টাওয়েল দিয়ে ভালো করে জড়িয়ে রাখে… দেহের বাকি অংশ থাকে সম্পূর্ণ নিরাভরণ… প্রয়োজনই বা কি কিছু পরার… কেউ ঘরে থাকলে তবেই না লজ্জা…

এসে মোবাইলটা তুলে নিয়ে দেখে কতটা চার্জ হয়েছে… বোতাম টিপে চালু করে মোবাইলটাকে… তারপর হাত থেকে রাখতে যাবে, বেজে ওঠে মোবাইল… স্ক্রিনে সুশান্তর নাম… চার্জারের কর্ডটাকে মোবাইল থেকে টেনে খুলে দিয়ে কানে লাগায়… ‘হু… বলো…’

‘গুড মর্নিং…’ ওপারে সুশান্তর গলা… ‘কি? উঠে পড়েছ?’

‘ও হ্যা… গুড মর্নিং… হু, উঠে পড়েছি…’ উত্তর দেয় পৃথা।

‘ও… তা কি করছ, এখন?’ ফের প্রশ্ন করে সুশান্ত।

‘এই তো… সবে স্নান করে বেরোলাম…’ বলতে বলতে মোবাইলটাকে কান আর কাঁধের মধ্যে চেপে ধরে গিয়ে ঢোকে বেডরুমে। চোখ পড়ে সামনে রাখা ছবিটার ওপরে… হাত তুলে নিঃশব্দ ইশারায় ‘হাই’ বলে ওঠে আঙুল নাড়ায় ছবির লোকটির দিকে তাকিয়ে… কেমন জানি তার মনে হয় লোকটা তার দিকে তাকিয়েই… পৃথার নগ্ন নিটোল শরীরটা দেখছে আপাদমস্তক… খারাপ লাগার বদলে বেশ ভালো লাগে ব্যাপারটা ভাবতেই… ইচ্ছা করেই একপাক ঘুরে যায় ছবিটার সামনে গিয়ে… যেন তার পুরো শরীরটাকে দিনের পরিষ্কার আলোয় ভাল করে একবার দেখিয়ে নেয় সে ছবির মধ্যে তাকিয়ে থাকা হ্যান্ডসাম লোকটিকে।

এর মধ্যেই কিছু বলে বোধহয় সুশান্ত… ‘অ্যা? কি বলছো?’ জিজ্ঞাসা করে পৃথা ফিরিয়ে… চোখ থাকে ছবির মধ্যের লোকটির ওপরে… যেন দুজনের চোখ একে অপরের সাথে আটকে থাকে।

‘না, বলছি কাল রাতে ঘুম হয়েছিল? কোন অসুবিধা হয় নি তো?’ আনমনে শোনে সুশান্তর কথা।

‘উ… ও হ্যা… না, না, কোন অসুবিধা হয় নি…খুব ভালো ঘুমিয়েছিলাম রাতে… এই তো, এতো বেলায় উঠলাম… তুমি চিন্তা করো না… আমি ঠিক আছি…’ বলতে বলতে সামনের দিকে ঝুঁকে অন্য খালি হাতে তুলে নেয় ছবিটাকে টেবিলের ওপর থেকে… মুখের সামনে নিয়ে তুলে ধরে সেটিকে… ভালো করে তাকায় লোকটির দিকে… মনে মনে ভাবে… ‘আহহহ… কি দারুন দেখতে… কি হ্যান্ডসাম… ইশশশশ… এখন যদি পেতাম না তোমায়… ওই বিছানাটায় ফেলে মনের সুখে করাতাম… কি করাতাম, নিশ্চয়ই বুঝেছ?’

বাকিটা মনে মনে বললেও শেষের কথাটা, মানে, ‘বুঝেছ’টা, সম্ভবত একটু জোরেই বলে ফেলেছিল হয়তো, কানে আসে সুশান্তর প্রশ্ন, ‘কি বোঝার কথা বলছো?’

নিজের ভুলটা বুঝে হেসে ফেলে পৃথা মনে মনে, মুখে বলে, ‘ও… না, না, ও কিছু না…’। ছবির মধ্যে থাকা মেয়েটির দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলে ওঠে, ‘সরি… রাগ কোরো না প্লিজ… কি করবো বলো… তোমার বরটা যে বড্ডো হ্যান্ডু… মনে হচ্ছে প্রেমে পড়ে গেছি… হি হি…’।

‘তা এখন কি করবে ভাবছ? কিছু প্ল্যান করেছ?’ কানে আসে সুশান্তর জিজ্ঞাস্য।

হাতে ধরা ছবিটাকে টেবিলের ওপরে ফিরিয়ে রাখতে রাখতে বলে পৃথা… ‘উমমম… ভাবিনি কিছু… দেখি… কি করি… হয়তো একটু কেনা কাটা করতে বেরুবো…’

‘ও… তা আমি কি যাব? আমি গেলে যদি সুবিধা হয় তোমার কেনা কাটা করতে, এখানে তো খুব একটা কিছু এখনও চিনে উঠতে পারো নি…’ সাজেশন রাখে সুশান্ত।

ছবির সামনে থেকে ঘুরে ড্রেসিং টেবিলের কাছে এগিয়ে যায় পৃথা… ‘না, না… তোমাকে আর এই ছুটির দিনে কষ্ট করে আসতে হবে না… তুমি তোমার মত করে এঞ্জয় কর… তুমি এমনিতেই যা করেছ আমার জন্য সেটাই বা কে করে… থ্যাঙ্কস সুশান্ত…’ বলতে বলতে কান বদল করে মোবাইলটাকে নিয়ে…

‘আরে থ্যাঙ্কস এর কি আছে বলো তো? আমি আর কি করেছি… এতো যে কোন মানুষই এইটুকু করতো… তোমার মত সুন্দরীর জন্য…’ বিগলিত গলায় উত্তর দেয় সুশান্ত।

শেষের কথা ক’টি কানে লাগে পৃথার… বরাবরই একটু সোজাসুজি কথা বলতে বা শুনতে পছন্দ করে সে… ওই ধরনের ত্যালানো কথায় এ্যালার্জি আছে তার… ফোঁস করে ওঠে মোবাইলের মধ্যে… ‘কেন? আমি সুন্দরী না হলে হেল্প করতে না বুঝি? আমি সুন্দরী বলেই কি…’

এ ভাবে পৃথা ফোঁস করে উঠবে বোধহয় ভাবতে পারে নি সুশান্ত… তাড়াতাড়ি ড্যামেজ কন্ট্রোল করার চেষ্টায় বলে ওঠে, ‘এ বাবা… না, না… আমি সেটা ভেবে বলি নি… মানে…’

‘থাক… বুঝেছি… ঠিক আছে… আমি রাখছি… এবার ড্রেস করবো… ওকে?’ একটু যেন আবেগহীন গলায়ই বলে পৃথা।

‘আ…আছা… ঠিক আছে… আমি পরে না হয় ফোন করবো’খন…’ সুশান্তর স্বরে বিষন্নতা সুর।

পৃথা আর কথা না বাড়িয়ে ফোনটা কেটে দিয়ে ছুঁড়ে রেখে দেয় বিছানার ওপরে… রাখতে গিয়ে ফের ছবিটার ওপরে নজর চলে যায় তার… ধীর পায়ে এগিয়ে যায় সেটির দিকে… হাতে তুলে নেয় ছবিটাকে… তারপর অন্য হাত দিয়ে মাথায় জড়ানো টাওয়েলটাকে খুলে ছুঁড়ে রেখে দেয় চেয়ারের ব্যাকরেস্টটার ওপরে… ছবিটাকে দুহাতে ধরে বিছানায় চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ে ওই নগ্ন শরীরেই… হাত দুটোকে সোজা করে তুলে ধরে রাখে ছবিটাকে নিজের থেকে তফাতে… এক মনে তাকিয়ে থাকে লোকটার চোখের পানে… চোখ ফিরিয়ে তাকায় মেয়েটির দিকে একবার… তারপর আবার লোকটির দিকে… একটু একটু করে নামিয়ে নিয়ে আসে নিজের কাছে… আরো কাছে… একেবারে মুখের কাছটায়… আলতো করে ঠোঁটটাকে সরু করে চুমু আঁকে লোকটির ঠোঁটের ওপরে… ছবিটার গায়ে… তারপর ফের তুলে ধরে নিজের থেকে তফাতে… লোকটির ঠোঁটের ওপরে নিজের ঠোঁটের লেগে থাকা হাল্কা জোলো ইম্প্রেশনটা দেখে মন দিয়ে… তারপর আবার ছবিটাকে নামিয়ে নিয়ে আসে… এনে নিজের একটা বুকের ওপরে চেপে ধরে… আস্তে আস্তে নিজের চোখ বন্ধ করে নেয় সে… মনে মনে ভাবার চেষ্টা করে ছবি রাখা বুকটার বোঁটাটার ওপরে লোকটার ভেজা মুখের স্পর্শ… আহহহহ… সারা গা’টা সিরসির করে ওঠে তার… খাটের কিনারা থেকে ঝুলতে থাকা পা’দুটোকে আরো ফাঁক করে মেলে ধরে সে… নিতম্বটাকে নীচ থেকে তোলা দিয়ে তুলে ধরে একবার যোনিটাকে ওপর দিকে… পরক্ষনেই উপড় হয়ে যায় বিছানার ওপরে… শরীর ঘসে আরো খানিকটা উঠে যায় বিছানার ভেতর পানে… ততক্ষন পর্যন্ত… যতক্ষনে না নিজের যোনিটা চেপে বসছে বিছানার গদির ওপরে… তারপর কোমর থেকে দেহের ওপরের দিকটাকে তুলে ছবিটাকে সামনে রাখে… এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে লোকটার দিকে… আর সেই সাথে কোমরটাকে বেঁকিয়ে চুড়িয়ে ঘসতে থাকে বিছানার ওপরে… ঘসতে থাকে বিছানার ওপরে চেপে রাখা যোনিটাকে… সেই সাথে যোনির চেরার ঠিক মুখটায় উত্তেজনায় বেড়ে ওঠা ক্লিটটাকে গদির সাথে… আহহহহ… ইশশশশশ… উমমমম… চোখ বন্ধ করে নেয় পৃথা… ভেসে যায় নীবিড় যৌন মিলনের কল্পনায়… কল্পনা করে ছবির লোকটিকে নিজের নগ্ন শরীরেটার ঠিক নীচে… ভাবার চেষ্টা করে লোকটির শক্ত লিঙ্গটা তার শরীরের মধ্যে একটু একটু করে ঢুকে যাচ্ছে… ভাবতে ভাবতে ভিজে ওঠে পৃথা… দেহের মধ্যে থেকে চুঁইয়ে বেরিয়ে আসতে থাকে হড়হড়ে রস… একটা ভেজা দাগ সৃষ্টি হয়ে বিছানার ওপরে… ছবিটাকে হাতের মধ্যে শক্ত করে ধরে প্রবল বেগে ঘসে যায় যোনিটাকে বিছানার গদির ওপরে কোমর নাড়িয়ে… আহহহহহ… উমমমম… আ…আর… এক…টু… ইশশশশ… বুঝতে পারে নাগাড়ে ঘসার ফলে যোনির ওপরটা গরম হয়ে উঠেছে… শুধু ওখানটাই বা কেন… ভেতরেও ভিষন ভাবে ভাঙাগড়া শুরু হয়ে গিয়েছে… উমফফফফ… ঠোঁটে ঠোঁট চেপে ধরে রাখে… চোখ বন্ধ করা অবস্থাতেই ছবিটাকে গুঁজে দেয় নিজের শরীরের নীচে, বুকের কাছটায়… নরম বুকগুলোর নীচে চাপা পড়ে যায় ছবিটা… ছবির কাঁচের ঠান্ডা স্পর্শ লাগে শক্ত হয়ে ওঠা বোঁটায়… ঝট করে ঘুরে চিৎ হয়ে যায় সে… বুকের সাথে চেপে ধরে রাখে ছবিটাকে বাঁ হাত দিয়ে… ডান হাতটাকে বাড়িয়ে দেয় দুই পায়ের ফাঁকে… পা’দুখানা শূণ্যে তুলে আরো ছড়িয়ে দেয় দুই পাশে… আর হাতের দুটো আঙুলকে সোজা গেঁথে দেয় শরীরের গভীরে… প্রবল বেগে ভেতর বাইরে করে রগড়াতে থাকে যোনিটাকে আঙ্গুলের সাহায্যে… আঙ্গুলের চাপে ছিটকে ছিটকে বেরিয়ে আসতে থাকে আঠালো ফেনার মত সাদা রস… মাখামাখি হয়ে যায় হাতের আঙুলগুলোয়… ভরে ওঠে হাতের তেলো… উমমমম… আ… আ… আসছেএএএএএএ… ওওওওওও মাআআআআআআ আহহহহহহ… উমমমমম… গায়ের জোরে চেপে ধরে ছবিটাকে নিজের বুকের ওপরে… কোমরটাকে বেঁকিয়ে তুলে ধরে ওপর দিক করে আঙুলের সাথে… কেঁপে কেঁপে ওঠে তলপেটটা… তারপরই ধপাস করে ছেড়ে দেয় শরীরটাকে… নেতিয়ে পড়ে বিছানায় প্রবল অর্গ্যাজমের ক্লান্তিতে… আহহহহহহহহহ… শুয়ে শুয়ে হাঁফাতে থাকে মুখ খুলে বড় বড় নিঃশ্বাস নিতে নিতে।

একটু দম পেলে বুকের ওপর থেকে তুলে ধরে ছবিটাকে সামনের দিকে… তাকায় লোকটির দিকে… ঠোঁটের কোনে লেগে থাকে এক রাশ পরিতৃপ্তির হাসি… ছোট্ট করে একটা চোখ মারে লোকটির দিকে তাকিয়ে… পায়ের ফাঁকে রাখা হাতটাকে তুলে এনে রসে মাখা আঙুলদুটোকে সোজা করে দেখায় লোকটির দিকে… অস্ফুট স্বরে বলে… ‘এই যে… দেখো… দেখেছো… তোমার তিতিরের কি অবস্থা করেছ? হুমমম? রসে ভেসে গেছে তোমার তিতির…’ বলে রসে মাখা আঙুলদুখানি নিজের মুখের পুরে দেয় সে… চোখ দুটো বন্ধ করে নেয়… মনে মনে কল্পনা করে যেন তার শরীরের রসে মাখা লোকটির লিঙ্গটা মুখের মধ্যে ঢুকে রয়েছে… পরম আগ্রহে চুষতে থাকে নিজের আঙুলদুটোকে, এক সাথে… ঘুরিয়ে ফিরিয়ে… যতক্ষন পর্যন্ত জিভে সেই রসের স্বাদ পেতে পারে সে।

বেশ কিছুক্ষন আঙ্গুলদুটোকে চোষার পর ফের চোখ খুলে তাকায় ছবির লোকটির দিকে… নাকটাকে কুঁচকে ফিক করে হেসে ওঠে নিজের মনেই… ‘উমমমম…’ জিভ বের করে ভেঙায় লোকটিকে, তারপর আস্তে আস্তে উঠে বসে হাত বাড়িয়ে রেখে দেয় ছবিটাকে টেবিলের ওপরে… আঙ্গুলে লেগে থাকে নিজের মুখের লালাগুলো মুছে নেয় বিছানার চাঁদরে পৃথা।

৫।।

অফ্‌ হোয়াট প্ল্যাজোটার ওপরে শুধু মাত্র হাল্কা হলদে রংএর কুর্তিটা পড়ে নেয় পৃথা… ফর্সা গায়ের রঙের সাথে হলুদ রঙটা খুব ভালো যায়… আর তাছাড়া হাল্কা রঙ দিনের বেলার পক্ষে একেবারে ইউনিক… খানিকটা ইচ্ছা করেই জামার ভেতরে ব্রা পড়ে না… এটা অবস্য খুবই সাধারণ ব্যাপার তার কাছে… শিলিগুড়ি থাকতেও, ক্যাজুয়াল ভাবে যখন ও বেরোয়, সচারাচর ব্রা পড়াটা অ্যাভয়েড করে… আসলে যা সাইজ, তাতে ব্রা না পরলে খুব একটা অসুবিধা হয় না… তেমন কিছু থলথল করে না বুকদুটো… তাই গরমের সময় ব্রা না পড়ার ফলে বেশ ফুরফুরে থাকা যায়। অফিসে গেলে ব্যাপারটা অন্য, তখন তো পড়তেই হয়, বিশেষত ফর্মাল ড্রেসের নীচে ব্রা ছাড়া পড়লে আর দেখতে হবে না, বোঁটাগুলো উঁচিয়ে থাকবে জামার ওপর দিয়ে… তখন কাস্টমারের বা কলিগদের যা মুখের অবস্থা হবে, ভাবতেই খিলখিলিয়ে ওঠে পৃথা নিজের মনে।

বড় হাত ব্যাগ একটা বেছে নেয় সে, তার মধ্যে ছোট একটা বোতলে জল, পার্স, ছাতা, আর মেয়েলি কিছু প্রসাধনি টুকিটাকি জিনিস ভরে নিয়ে চেন টানতে যায়… পরক্ষনেই মনে পড়ে একটা বড় দেখে ক্যারিব্যাগ নিয়ে নেওয়া উচিত… কি কিনবে না কিনবে, তখন যদি না পায়! সাথে ক্যারিব্যাগ না থাকলে জিনিসগুলো নিয়ে আসতে অসুবিধা হবে… বেকার পয়সা দিয়ে ক্যারিব্যাগ কিনতে বড্ডো গায়ে লাগে… ভেবে খুজে পেতে একটা বড় দেখে ক্যারিব্যাগ ঢুকিয়ে নিয়ে চেন টানে ব্যাগের।

চুলটাকে গোছ করে পেছনে একটা ক্লিপ আটকিয়ে নেয়… ড্রেসিং টেবিলের সামনে এসে পাউডার পাফটা নিয়ে একটু মুখের ওপরে বুলিয়ে পায়ে একটা স্যান্ডেল গলিয়ে বেরিয়ে আসে ফ্ল্যাট থেকে… দরজাটা টেনে দিয়ে লক করে দেয়…

‘কোথাও বেরুচ্ছ নাকি?’ কানে আসে অলোকবাবুর গলা… সাথে সাথে না চাইতেও কেমন চোয়ালটা শক্ত হয়ে যায় পৃথার… অনেক কষ্টে সামলায় নিজেকে…

‘হ্যা, মানে ওই আর কি…’ অলোকবাবুর দিকে ঘুরে কাষ্ঠ হাসি হেসে উত্তর দেয় সে… হাতে ধরা চাবির গোছাটা ব্যাগের সাইড চেনটা খুলে ঢুকিয়ে রাখে।

‘ও… তা বেশ বেশ… জামাটা পড়ে খুব ভালো লাগছে তোমাকে… খুব সুন্দর ফিটিংস হয়েছে তো…’ বলতে বলতে আরো পা দু’য়েক এগিয়ে আসেন ভদ্রলোক পৃথার দিকে।

হটাৎ করে চকচক করে ওঠে পৃথার চোখদুটো… একটু খেলা করার ইচ্ছা করে তার… হাতটাকে গলার কাছটার কাছে এনে জামাটাকে একটু টান দেয় সামনের দিকে… তারপর একটা আঙুলকে নিয়ে নিজের বুকের চারপাশে ঘুরিয়ে বোলাতে বোলাতে হাসি মুখে প্রশ্ন করে সে… ‘বলছেন? ভালো লাগছে আমাকে… খুব সুন্দর ফিট করেছে না গায়ে?’

অলোকবাবু উত্তর দেবেন কি তার চোখদুটো তখন আটকিয়ে গেছে পৃথার ঘুরে বেড়ানো আঙুলের সাথে… মনে হচ্ছে যেন ঠিকরে বেরিয়ে আসবে চোখ দুটো তার চোখের মনিকোটার মধ্যে থেকে… পৃথা আঙুলটাকে রাখে একেবারে একটা বোঁটার ওপরে… নেলপালিশ পড়া নখটা দিয়ে আঁচড় কাটে… সাথে সাথে শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে যায় বোঁটাটা… জামার ওপর দিয়ে ফুটে ওঠে ওটার অস্তিত্ব… একই জিনিস করে অপর বোঁটার ওপরেও সে… সেটিকেও দাঁড় করায় ওই ভাবে… তারপর কুর্তির তলাটাকে ধরে নীচের দিকে টান দেয়… তাতে আরো বেশি করে ফুটে ওঠে শক্ত হয়ে ওঠা বুকের বোঁটাদুটো, জামার ওপর দিয়ে, জামার নীচে যে ব্রা পড়ে নেই, সেটা বোঝা যায় স্পষ্ট। তার মনে হল যেন অলোকবাবুর মুখ দিয়ে এক্ষুনি লালা ঝড়ে পড়বে… এমন ভাবে মুখটা হাঁ করে তার বুকের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন… নিজের বুকটাকে একটু সামনের দিকে তুলে ধরে সে বলে ওঠে… ‘তাহলে আমি যাই? আজ এই পর্যন্তই থাক তাহলে? কি বলেন?’

‘উ… হু… আ… আচ্ছা… ও হ্যা হ্যা… যাও যাও… সাবধানে যেও… কেমন…’ আনমনে বলে ওঠেন অলোকবাবু… চোখ দুটো যেন চেষ্টা করেও সরাতে পারেন না পৃথার বুকের ওপর থেকে।

পৃথা মুচকি হেসে উঠে সিড়ি দিয়ে নেমে যায় নীচের দিকে… বুঝতে অসুবিধা হয় না যে তার পুরো শরীরটাকে পেছন থেকে অলোকবাবু গিলে চলেছেন চোখ দিয়ে… এবং ততক্ষন পর্যন্তই গিলবেন যতক্ষন পর্যন্ত না তার শরীরটা ল্যান্ডিংএর আড়ালে ঘুরে হারিয়ে যাচ্ছে দৃষ্টি থেকে।

বিল্ডিং থেকে বেরিয়ে রাস্তা পেরিয়ে উল্টো দিকে দাঁড়ায় গিয়ে… অপেক্ষা করে অটো কিম্বা বাস পাবার। হটাৎ নজরে পড়ে খানিকটা দূরেই একটা পাগল দাঁড়িয়ে রয়েছে… সারা মাথা নোংরা ঝাঁকড়া চুলে ঢাকা… গায়ে একটা ভিষন নোংরা শতছিদ্র জামা… আর সেই সাথে সেই মতই নোংরা প্যান্ট… কতদিন একভাবে পরে রয়েছে কে জানে… এখন দেখে বোঝার অবস্থায় নেই অতীতে কি রং ছিল জামা বা প্যান্টটার… কালো হয়ে রয়েছে দুটোই। কারুর দিকে কোন খেয়াল নেই পাগলটার… প্যান্টের কষিটাকে একটা হাতে ধরে আপন মনে বিড়বিড় করে কি যেন বলে যাচ্ছে… মাঝে মাঝে আঙুল তুলে কাউকে খুব শাসাচ্ছে… পাশ দিয়ে যে যাচ্ছে, ওকে দেখে একটু সরে গিয়ে পাগলটাকে পেরিয়ে চলে যাচ্ছে নিজের অভিস্থলের দিকে… বোঝাই যায় যে এ পাগলটা এই অঞ্চলে পরিচিতই… অনেকই চেনে বোধহয়।

Leave a Reply