রত্নাকরের মন খারাপ।বলবন্ত সিং চলে যাবেন মানে খুশিদিও চলে যাবে?চলে যাবার কথা অনেকদিন আগেই শুনেছিল কিন্তু সত্যিই চলে যাবে মেনে নিতে খারাপ লাগছে। রতির পিছনে পিছনে সঞ্জয়ও বেরিয়ে এল।
–রতি দাড়া আমিও যাবো।
দুজনে পাশাপাশি চলতে থাকে।রতি আপন মনে বলে,খুশিদি চলে গেলে পাড়াটা ফাকা ফাকা লাগবে।
–ঠিকই পাঞ্জাবী হলেও বেশ জমিয়ে রেখেছিল।সঞ্জয় বলল।
–অবশ্য একদিন আমাদের সবাইকে যেতে হবে।দার্শনিকের মত বলে রতি।
–কিছু মনে না করলে তোকে একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?
–কি ব্যাপারে?
–ঐ যে যেদিন খুব বৃষ্টি হল–।
চমকে ওঠে রত্নাকর।আণ্টির সঙ্গে সেদিন যা করেছে সেসব কিছু নয়তো?
–সেদিনের কথা আজ?
–আমার ভুলও হতে পারে।তুই কি সেদিন ড্রিঙ্ক করেছিলি?
রত্নাকর স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে হাসল।
–হাসছিস?
–দু-বেলা কিভাবে অন্ন সংস্থান হবে,কিভাবে কলেজের মাইনে দেবো তার ঠিক নেই–।
–দিবুদার এই সময় চলে যাওয়া ঠিক হয়নি।সঞ্জয় আক্ষেপ প্রকাশ করে।
সবাই জানে বাবা মারা যাবার পর মা ভাইকে ফেলে দাদা বউ নিয়ে শ্বশুরবাড়ীর পাড়ায় বাসা নিয়ে থাকে।
–ঠিক-বেঠিক নিয়ে ভাবিনা।যা ঘটার তা ঘটবে।চলে যাবার একবার খুশীদির সঙ্গে দেখা হলনা।সঞ্জয় বাড়ির গলির পথ ধরে।সামনে একটু দূরে পারমিতা চলেছে।কোচিং থেকে ফিরছে।
সেদিনের ঘটনার পর থেকে মিলিটারি আণ্টির ব্যবহার বদলে গেছে।বেশি কথা বলেনা, একবার চা দিয়ে যায়।আণ্টিকে দেখার জন্য মনটা ছটফট করে।আগে খোজ খবর নিত,জেনি কেমন পড়াশুনা করছে।
–কি রে তুই আমাকে দেখিস নি?
পারমিতার গলা পেয়ে রতি বলল,তুই আমাকে দেখিস নি?
–দেখব না কেন?সঞ্জয়ের সঙ্গে কথা বলছিলি তাই।
–তোকে একটা কথা বলি?
পারমিতা মুখ টিপে হাসে।রতি বলল,তোদের কোচিং থেকে সাজেশন দিলে আমাকে দিবি?
–তোর আর আমার সাব্জেক্ট কি এক?তোর কি নিউট্রিশন আছে?
–যে সাবজেক্ট গুলো কমন যেমন ইংরেজি বাংলা–।
–বুঝেছি কিন্তু একটা শর্তে।তুই অন্য কাউকে দিবিনা।
–আমি কেন অন্যকে দিতে যাবো?
–ঠিক আছে,তোকেই শুধু দেবো।সাজেশন নিয়ে কি করবি?সারাদিন দেখি পঞ্চাদার দোকানে আড্ডা মারছিস।
পারমিতার গলায় শাসনের সুর।বুক পাছা বেশ পুরুষ্ট রতি ভাল করে লক্ষ্য করে।মেয়েদের শরীর নিয়ে সেদিনের ঘটনার পর কৌতুহল বেড়েছে।পোশাকে আবৃত শরীরটা চোখের সামনে ভেসে ওঠে।দ্রুত বদলায় মেয়েদের শরীর।
–বেবি রাস্তায় দাঁড়িয়ে কি করছিস?
–কাকুমণি রতি কথা বলছিল তাই–।থতমত খেয়ে পারমিতা বলল।
–যাও বাড়ী যাও।
পারমিতা চলে যেতে কাকু রতিকে বলল,ফের যদি দেখি রাস্তায় ওকে ডাকাডাকি করেছিস চাবকে সোজা করে দেবো।
রত্নাকরের মুখে কথা যোগায় না।বুঝতে পারেনা কি অপরাধ তার।মুখ কালো করে বাড়ীর পথ ধরে।ছন্দাআণ্টি তো এমন নয়।ওর কাকাটাই রতিকে সহ্য করতে পারেনা। মায়ের মুখে এককথা, সারাদিন কোথায় থাকিস?বাড়ী এসে লোকে ফিরে যায়।
–কেউ এসেছিল নাকি?
–একটু আগে ঐ পাঞ্জাবী মেয়েটা কি যেন নাম–তোর সঙ্গে কি নাকি জরুরী দরকার ছিল।
খুশিদি এসেছিল?খুশিদি তো বাড়িতে আসেনা।কি দরকার পড়ল? ইস পারমিতার সঙ্গে বকবক নাকরলে ওর কাকার ধমক খেতে হতনা,খুশিদির সঙ্গে দেখা হয়ে যেত।এখনই যাবে?এতবেলায় না বরং বিকেলে যাবে।রত্নাকর স্নানে ঢুকলো।
মা গজগজ করে চলেছে।পড়াশোনা নেই সারাদিন টো-টো করে বেড়ানো।আমি না থাকলে পথে পথে ভিক্ষে করে বেড়াতে হবে।সেই কথা ভেবে ভেবে শান্তিতে মরতেও পারছিনা।
মা মাঝে মাঝেই মরার হুমকি দেয়।প্রথম প্রথম খারাপ লাগলেও এখন গা-সওয়া হয়ে গেছে।বাথরুম হতে গলা উচিয়ে বলল,তোমার ছেলে না খেয়ে মরবে তবু ভিক্ষে করবে না।রত্নাকর পায়জামা খুলে ফেলে।তলপেটের নীচে পেণ্ডূলামের মত ঝুলছে পুরুষাঙ্গ।হাত দিয়ে দুলিয়ে দিতে লম্বা হতে থাকে।উরু সন্ধি আর হাটুর মাঝামাঝি লম্বা।এইটা কিভাবে চুষছিল মিলিটারি আণ্টি ভেবে অবাক হয়।যখন চুষছিল ভাল লাগছিল কিন্তু আণ্টির কি ভাল লাগছিল?
উমাদা আরেকটা টিউশনির খবর দিয়েছে।মেয়েটি নাইনে পড়ে,ইংরেজিটা ভাল করে শেখাতে হবে।বাবা ব্যাঙ্কে চাকুরে বেতন ভালই দেবে।একান্নবর্তী পরিবার ভদ্র।বিকেলে বেরিয়ে খুশিদির খবর নেবে,কেন এসেছিল?কি এমন জরুরী দরকার?দেখা না হওয়া অবধি চিন্তাটা খচখচ করতে থাকবে। সন্ধ্যের দিকে ট্যুইশনির ব্যাপারটাও সেরে নেবে।এমাসের পর জেনিকে আর পড়াতে হবেনা,সেজন্য চিন্তায় ছিল।
সুরঞ্জনা মুখার্জি বিকেলে ব্যালকনিতে বসে চা খাচ্ছেন আর রাস্তায় লোক চলাচল দেখছেন।রতিটা এই পথে যোগ ক্লাসে যেত।লতিকা রেলিঙ্গে হেলান দিয়ে পোদ্দার বাড়ীতে কি নিয়ে গোলমাল বিশদে শোনাচ্ছে।
রবিন্দর পোদ্দার বড় বাজারে দোকান আছে।রাজস্থানের লোক চারপুরুষের ব্যবসা এখানে।ভদ্র লোকের দুই বউ কিন্তু একটাও সন্তান হয়নি।ছোট বউ সাবিত্রিকে বাজার যাবার পথে দেখেছেন সুরঞ্জনা।চারের ঘরে বয়সহবে স্থুল চেহারা,ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে উদাসভাবে তাকিয়ে থাকে।ললিতাকে জিজ্ঞেস করেন,তুই এসব জানলি কি করে?
–ওদের যে রান্না করে আমার ফ্রেন।ছোট বউ ম্যাছেচ পালারে যায়।উনার স্বামী খপর পেয়েছে,সিখানে ম্যাছেচ করা শুধু না ওইসব করায়ে আসে।
–চুপ কর।যত নোংরা আজেবাজে কথা।
–বীনা আমারে যা বলল তাই বললাম।অনেক ভাল ভাল ঘরের বৌ-ঝিরা নাকি ঐসব করাতি যায়।
–তোর কাজকম্ম সব হয়ে গেছে?
সুরঞ্জনার নামিয়ে রাখা কাপ নিয়ে ,ললিতা ভিতরে চলে গেল।মুচকি হাসেন সুরঞ্জনা। এসব খবর আগে শোনেন নি তা নয়।কিন্তু পার্লারে যাওয়া মেয়ে দেখেন নি।ললিতার কাছে শুনল সাবিত্রী পার্লারে যায়।হয়তো ওর স্বামী চাহিদা মেটাতে পারেনা,বাধ্য হয়ে তাকে যেতে হয়।বাধ্য হয়ে মানুষ কত কি না করে।
রত্নাকর সিড়ি বেয়ে তিন তলায় উঠে গেল।অবাক হয়ে দেখল দরজায় তালা ঝুলছে।চার তলা থেকে একজন নামছিল,তাকে দেখে বলল,সিং সাহাব চলে গেছে।
–চলে গেছে?কবে গেছে?
–আজ দুপুর বেলা চলে গেল।ঘণ্টে পহেলে আসলে দেখা হতো।
নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারেনা রত্নাকর।মা বলার সঙ্গে সঙ্গে এলে হয়তো দেখা হতো।যাবার আগে মনে হয় খুশিদি বিদায় নিতে এসেছিল।আর হয়তো কোনোদিন দেখা হবেনা।নীচে নেমে এল।বেলা আরেকটু পড়ুক তারপর না হয় সুমন্ত বোসের বাড়ী যাওয়া যাবে।চোখে জল চলে আসায় হাসে রত্নাকর। বুঝতে পারে খুশীদিকে সত্যিই খুব ভাল বাসতো।
হঠাৎ খেয়াল হল রঞ্জাআণ্টির ফ্লাটের নীচে এসে পড়েছে।উপর দিকে তাকাতে ব্যালকণিতে বসে থাকা আণ্টির সঙ্গে চোখাচুখি হল।কিছু বলার আগেই রত্নাকর বলল,কাল আসব।
–খাওয়া-দাওয়ার পর দুপুরে আসিস।সুরঞ্জনা বললেন।
রত্নাকর ভাবে কাল আসবে বলল যদি বোসবাবু কাল থেকেই পড়াতে বলেন?বড় রাস্তার ধারে চার তলায় বোসবাবু থাকেন।সন্ধ্যে নেমেছে এখন নিশ্চয়ই বাড়িতে ফিরে এসেছেন।কি বলবে মনে মনে ভেবে নিল।সপ্তাহে তিনদিনের বেশি পড়াতে রাজি হবেনা। চারতলায় উঠে কলিং বেল টিপতে একটি মেয়ে দরজা খুলে দিল।এই মনে হয় ছাত্রী।রত্নাকর বলল,উমাদা পাঠিয়েছে।
মেয়েটি ভিতরে ডেকে বৈঠক খানা ঘরে বসতে বলে চলে গেল।কিছুক্ষন পর সুমন্তবাবু এবং একজন মহিলা ঢুকলেন।মহিলা সম্ভবত সুমন্ত বাবুর স্ত্রী।
–তুমি কি পড়ো?
— বাংলা অনার্স নিয়ে পড়ছি।
–ইংরেজিতে পাওনি?
–সেজন্য নয় বাংলা আমার পছন্দ।
কথাটা কি মহিলার পছন্দ হয়নি? মহিলা উঠে চলে গেলেন।সেদিকে তাকিয়ে সুমন্তবাবুও উঠে চলে গেলেন।ঘরে রত্নাকর একা। অন্য একজন মহিলা চা নিয়ে ঢুকলেন।চায়ের কাপ এগিয়ে দিয়ে বললেন,নেও চা খাও।সামনে বসলেন মহিলা।
চায়ে চুমুক দিতে দিতে কানে এল,বাইরে ফিস ফিস কথা চলছে।দেখেছো কেমন রাঙামুলোর মত চেহারা?একা একা মেয়ে ওর কাছে পড়বে?সামনে বসা মহিলা বুঝতে পেরে উঠে সামলাতে গেলেন।হ্যা দাদা ঠিকই বলেছে দিদি।ঘি আগুন একসঙ্গে থাকলে বিপদ কখন ঘটে তার ঠিক আছে?রত্নাকর বুঝতে পারে কপালে কি আছে তার।সুমন্তবাবু গলা খাকারি দিয়ে ঢুকে বললেন,ঠিক আছে আপনি আসুন। উমাকে সব বলে দেবো।
–আজ তাহলে আমি আসি?
সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে রত্নাকর ভাবে,অভাগা যেদিকে চায় সাগর শুকায়ে যায়।
এখানে টিউশনি হবেনা।কিন্তু তার একটা টিউশনি খুব দরকার ছিল,রোজ পড়াতে বললেও সে রাজি।ঘাড় ঘুরিয়ে সুমন্ত বোসের এ্যাপার্ট্মেণ্টের দিকে তাকালো।বারান্দায় কে যেন দাঁড়িয়ে তাকেই কি দেখছে?
এই গল্পটাকি এর কন্টিনিউ হবে না?
lekhok to r lekhen ni