কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী [পার্ট ২]

কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী (#22)

মনিদিপার চলে যাবার কথা শুনে মন খারাপ হয়ে গেল দেবেশের। একপা এগিয়ে এল মনিদিপার দিকে। ওই সুন্দর ফর্সা কপালে ঠোঁট ছোঁয়াতে ইচ্ছে করছে খুব, ইচ্ছে করছে দু’হাতে জড়িয়ে ধরে। দেবেশ সামলে নিয়ে হেসে বলল, “ঠিক আছে, রুমে ত আগে চল, এত দিন পরে দেখা একটু গল্প করবে না আমার সাথে।”

দুজনেই পা বাড়াল হোটেলের দিকে। সন্ধ্যে হয়ে এসেছে, এই বিশাল তীর্থস্থলে চারদিকে লোকের বন্যা। এই ভিড় ভর্তি রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে মনিদিপার খুব ইচ্ছে করছিল দেবেশের বাহু জড়িয়ে ধরে, আর দেবেশ ভাবছিল একবার মনিদিপার হাতটা ধরে, কিন্তু দুজনের মনে ইতস্তত ভাব, মনিদিপা চুপচাপ দেবেশের পেছন পেছন হাঁটতে লাগল।

রুমে ঢুকতে গিয়ে ভিশালের সাথে দেখা হল। কেউই কাউকে কিছু জিজ্ঞেস করল না, শুধু চোখে চোখে একটু কথা হয়ে গেল।

হোটেলের রুমে ঢুকে দেবেশ মনিদিপাকে বসতে বলল। কিছুক্ষণ এদিক ওদিক তাকিয়ে থাকার পরে দেবেশকে জিজ্ঞেস করল, “এতদিনে বিয়ে করেছ নিশ্চয়।”

এতক্ষণ নিস্পলক চোখে মনিদিপাকে দেখছিল দেবেশ। সেই মাদকতা ময় রুপের বদলে এক স্নিগ্ধা রূপবতী মহিলা ওর সামনে বসে। সেই চোখ, সেই ঘন কালো চুল, গায়ের রঙ্গে যেন একটু আলতা লাগান। ওর কথা শুনে যেন সম্বিৎ ফিরে পেল।

মনিদিপার কথার উত্তর না দিয়ে পালটা জিজ্ঞেস করল, “তোমার কথা শুনি, মনি। কেন মরার ভান করলে তুমি আর কেন এত দিন লুকিয়ে ছিলে আমাদের কাছ থেকে?”

মনি ওর চোখে চোখ রেখে উত্তর দিল, “সত্যি তুমি শুনতে চাও?” মাথা নাড়ল দেবেশ, “হ্যাঁ।”

মনিদিপা বুক ভরে এক নিঃশ্বাস নিয়ে বলতে শুরু করল, “আমার কলঙ্কিত বস্তাপচা কাহিনী নাই বা শুনলে।”

দেবেশ বলল, “একা বয়ে বেড়াতে চাও নিজের কষ্ট, আমাকে সাথেও নেবে না।”

তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে জিজ্ঞেস করল, “আমি এক রকম মরেই আছি দেবেশ। দাদা বিয়ে করে আলাদা হয়ে গেল, ফিরে তাকাল না আর। বাবার অসুখের সময়ে দাদা একবারের জন্যও কাছে এসে দাঁড়াল না। আমি কাকুর কাছে টাকা চাইতে যেতে পারলাম না, পাছে তোমার সামনে পড়ে যাই আর টাকা দেবার ছলে আমি যদি তোমার কেনা বাঁদি হয়ে যাই। তোমার ওপরে আমার প্রচন্ড ঘৃণা জন্মে গেছিল, সেই ভেবে আমি আর গেলাম না।”

বলতে বলতে মনিদিপার চোখে জল চলে এল। কথা শুনে দেবেশের কান লাল হয়ে গেল।

“বাবার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার দরকার ছিল। নারসিং হোমের খরচ, ডাক্তারের খরচ, তারপরে পেসমেকার কিনে লাগানোর খরচ। বাড়ি বিক্রির সব টাকা শেষ, আমি হাঁপিয়ে উঠেছিলাম টাকা যোগাড় করতে করতে কিন্তু ভেঙ্গে পড়িনি। এদিকে ওদিকে, এর কাছে, তার কাছে হাতে পায়ে ধার টাকা যোগাড় করেছি। সবাইকে কথা দিয়েছিলাম যে টাকা আমি শোধ করে দেব।”

ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল মনিদিপা, “কিন্তু বাবা আমাকে ছেড়ে চলে গেলেন, আমি আর থাকতে পারলাম না। আগে তুমি তারপরে বাবা, আমি ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে গেছিলাম। এই জীবনের প্রতি মন বিষিয়ে গেছিল। প্রতিদিন পাওনাদারদের খোঁচা থেকে বাঁচতে গিয়ে ভাবলাম যে আমি আত্মহত্যা করব। মা যদি গরিয়াহাটে থাকত তাহলে পাওনাদাররা মাকে ছেড়ে দিত না তাই ভাবলাম যে মাকে তোমাদের বাড়ি পাঠিয়ে দেব। নরেশ কাকু আর বাবা এক মায়ের পেটের ভাই নয় কিন্তু আমি জানতাম যে মাকে কাকু ফেলতে পারবেনা। দু এক বার আত্মহত্যার চেষ্টাও করছিলাম আমি কিন্তু মরতে পারলাম না। শেষ পর্যন্ত ঠিক করলাম যে পাওনাদারদের সব পাওনা শোধ করতে হবে আর মেয়েদের পয়সা আয় করার রাস্তা হচ্ছে শরীর। আমি নেমে গেলাম নিজের চোখে আর নিজের আত্মহত্যার ভান করে পালিয়ে গেলাম সবার কাছ থেকে।”

দেবেশের বুক ফেটে যাচ্ছিল ওর এই কথা শুনে। মনে হল যেন একবার বলে, “কেন মনি কেন, একবারের জন্যও আমার কাছে আসনি কেন মনি।” গলা শুকিয়ে গেছে দেবেশের, কথা বের হল’না। চোয়াল শক্ত করে শুনে যেতে লাগল মনিদিপার কথা।

“চাকরি ছেড়ে দিলাম, দু’বছর কলকাতায় ছিলাম। এক বান্ধবী আমাকে রাস্তা দেখাল, আমি পয়সা রোজগার করে বেশ কিছু পাওনাদারদের টাকা মিটিয়ে দিলাম। তারপরে একদিন চলে এলাম দিল্লী, এখানে নাকি অনেক টাকা। একটা চাকরি নিলাম এখানে। প্রথমে ছোটো ছোটো পত্রিকায় লিখতাম। তারপরে কাজ পেলাম এক নামি পত্রিকায়। প্রথমে ভাবলাম যে আর এই কাজ করবনা, কিন্তু অতীত পেছন ছাড়ল না আমার। একবার দেখা হয়ে যায় এক পুরান ক্লায়েন্টের সাথে, অনেক টাকার অফার দিল। না ব্লাকমেল করেনি আমায়, পাওনাদারদের কিছু টাকা তখন বাকি ছিল। খুব হাই প্রোফাইল ক্লায়েন্ট না হলে যেতাম না, আর যে দেড় লাখ টাকা দিতে পারে সে আশা করি ভালোই হবে। রাজন অনেক সাহায্য করেছে আমাকে, নিজের দিদির মতন দেখত আমায়। অনেক ক্লায়েন্ট ও ফিরিয়ে দিত যদি কথা বলে পছন্দ না হত। এমনকি টাকা ও ফিরিয়ে দিয়েছে অনেক বার। পাওনাদাদের সব টাকা মিটে গেল, কিন্তু আমি সার্কিট ছেড়ে যেতে পারলাম না।”

“তিন বছর আগে, সেই রাত, আমার শেষ কাজ ছিল। রাজন তোমার কথা আমাকে বলেনি বলেছিল একজন টাকা দেবে আর আমাকে তার বসের সাথে যেতে হবে। বসের ব্যাপারে তুমি রাজন কে যা বলেছিলে তাই আমাকে জানাল। সব শুনে আমি রাজি হয়েছিলাম। হোটেলে তোমাকে দেখে আমি থমকে যাই। আমি রামচন্দ্রন কে কথার ছলে তোমার সব কথা জেনে নেই। তারপরে রাজন কে বলেছিলাম যে আমি আর কাজ করবনা। তোমাকে যেন টাকা ফিরিয়ে দেয়। তোমার কাছে আমার শুরু আর তোমার কাজের জন্য নিজের শেষ। আমি দিল্লী ছেড়ে দিয়ে উত্তরকাশি চলে এলাম, সেখানে এক ছোটো স্কুলে পড়াতে শুরু করলাম। অনেকদিন পরে যেন নিজের ছায়া থেকে একটু অব্যাহতি পেলাম আমি।”

মনিদিপার কথা শুনে দেবেশ কি করবে ভেবে পেল না। একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ছেড়ে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াল মনিদিপার সামনে।

মনিদিপার বাজুতে হাত রেখে টেনে দাঁড় করাল নিজের সামনে। মনিদিপা দেবেশের এই আচরনে অবাক হয়ে গেল। জিজ্ঞাসু চোখ নিয়ে দেবেশের মুখের দিকে তাকিয়ে রইল।এক এক করে জামার বোতাম খুলল দেবেশ। মনিদিপা হাঁ করে তাকিয়ে আছে দেবেশের দিকে আর ভাবছে যে, কি করতে চলেছে দেবেশ, কিছুই বুঝতে পারছেনা। হটাত করে জামা কেন খুলছে, একা পেয়ে কি আবার সেই লম্পট পুরানো দেবেশ ফিরে এসেছে। আসন্ন উৎকণ্ঠায় কাঠ হয়ে দাঁড়িয়ে রইল মনিদিপা।

জামার ভেতর থেকে বেড়িয়ে এল সোনার হার। ঠোঁট কেঁপে উঠল মনিদিপার, খুব ইচ্ছে করল যে দেবেশ কে জড়িয়ে ধরে আর ওই বুকে মাথা রেখে কাঁদে। মনিদিপা ছুয়ে দেখল হারটা। দেবেশ গলা থেকে হার’টা খুলে মেলে ধরল মনিদিপার সামনে।

কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী (#23)

দেবেশ বলল, “না মনি আমি বিয়ে করিনি।”

কাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করল মনিদিপা, “কেন করনি দেবু? আমি ত মরেই গেছিলাম।”

দেবেশ কোন কথা না বলে মাথা নিচু করে মনিদিপার কপালে কপাল ঠেকাল দেবেশ। ঠোঁট কাপছে মনিদিপার, চোখে জল টলমল।

মনিদিপার চোখে চোখ রেখে ওর গলায় সোনার হারখানি পড়িয়ে দিয়ে বলল, “এই হার তোমার মনি, এই হার আর কারুর গলায় শোভা পেতে পারেনা মনি। তুমিই ত বলেছিলে মনি, যেদিন আমি আমার ভালবাসা খুঁজে পাব সেদিন যেন তাকে আমি এই হার পড়িয়ে দেই। আজ তাকে পড়িয়ে দিলাম, মনি।”

দু’হাতে খামচে ধরল দেবেশের জামা। অস্ফুট চিৎকার করে উঠল মনিদিপা, “না দেবু, একি করলে তুমি। আমি পতিতা কলঙ্কিনী নারী, সমাজে তোমার পাশে দাঁড়ানোর শক্তি টুকু আমি হারিয়ে ফেলেছি। আমি লুকিয়ে আছি অনেক ভাল আছি দেবু।”

দুহাতে আঁজলা করে তুলে নিল মনিদিপার মুখ, গাল বেয়ে বয়ে চলেছে চোখের জল। দেবেশ ওর কম্পিত ঠোঁটের কাছে ঠোঁট এনে ফিসফিস করে বলল, “না মনি ওই কথা বল না। আমি তোমার পাপী, আমাকে ক্ষমা করে দাও মনি। আমি কোনদিন তোমাকে দুঃখ দেব না। তুমি কে সেটা আমি জানি। এই পৃথিবী যা জানে বা যা দেখেছে সেটা মিথ্যে।”

মনিদিপার বুক ভেঙ্গে ভালবাসার কান্না এসে গেল, প্রাণপণে জড়িয়ে ধরল দেবেশকে, “এতদিন পরেও তুমি আমাকে কাঁদাতে এসেছ।”

“না মনি না, আর আমি তোমাকে কাঁদাব না।” দেবেশ বারে বারে মনিদিপার কপালে গালে চুমু খেতে খেতে বলল।

দুজনাই একে অপরকে জড়িয়ে ধরে রইল। দেবেশের আলিঙ্গনের মাঝে বদ্ধ হয়ে মনিদিপা একটু খানি কেঁপে উঠল। মুখ উচু করে দেবেশকে জিজ্ঞেস করল, “কিন্তু তুমি আমার অতীত থেকে আমাকে কি করে লুকিয়ে রাখবে?”

দেবেশ ঠিক এই প্রশ্নের জন্য তৈরি ছিল। মনিদিপা কে বিছানার ওপরে বসিয়ে ওর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে ওর হাত দুটি নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে উত্তর দিল, “বুকের মাঝে মনি। আমি ফ্রান্সে থাকি, সেখানে তোমাকে কেউ চিনবে না।”

মনিদিপার মনের ভেতরে নতুন ভয় ভর নিল, “আমার মা, কাকিমা কাকু? তারা ত জানে আমি মরে গেছি, তারা যখন জানতে পারবে তাদের কি বলবে তুমি?”

দেবেশ বলল, “আমার সাথে কলকাতা চল আমি সব সামলে নেব।”

মনিদিপা আঁতকে উঠল, “না দেবেশ না, আমি কলকাতা যাবনা। কি মুখ নিয়ে যাব আমি ওদের সামনে, দেবেশ?”

দেবেশ বলল, “মনি, তোমার পাশে আমি আছি। আজ থেকে তোমার সব ভয়, সব দুঃখ কষ্ট আমার। কেউ তোমাকে ছুঁতে পর্যন্ত পারবে না, মনি। কিন্তু একবার তোমাকে কলকাতা যেতেই হবে। সাত বছর আগে তোমার সাথে সাথে জেঠিমাও মারা গেছিলেন। তোমাকে দেখে জেঠিমা মা সবাই বেঁচে উঠবে।”

মনিদিপা ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করল, “কিন্তু দেবু, ওরা যদি আমাদের সম্পর্ক না মেনে নেয়?”

দেবেশ অভয় দিয়ে বলল, “মনি, সে চিন্তা তোমার নয় আমার। আমার ওপরে আস্থা আছে তোমার?”

দেবেশের মুকের দিকে তাকাল মনিদিপা, না এবারে ওর চোখ সত্যি কথা বলছে। মনিদিপা নির্ভয়ে দেবেশের সাথে যেতে পারে। দেবেশের মাথা নিজের বুকের ওপরে জড়িয়ে ধরে উত্তর দিল, “তোমার সাথে আমি যমের বাড়ি যেতেও রাজি আছি।”

দেবেশ একটু মজা করে, মনিদিপার বুকে নাক ঘষে জিজ্ঞেস করল, “রাতের ডিনার কি বাইরে খাবে না রুম সার্ভিস ডেকে নেব।”

সাত বছর পরে মনিদিপা যেন আবার নিজেকে খুঁজে পেল। দুম করে একটা কিল মেরে বলল, “তোমার দুষ্টুমি আর গেল না, বল। তোমার বন্ধুরা কি বলবে আর আমার হোটেল থেকে জিনিস পত্র ত আনতে যেতে হবে নাকি?”

দেবেশ উত্তর দিল, “ধুর বাবা, ঠিক আছে চল।” কিছুক্ষণ পরে দেবেশ বলল, “আমিও নিজের জিনিস গুছিয়ে নেই।”

তারপরে দেবেশ নিজের জিনিস গোছাতে সুরু করল, সেই দেখে মনিদিপা ওকে জিজ্ঞেস করল, “কি ব্যাপার, তুমি কেন জিনিস গোছাচ্ছ?”

দেবেশ উত্তর দিল, “আজ রাতেই আমারা বেড়িয়ে পরি। কাল সকালের মধ্যে দিল্লী পৌঁছে যাব তারপর সকালের ফ্লাইট ধরে কলকাতা।”

চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে মনিদিপা, “মানে? এখুনি।”

দেবেশ মনিদিপার হাত ধরে অনুরধ করল, “হ্যাঁ মনি, এখুনি। আমার আর দেরি করতে মন চাইছে না। চল মনি, কলকাতা চল।”

মনিদিপা কাতর চোখে তাকিয়ে উত্তর দিল, “দেবু, আমার কিন্তু খুব ভয় করছে, কি হবে দেবু…”

ওকে আসস্থ করে উত্তর দিল, “মনি আর চিন্তা করোনা, প্লিস।”

ওরা দুজনে বেড়িয়েই দেখল যে রুমের সামনে বাকি চারজন দাঁড়িয়ে আছে। দেবেশকে দেখে অনির্বাণ বলে উঠলো, “কিরে ভাই বৌদি কে পেয়ে আমাদের কথা বেমালুম ভুলে গেলি? একবার বউদির সাথে আলাপ করিয়ে দিবি না।”

ভিশাল মনিদিপার দিকে হাত বাড়িয়ে বলল, “আমি ভিশাল, এই গাধাটার সাথে আইআইটি তে পড়তাম” তারপরে বাকিদের সাথেও আলাপ করিয়ে দিয়ে বলল, “আপনাদের দুজনের একটা ছবি তুলবো আমি, প্লিস একটা রোম্যান্টিক পোস দেবেন।”

মনিদিপা লজ্জায় লাল হয়ে দেবেশের দিকে তাকিয়ে রইল। দেবেশ প্রথমে একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেল তারপরে মনিদিপার কে জড়িয়ে ধরে বলল, “মনি, লজ্জা পেয় না।”

দেবেশের হাতে ব্যাগ দেখে অনির্বাণ ওকে জিজ্ঞেস করল, “কিরে কোথাও যাচ্ছিস নাকি?”

মনিদিপার দিকে তাকিয়ে দেবেশ উত্তর দিল, “হ্যাঁ রে আমাকে কলকাতা যেতে হবে, তাই রাতেই বেড়িয়ে যাবো।”

নিলাঞ্জন একটু ক্ষুণ্ণ হয়ে জিজ্ঞেস করল, “যাঃ মাল, ভাবলাম কিনা আজ রাতে একটু মজা হবে। আবার তোদের সাথে কবে দেখা হবে তার নেই ঠিক।”

দেবেশ বলল, “না ভাই আবার দেখা হবে তোদের সাথে, নাহলে এবারে আমার বাড়িতে, বোরদে’তে সবার নিমন্ত্রন রইল।” দেবেশ ওর বন্ধুদের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলার পরে বেড়িয়ে পড়ল।

হোটেল থেকে মনিদিপার জিনিস পত্র নিয়ে একটা গাড়ি ভাড়া করে রওনা দিল দিল্লীর দিকে। রাতের অন্ধকার কেটে গাড়ি এগিয়ে চলেছে দিল্লীর দিকে। ল্যাপটপ বের করে অনলাইন প্লেনের টিকিট কেটে নিল দেবেশ। সারাটা রাত দেবেশের কাঁধে মাথা রেখে চুপ করে চোখ বন্ধ করে থাকল মনিদিপা। অনেকদিন পরে বুকের মাঝে অনেক হালকা লাগছে ওর।

মনিদিপার মুখের দিকে তাকিয়ে দেবেশ ওর মনের সব কথা বুঝে ফেলল, মনিদিপাকে কাছে টেনে বলল, “মনি চিন্তা কর না আর।”

মিষ্টি হাসি হেসে জবাব দিল মনিদিপা, “না আর ভয় নেই আমার, তুমি আছো ত আমার সাথে।”

2 thoughts on “কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী [পার্ট ২]”

  1. অনেক সুন্দর একটি উপন্যাস। আমি বহু বার পড়েছি। যে কোন সাইটেই যাই না কেন এটা পেলে একবার পড়বোই পড়বো।

Leave a Reply