অ-সুখ [পার্ট ২] বউ বদল

— ৮ —
গোয়া পৌছবার আগেই পাঞ্জিমএ হোটেল রুম বুক করেই রেখেছিল সৌভিক, তাই পৌছে সোজা আগে হোটেলে গিয়ে ওঠে তারা… ডেভিডকে ফোন লাগায় সৌভিক… সেদিনের সন্ধ্যেবেলার ডিনার ফিক্স করে ফেলে কথা বলে… তাদের মধ্যে কথা হয় যে তারা ডেভিডের ফার্মহাউসে এসে চারজন চারজনকে দেখবে, কথা বলবে, চিনবে প্রথমে… তারপর যদি সব কিছু ঠিক থাকে, তাহলে সেদিন রাত্রিটা একে অপরের পার্টনারের সাথে ডেভিডের ওখানেই রাত্রিবাস করবে, আর যদি কোন রকম কোন অপছন্দ বা অস্বস্থি হয়, তাহলে তারা নিশ্চিন্দে নিজেদের হোটেলে ফিরে আসবে…

সুদেষ্ণা জানে যে সৌভিক যে ভাবে ব্যাপারটা নিয়ে উৎসাহিত হয়ে রয়েছে, তাতে তার তরফ থেকে ‘না’ কথাটা আসার কোন সম্ভবনাই নেই… আর তার, নিজের দিকের কথা বলতে গেলে, সেও ‘হ্যা’ই বলে দেবার জন্য মনে মনে প্রস্তুত হয়েই এসেছে… কারণ সুদেষ্ণা সত্যি বলতে চায় না এই ব্যাপারটায় না বলে দিয়ে আবার সব কিছু সেই নতুন করে শুরু করতে… মুম্বাই ফিরে গিয়ে সেই প্রথম থেকে প্রোফাইল ঘেঁটে আবার আর একজন পার্টনার খুজে বের করতে… তার থেকে এটাতেই একবার যা কিছু ঘটার পর ইতি টানতে চায় সে… তাতে যদি কোন রকমে চোখ বন্ধ করে অন্য পুরুষের সাথে একটা রাত কাটিয়ে দিতে হয়… তাই না হয় দেবে… অন্তত তাতে সৌভিকের তো শান্তি হবে… আর সেই সাথে তাদেরও দাম্পত্য জীবনটায় ভবিষ্যতে আবার নতুন করে কোন ঝড় উঠবে না… তাই মনে মনে সে প্রস্তুত হয় সম্ভাব্য রাতটা কথা ভেবে…

কিন্তু সত্যিই কি কোনরকমে? তাই যদি হবে, তবে কেন সে এখানে আসার আগে নিজের যোনিটাকে ভালো করে ওয়াক্সিং করে নির্লোম করে তুলেছে? আর কেনই বা সে ভালো একটা বিউটি পার্লারে গিয়ে সম্পূর্ণ দেহ স্পা করে এসেছে? শুধু তাই নয়… সাথে নিয়ে এসেছে তার ক্লোসেটে থাকা সব থেকে সেক্সি ব্রা আর প্যান্টির সেটটা… কেন? হয়তো নিজেও পারবে না এর উত্তর দিতে… তবু… নিজের গালে হাল্কা মেকআপ লাগাতে লাগাতে নিজেকেই প্রশ্ন করে সুদেষ্ণা আয়নার সামনে বসে…

সৌভিক কিছুক্ষনের জন্য বাইরে গিয়েছিল… হয়তো নীচে, রিসেপশনে… ফিরে এসে তার মুখটা হাঁ হয়ে যায় সুদেষ্ণাকে দেখে… বিস্ফারিত চোখে তাকিয়ে থাকে তার স্ত্রীর দিকে… একটা হাল্কা হলুদ লং স্কার্ট পরেছে সুদেষ্ণা… সাথে সাদা স্লিভলেস ব্লাউজ… মাথার কালো এক ঢাল চুলটাকে খুলে মেলে দিয়েছে পীঠের ওপরে… টপটা যে ভাবে শরীরটাকে আঁকড়ে ধরে রয়েছে, তাতে সুদেষ্ণার পুরুষ্ট স্তনদুটো যেন আরো বেশি করে লোভনীয় হয়ে উঠেছে… দুটো স্তনের মাঝে বিভাজিকাটা একটা মারাত্মক গভীরতা নিয়ে হারিয়ে গিয়েছে টপের ফাঁকে…

‘ওহ! মাই গড!… ইয়ু আর লুকিং লাইক আ সেক্স গড্ডেস…’ বলতে বলতে এগিয়ে আসে সুদেষ্ণার সামনে…

‘এই… না… একদম এখন এই সব নয়…’ খিলখিলিয়ে হেসে উঠে হাত রাখে সৌভিকের বুকের ওপরে… বিরত করার চেষ্টা করে আরো কাছে এগিয়ে আসার থেকে… ‘আমার মেকআপ হয়ে গেছে… এখন এই সব করলে আমার মেকআপ ঘেঁটে যাবে কিন্তু… তখন যেতে তোমারই দেরী হয়ে যাবে ওখানে…’

হ্যা… যেতে দেরী হয় যাবে… কথাটা মনে ধরে সৌভিকের… এই দিনটার জন্য কত যে ঔৎসুক্কো নিয়ে অপেক্ষায় রয়েছে সে… তাই আর এগোয় না… মুচকি হেসে পিছিয়ে আসে…
.
.
.
ফার্ম হাউসের সামনে গিয়ে যখন পৌছায় ওরা, তখন ছটা বাজছে ঘড়িতে… সূর্য ঢলে পড়ছে দিগন্তে… তপ্ত দিন একটু একটু করে বদলে যাচ্ছে মনোরম আবহাওয়ায়… সমুদ্রের দিক থেকে ভেসে আসছে দুরন্ত ভেজা হাওয়া…

‘আমার না কেমন নার্ভাস লাগছে… জানো!’ গেটের সামনে দাঁড়িয়ে বলে ওঠে সুদেষ্ণা…

‘আমারও যে নার্ভাস লাগছে না তা নয়…’ চাপা গলায় স্বীকার করে সৌভিকও…

একটা ক্ষীণ আশার আলো দেখে সুদেষ্ণা… তাড়াতাড়ি বলে ওঠে… ‘তাহলে চলো না… ফিরে যাই?’

‘বোকার মত কথা বলো না…’ সুদেষ্ণার হাতটা ধরে সৌভিক… গেট খুলে এগোতে থাকে মোরাম বিছানো পথ বেয়ে সামনের পানে, হাতে হাত রেখে… চোখের সন্মুখে তখন সুন্দর একেবারে ছবির মত সাজানো দু’তলা বাড়িটা…
.
.
.
বাড়ির দরজায় বেল বাজাতেই দরজা খুলে দাঁড়ায় যে ভদ্রলোক, তাকে দেখেই চিনতে পারে ওরা… ডেভিড, ডেভিড ব্রিগ্যাঞ্জা… ‘আহ… হেয়ার ইয়ু আর… ওয়েলকাম ডিয়ার টু আওয়ার হোম…’ বলে হাত বাড়িয়ে দেয় সৌভিকের দিকে… উষ্ণ করমর্দন করে তারা… সুদেষ্ণা চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে সৌভিকের পাশে…

‘ইয়ু মাস্ট বী সুদেষ্ণা?’ সুদেষ্ণার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে ডেভিড… ‘আই অ্যাম গ্ল্যাড দ্যাট ইয়ু ডিসাইডেড টু কাম…’ চওড়া হাসি ছড়ায় ডেভিডের মুখে… দরজা খুলে সরে দাঁড়ায় পাশে… তাদের ভেতরে আসার সুবিদার্থে…

ড্রইংরুমটা যেমন বিশাল, তেমনি সুন্দর আর অসম্ভব সুরুচিপূর্ণ করে সাজানো গোছানো… সুদেষ্ণাদের মুম্বাইয়ের ওই ছোট্ট দুই-কামরার ফ্ল্যাটের মত নয়… নরম সোফায় বসতেই যেন পুরো শরীরটা ডুবে যায় তাদের… নিজেদের ওই রকম একটা বিত্তশালী পরিবেশের মধ্যে কেমন বেমানান লাগে যেন… অস্বস্থি হয় দুজনেরই…

‘আই হোপ ইয়ু ফাইন্ড ইয়োর ওয়ে ইজিলি…’ শান্ত গলায় প্রশ্ন করে ডেভিড…

সুদেষ্ণা ডেভিডের কথায় মুখ তুলে তাকায়… ডেভিডকে দেখে ভালো করে… যার সাথে আজ রাতে সে দৈহিক মিলিত হবে… যার পুরুষাঙ্গ গ্রহণ করবে তার শরীরের অভ্যন্তরে…

একটা নীল জিন্স আর ঢোলা টি-শার্ট পরনে ডেভিডের… বেশ লম্বা… সৌভিকের থেকেও বেশ খানিকটা বেশি… কত হবে? ছয় তিন কি চার… চওড়া কাঁধ… বলিষ্ঠ বাহু… ছবির থেকেও সামনে থেকে আরো যেন সুপুরুষ লাগে দেখতে… গায়ের রঙটা তামাটে… হয়তো রোদে পুড়ে হয়েছে, তা না হলে বোঝা যায় যে ডেভিড আসলে বেশ ফর্সা… ফর্সা রঙটা পুড়ে তামাটে হয়ে যেন আরো আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে… চোখদুটোর মণি সমুদ্র নীল… হয়তো পূর্বপুরুষ কোন বিদেশী… তাকালে কেমন গায়ের মধ্যেটায় একটা শিহরণ খেলে যায়… গভীর চওড়া হাসি… কিন্তু ভিষন ভাবে নিষ্পাপ সে হাসি…

‘হেয়ার শি ইজ… মাই ডার্লিং… এলি…’ ডেভিডের কথায় চমক ভাঙে সুদেষ্ণার… মুখ ঘুরিয়ে দেখে ঘরের মধ্যে দিয়ে ওপরের তলায় উঠে যাওয়া সিড়ি ভেঙে এক মহিলা নেমে এসেছেন ততক্ষনে… দেখে চোখ সরু হয়ে যায় সুদেষ্ণার… না চাইলেও কেন জানে না নিজেকে ভদ্রমহিলার সাথে তুলনা করে সে… শাড়িই পরে আছেন উনি… যথেষ্ট রূপসী… মুখের মধ্যে একটা বিদেশী ছাপ স্পষ্ট… স্তনদুটো বেশ বড়… বেশ মানে বেশই বড়… না হলেও প্রায় চল্লিশ সাইজের তো হবেই… কিন্তু সে হিসাবে এতটুকুও ঝুলে যায় নি যেন… বুকের ওপরে সগর্বে উঁচিয়ে রয়েছে ব্লাউজের আবরণে আবদ্ধ হয়ে… শাড়ীর আঁচলটা টানটান করে বুকের ওপর দিয়ে ফিরিয়ে এনে টেনে রেখেছেন… ব্লাউজটার সামনেটা যথেষ্ট বেশি কাটা… আর তার ফলে স্তনবিভাজিকাটা ভিষন ভাবে প্রকট… উচ্চতায় সুদেষ্ণার মতই হবে… একেবারেই মেদহীন… অথচ শাড়ির আড়ালে থাকা উরু বা নিতম্ব সুদেষ্ণার মেয়েলি চোখের অভিজ্ঞতায় বুঝতে অসুবিধা হয় না যে সে গুলো যথেষ্ট মাংসল, ভারী… তলপেট একেবারে পাতা… সেখানেও কোন মেদের চিহ্ন নেই একেবারে…

‘মাই ডিয়ার… হেয়ার দে আর… মিট সৌভিক… অ্যান্ড… শী ইজ সুদেষ্ণা…’ হাত তুলে দেখায় সুদেষ্ণার দিকে ডেভিড… এলি হাত তুলে আঙল নাড়ায় তাদের দিকে স্মিত হেসে… ‘হাই…’

প্রত্যত্তরে সুদেষ্ণারাও প্রায় একই সাথে সমস্বরে বলে ওঠে… ‘হাই…’

মনে মনে ভাবে সুদেষ্ণা, আজ অনেকদিন পর সৌভিকের একটা ফ্যান্টাসি পূরণ হতে চলেছে… ভাবতেই কেন জানে না সে কানের লতিতে ইষৎ উষ্ণতা অনুভূত হয় তার… চকিত দৃষ্টিতে একবার ডেভিডকে দেখে নেয় পলকের চাউনিতে…

ডেভিড ততক্ষনে ড্রিঙ্ক রেডি করতে ব্যস্ত… সুদেষ্ণা লিকার নিতে অস্বীকার করে… তার বদলে সে অরেঞ্জ জুস নেয়… বাকিরা স্কচ নিয়ে বসে আরাম করে… খুব শীঘ্রই কথায় কথায় তাদের প্রাথমিক অস্বস্থিটা কেটে যায়… এমন ভাবে গল্প করতে থাকে যেন কতদিনের পুরানো বন্ধু তারা… অনেকদিন পর যেন দেখা হয়েছে তাদের আবার… নানা বিশয়ে কথা হতে থাকে… তাদের পড়াশুনা, কলকাতা, মুম্বাই, গোয়া, তাদের কর্মক্ষেত্র, ডেভিডদের ফার্ম হাউস… ফ্যামিলি… সুদেষ্ণার মনে হয় তারা যেন এখানে এসেছে পুরানো বন্ধুর সাথে দেখা করতে… মনেই হয় না যে তাদের অন্য কোন পরিকল্পনা রয়েছে বলে…

‘দিস ইজ ইয়োর ফার্স্ট টাইম?’

এলির আকস্মিক প্রশ্নে হকচকিয়ে যায় সুদেষ্ণা… ‘উমমম… আহহহ… হ…হ্যা…’ আমতা আমতা করে সে… হটাৎ করেই যেন মনে পড়ে যায় তার কিসের জন্য তাদের আগমণ…

‘হ্যা… মানে… আসলে এটা আমাদের দুজনেরই প্রথমবার…’ জবাবটা দেয় সৌভিকই… ‘আর সেই কারণেই আমরা দুজনেই একটু নার্ভাস হয়ে রয়েছি…’

সৌভিকের কথা শুনে খিলখিল করে হেসে ওঠে এলি… হাসির দমকে বুকদুটো ফুলে ফুলে উঠতে থাকে তার… বুকের ওপর থেকে প্লিট দিয়ে টেনে রাখা আঁচলটার খানিক আলগা হয়ে সরে যায়… বেরিয়ে আসে ব্লাউজের আড়ালে থাকা পুরুষ্টু স্তনের একটা… একজন রমনীর স্তন বড় হলে যে এতটা মহোময়ী হয় সেটা বোধহয় ঘরে উপস্থিত দুজনেরই জানা ছিল না… সৌভিক তো বটেই, সুদেষ্ণাও যেন বিস্ফারিত চোখে তাকিয়ে থাকে হাসির দমকে ছলকে ওঠা এলির বুকের দিকে… সে নিজে কোনদিনই উভকামী বা বাইসেক্সুয়াল নয়… মেয়েদের সাথে সেই ভাবে কখনই যৌনক্রিড়ায় জড়ায় নি বা ভাবেও নি… কিন্তু চোখের সন্মুখে এলির দুলতে থাকা লোভনীয় স্তনটা যেন তাকেও হাতছানি দেয়… পরক্ষনেই তার খেয়াল হয় কোথায় আর কোন পরিস্থিতির মধ্যে সে রয়েছে বলে… তাড়াতাড়ি চোখ নামায় এলির স্তনের ওপর থেকে… কানে আসে এলির সাথে ডেভিডেরও হাসির আওয়াজ…

নিজের চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় এলি… তারপর ওরা কিছু বোঝার আগেই সটান গিয়ে বসে পড়ে দুজনের মাঝখানে… দুজনের বসার জায়গাটা খুব বেশি না থাকার ফলে দুজনের গায়ের সাথে প্রায় লেপ্টে থাকে এলির নরম শরীরটা… ঠেকে থাকে দুটো উরুর সাথে দুই জনের উরু…

‘ওহ! বিগ বয় ইজ নার্ভাস?’ ফের খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে সৌভিককে উক্তি করে… হাত তুলে একটা হাল্কা ঘুসি মারে সৌভিকের বাহুতে… ‘উমমম… সুদেষ্ণার ব্যাপারটা বোঝা যায়… খুব স্বাভাবিক ভাবেই ওর নার্ভাস হওয়ার কথা… কারণ ওকে সামলাতে হবে আমার ওই বিশালদেহী স্বামীটিকে… ও যে কি করবে সুদেষ্ণাকে পেলে, সেটা ভাবতেই তো আমার নিজেরই ভিজে যাচ্ছে… কিন্তু তাই বলে সৌভিক, তুমি? তুমি নার্ভাস? আমার জন্য? কেন? আমাকে কি কোন বন্য পশুর মত লাগছে?’ বলে হাত তুলে একটা মেকি হিংস্র মুখের আদল করে দাঁতমুখ খিঁচিয়ে… দেখে ওরা দুজনেই বোকার মত হাসে… এলির মুখে ‘ভিজে যাওয়া’ কথাটায় কেমন শরীরের মধ্যেটায় একটা শিহরণ খেলে যায় সুদেষ্ণার… হাতের লোমে কাঁটা দেয় অকারণেই যেন…

‘আহ! এলি!… ওদের পেছনে লাগছ কেন?’ উল্টো দিক থেকে বলে ওঠে ডেভিড… ‘হতেই পারে ওরা নার্ভাস… শুধু ওরা কেন? আমি নিজেও নার্ভাস… দেখো… আমার হাত কিরকম কাঁপছে!’ বলে ইচ্ছা করে গ্লাস ধরা হাতটাকে নাড়ায় সবার সামনে… দেখে এবার সত্যিই ঘরের প্রত্যেকে হো হো করে হেসে ওঠে…

‘দেখো… যেহেতু এই ব্যাপারটায় তোমরা দুজনেই প্রথম… তাই একটা খুব জরুরি কথা বলে রাখি তোমাদের…’ হটাৎ করে একটু সিরিয়াস হয়ে ওঠে ডেভিডের গলার স্বর… তাতে বাকিরাও হাসি থামিয়ে মনোনিবেশ করে ডেভিডের কথায়… ‘এই ধরনের সোয়াপিংএ আসতে হলে দম্পতিদের দুজনকেই মানসিক দিক থেকে প্রস্তুত থাকতে হবে… আর শুধু তাই নয়… সেই দুইজন স্বামী স্ত্রীর মধ্যে একই ওয়েভলেঙ্গথ থাকা বিশেষ প্রয়োজন… মানে আমি বলতে চাইছি যে যদি কেউ নিজের থেকে না চায়, তাহলে এর মধ্যে না আসাই শ্রেয়…’ বলে একটু থামে ডেভিড… তারপর সুদেষ্ণার দিকে ফিরে প্রশ্ন করে… ‘সুদেষ্ণা, তুমি এখানে এসেছ আশা করি স্বইচ্ছাতেই?’

সুদেষ্ণা চকিতে একবার তাকিয়ে নেয় সৌভিকের পানে… তখন সৌভিকও তার দিকে তাকিয়ে রয়েছে… চোখে একরাশ প্রত্যাশা… সৌভিকের থেকে চোখ সরিয়ে নিয়ে তাকায় ডেভিডের দিকে সুদেষ্ণা… তারপর আস্তে করে মাথা নেড়ে উত্তর দেয়… ‘হু… আমি নিজের ইচ্ছাতেই এসেছি…!’

‘ওয়াও! গ্রেট! তাহলে আর কি! আর কোন প্রবলেমই নেই তবে… তোমরা দুজনেই খুব সুন্দর এক জোড়া দম্পতি… আমাদের সময়টা তাহলে বেশ ভালো কাটবে! কি বলো?’ পাশ থেকে এলির কথা শুনে কেমন কেঁপে ওঠে সুদেষ্ণা… মুখ তুলে একবার তাকায় এলির দিকে…

‘নাহ!… এবার আমার উচিত ডিনারের ব্যবস্থা করে ফেলা…’ বলতে বলতে ওদের মাঝখান থেকে উঠে দাঁড়ায় এলি… ওঠার সময় সুদেষ্ণার মনে হয় যেন তার উরুর ওপরে হাল্কা একটা চাপ পড়ে এলির হাতের… ‘চলো ডেভিড… আমরা ডিনারটার ব্যবস্থা করি… ওদেরকে একটু আলাদা ছেড়ে দিই বরং… ওরা নিজেদের মধ্যে কথা বলতে দেওয়ার জন্য একটু একা ছেড়ে দেওয়া উচিত আমাদের…’

সৌভিক তাকায় সুদেষ্ণার দিকে… কিন্তু সুদেষ্ণা মুখ তোলে না… ঘরের মেঝের দিকে তাকিয়ে চুপ করে বসে থাকে সে… এলি আর ডেভিড ঘর থেকে বেরিয়ে গেলে সরে এগিয়ে আসে সুদেষ্ণার কাছে সৌভিক খানিকটা… সুদেষ্ণার হাতটাকে নিজের হাতের মধ্যে তুলে নিয়ে বলে ওঠে সে… ‘কি হোলো? চুপ করে আছো? ওরা বেশ ভালোই? বলো?’ বলতে বলতে তার স্বরও যেন একটু কেঁপে যায়…

‘উমমম… জানি না… ভালো বলেই তো মনে হচ্ছে!’ মেঝের দিকে তাকিয়েই উত্তর দেয় সুদেষ্ণা…

‘তাহলে… তাহলে আমরা করছি এটা… তাই তো?’ সুদেষ্ণার হাতটাকে নিজের হাতের মুঠোয় চেপে ধরে বলে সৌভিক… প্রত্যুত্তরে কিছু বলে না সুদেষ্ণা আর… চুপ করেই থাকে সে…
.
.
.
খাবার টেবিলে ওরা পার্টনার বদল করে নিয়ে খেতে বসে… সৌভিকের পাশে বসে এলি, আর ডেভিডের সাথে উল্টো দিকে বসে সুদেষ্ণা… চেয়ারে বসে সৌভিকের দিকে চোখ তুলে একবার তাকায় সুদেষ্ণা… সৌভিক ম্লান হাসে প্রত্যুত্তরে…

‘এই! আমাদের দুজনকে কেমন লাগছে?’ হটাৎ করে প্রশ্ন করে এলি, ডেভিডকে…

‘হুমমম… আমায় যদি জিজ্ঞাসা করো… তাহলে বলবো তোমারা হচ্ছ সেকেন্ড বেস্ট পেয়ার… এই ঘরে…’ হাসতে হাসতে বলে ডেভিড…

‘হা! সে তো হবেই… তোমার পাশে যে ঘরের মধ্যের সব থেকে সুন্দরী রমনীটি রয়েছে…’ এলির জবাবে গালের ওপরে লালিমা লাগে সুদেষ্ণার… কানের লতিতে উষ্ণতার ছোয়া পায়…

খাবার শেষে সুদেষ্ণা এঁটো প্লেটগুলো তুলে নিয়ে এগিয়ে যায় কিচেনের দিকে… তা দেখে ডেভিড হাঁ হাঁ করে ওঠে… ‘আরে… তুমি কেন এই সব করছ? তুমি গেস্ট আমাদের…’

‘না, না… তাতে কি হয়েছে!’ মৃদু স্বরে উত্তর দেয় সুদেষ্ণা… কিন্তু হাতের কাজ থামায় না সে…

‘ওকে… তোমরা দুজনে যদি এই দিকটা সামলাও, তাহলে আমি সৌভিকের সাথে বসছি একটু ড্রিঙ্কস্‌ নিয়ে… কেমন…’ বলে এলি সৌভিকের হাতটা ধরে ড্রইং রুমের দিকে চলে যায়… সুদেষ্ণা আর ডেভিড মিলে পরিষ্কার করতে থাকে ডাইনিং টেবিলটাকে…
.
.
.
যখন সুদেষ্ণা ড্রইংরুমে এসে ঢোকে, দেখে সৌভিক একাই বসে রয়েছে সেখানে… ভুরু কুঁচকে তাকায় সুদেষ্ণা… ‘একি তুমি একা বসে? এলি কোথায় গেল?’

আঙুল তুলে ওপর দিকে দেখি বলে সৌভিক… ‘এলি ওপরে গেলো… বেডরুমে বোধহয়…’

তাহলে! এবার সত্যিই হতে চলেছে ব্যাপারটা! মনে মনে ভাবে সুদেষ্ণা… বুকের মধ্যেটায় একটা কেমন অস্বস্থি হু হু করে ওঠে তার… ধীর পায়ে সৌভিকের সামনে গিয়ে দাঁড়ায় সে… তারপর দুহাত বাড়িয়ে জড়িয়ে ধরে সৌভিককে…

সুদেষ্ণার মাথার চুলে হাত বোলাতে বোলাতে তার কপালে একটা চুমু খায় সৌভিক… ফিসফিসিয়ে প্রশ্ন করে… ‘তুমি ঠিক আছো?’

মৃদু মাথা নাড়ে সুদেষ্ণা… ‘হুম…’ তারপর একটা বড় নিঃশ্বাস টেনে বলে ওঠে… ‘তুমি যাও এবার তাহলে…’ বলতে গিয়ে একটা অব্যক্ত অনুভূতি গলার মধ্যে পাকিয়ে ওঠে যেন তার…

আর কোন কথা না বলে টেবিলের ওপর থেকে ড্রিঙ্কস্‌এর গ্লাসটা তুলে ধীর পায়ে বেরিয়ে যায় ঘর থেকে সৌভিক… ঘাড় ফিরিয়ে তার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে সুদেষ্ণা… এক সময় সৌভিকের দেহটা চোখের আড়াল হয়ে গেলে হটাৎ করে কেমন যেন নিজেকে ভিষন একা লাগে তার… ওই বিশাল বড় ড্রইংরূমটার মধ্যে…

‘তুমি কফি খাবে?’ ডেভিডের গলার স্বরে চমকে ওঠে সে… মুখ তুলে তাকায় সামনের পানে…

‘না না… ইটস্‌ ওকে… তুমি খেতে পারো…’ গলাটাকে ঝেড়ে নিয়ে উত্তর দেয় সুদেষ্ণা…

‘ঠিক আছে… পরে না হয় আমরা দুজনেই খাবো’খন…’ বলতে বলতে ডেভিড এগিয়ে আসে আরো কাছে সুদেষ্ণার, তারপর একটা হাত তুলে রাখে ওর কাঁধের ওপরে…

কাঁধের ওপরে ডেভিডের হাতের স্পর্শ পাওয়া মাত্রই প্রায় লাফিয়ে ওঠে সুদেষ্ণা…

‘ওহ!… রিল্যাক্স… সুদেষ্ণা…’ তাড়াতাড়ি নিজের হাতটা সরিয়ে নিয়ে বলে ওঠে ডেভিড…

‘না… মানে সরি… আসলে বুঝতেই পারছো… এটা আমার প্রথমবার… আসলে আমি একটু টেন্সড্‌ হয়ে রয়েছি আর কি… মানে এখনো আমি ঠিক তৈরী নই…’ মাথা নীচু করে বলে সুদেষ্ণা… মুখটা লাল হয়ে ওঠে লজ্জায় আর একটা অদ্ভুত ভয়ের সংমিশ্রনে…

‘ঠিক আছে… নো প্রবলেম… আমি জানি যেহেতু এটা তোমার প্রথমবার, তাই তোমার মনের মধ্যে অনেক প্রশ্ন ভীড় করে আছে… কিন্তু ভেবো না… এ নিয়ে চিন্তাও কোরো না একেবারেই.. দেখো… আমারা এখানে জড়ো হয়েছি মজা করার জন্য… কোন সমস্যা তৈরী করতে নয়… তাই না?’ আস্বস্থ করার চেষ্টা করে ডেভিড…

তারপর একটু থেমে সুদেষ্ণার দিকে ভালো করে তাকিয়ে প্রশ্ন করে ডেভিড… ‘তুমি এই ব্যাপারটায় ঠিক মত দিতে পারছ না… তাই না?’

ডেভিডের কথায় কোন উত্তর দেয় না সুদেষ্ণা… চুপচাপ শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে তার সামনে সে…

‘সৌভিক কি তোমায় কোন ভাবে বাধ্য করেছে এই ব্যাপারটায় আসার জন্য?’ গাঢ় গলায় প্রশ্ন করে ডেভিড ফের…

‘না, না… আমি… আমি নিজের থেকেই রাজি হয়েছি এতে…’ ঠোঁটের ওপরে জোর করে হাসি টেনে আনে সুদেষ্ণা…

‘কিন্তু তুমি তো ভয়ে শিঁটিয়ে আছো প্রায়… একটা ছোট্ট মুর্গির ছানার মত…’ বলতে বলতে সোফায় বসে পড়ে ডেভিড… ‘বেশ… আমরা বরং অপেক্ষা করবো… যতক্ষন পর্যন্ত না তুমি তৈরী হও… ওকে?’

‘ওহ! উমমম!’ অবধ্য কিছু আওয়াজ শুধু বেরোয় চাপা স্বরে গলার মধ্যে থেকে সুদেষ্ণার, কিন্তু আর কোন কথা বলে না সে… ডেভিডের ওপর দিকের সোফায় বসে পড়ে… তারপর বেশ কিছুক্ষন কেউ কোন কথা বলে না… চুপচাপ বসে থাকে ঘরের মধ্যে…

একটা সময় নিস্তব্দতা ভাঙে সুদেষ্ণাই… ‘আচ্ছা… একটা কথা জিজ্ঞাসা করবো?’

ভুরু তুলে তাকায় ডেভিড… ‘হ্যা… হ্যা… কি?’

‘মানে… তোমার হিংসা হয় না? মানে এই যে তোমার স্ত্রীর সাথে একজন অন্য পুরুষ রয়েছে…’ অস্বস্থি মেশানো গলায় প্রশ্ন করে সুদেষ্ণা…

‘একেবারেই নয়…’ হাত তুলে কাঁধ শ্রাগ করে ডেভিড… ‘বরং আমি খুশি যে ও এঞ্জয় করছে নিজেকে…’

‘অদ্ভুত মানুষ তুমি…’ ডেভিডের উত্তর শুনে বলে ওঠে সুদেষ্ণা… তারপর ডেভিডের চোখের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে সে… ‘আর যদি সকাল অবধিই আমি এটার জন্য তৈরী না হই? তাহলে?’

‘তাহলে আমি তোমায় বেশি সময়ই দেবো না…’ ঠান্ডা গলায় উত্তর দেয় ডেভিড… ‘আর পনেরো সেকেন্ড সময় দেবো তোমাকে আমি… তার মধ্যে তুমি হ্যা না বললে… এই খানেই তোমায় রেপ করবো’

উত্তরটা শুনে ভ্যাবাচাকা খেয়ে যায় সুদেষ্ণা… ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে ডেভিডের দিকে… তারপর যখন বোঝে যে পুরোটাই ইয়ার্কি করে কথাটা বলেছে ডেভিড, সে হো হো করে হেসে ওঠে…

‘তোমায় খুব সুন্দর দেখায় যখন তুমি মন খুলে হাসো…’ গাঢ় গলায় বলে ওঠে ডেভিড…

শুনে লাল হয়ে ওঠে সুদেষ্ণার গাল… চোখ নামিয়ে বলে সে… ‘আমি কফি করে নিয়ে আসছি… তোমার জন্য…’

Leave a Comment