বুঝি না খুজে খুজে সব কঠিন প্রশ্ন গুলো কেন আমাকে করে। টুওসিক্স সেশনালে এবার পুরো ধরা। তিনজনের গ্রুপে সিনথীকে অলমোস্ট কিছুই ধরলো না। শিবলীও ওকে। আমাকে দেখে নজরুল মুচকি হেসে বইয়ের পাতা উল্টে জঘন্য সব কোয়েশ্চেন গুলো করলো। মুখ কালো করে ল্যাবের বাইরে এসে দাড়িয়েছিলাম, সিনথী বললো, এত মন খারাপ করলি কেন, ফাইনাল প্রেজেন্টেশন তো এখনও বাকি আছে। এই টীচারটা তোকে দেখতে পারে না, অন্যরা হয়তো ঠিকই ভালো নাম্বার দেবে।
– যা, যা, এখন উপদেশ দিতে আসিস না
– ওরে বাবা, আমি আবার কি দোষ করলাম
– তুই করিস নি, এখন একা থাকতে দে
সিনথীয়া ওরফে সিনথি আমাদের গ্রুপমেট। এই ইউনিতে একটা অঘোষিত নিয়ম রোল নাম্বার অনুযায়ী ল্যাবের গ্রুপিং গুলো হয়। রোল নাম্বার আবার এ্যাডমিশন টেস্টের ফলাফলের সিরিয়াল অনুসারে। মাঝে মাঝেই ভাবি সিনথি যে কেন আরেকটু ভালো করলো না, নাহলে আমি একটু খারাপ করলেও হতো। এই সেলফিশ বিচটার সাথে এক গ্রুপে পড়তে হতো না। ক্লাশে সবাই জানে ও গ্রেডের জন্য পারে না এমন কিছু নেই। সমস্ত প্রজেক্টে ও টীচারদের সাথে আগ বাড়িয়ে এমনভাবে কথা বলে যেন গ্রুপে ও একাই সবকিছু করছে।
আমি হেটে ক্যাফেতে চলে এলাম। সিনথির সাথে কথা বলার মত মুড নেই। নেক্সট উইকে টার্ম শেষের প্রেজেন্টেশন, ওখানেও সুবিধা হবে না। রাতে সিনথী ফোন করলো, তানিম, তুই সত্যিই আমার ওপরে মাইন্ড করেছিস?
– ধুর বাদ দে না, কেন কল দিয়েছিস?
– না, না। আমি ঠিকই টের পাচ্ছি। তোদের ধারনা আমি লিডিং রোল নিচ্ছি বলে তোদের গ্রেড খারাপ আসছে। শোন একটা অফার দিচ্ছি আমি। নেক্সট উইকের ডেমোটা তুই কর। এটা আমি কোন রাগ হয়ে বলছি না। অনেস্ট প্রপোজাল।
আইডিয়াটা খারাপ বলছি না। হয়তো করে দেখাই উচিত। সিনথীর শ্যাডোতে পরে আমাদের বারোটা বাজছে, একবার নিজে করে দেখি কি হয়। সিনথী উইকেন্ডে স্লাইডগুলো বানিয়ে ইমেইল করে দিল। দুপুরে ব্রেকের সময় ডেকে নিয়ে বললো, ডেকটা দেখেছিস?
– হু
– মহড়া দিয়ে নে
– তোকে মাতব্বরি করতে হবে না, আমি বুঝবো কি করতে হবে
– তুই এত ইগোইস্টিক কেন যে। তোকে ভালো পরামর্শ দিচ্ছি আর তুই ভাবছিস করুনা করছি। শোন, তুই স্টেজে গিয়ে মেরে দিবি ভেবে থাকলে ভুল করবি
– লিভ ইট। তোকে বড়বোন গিরি করতে হবে না
– আমি কোন বড়বোন গিরি করছি না, তুই বাচ্চাদের মত করছিস। একটা নোট তৈরী কর, তারপর কালকে আমার সামনে একবার পুরোটা প্রেজেন্ট কর। অনেস্টলী বলছি এটা কাজে লাগে। আমি কয়েকবার প্রj্যাক্টিস করে আসি। নাহলে এমন লেজেগোবরে হয়ে যাবে যে তোকে সি ধরিয়ে দেবে
সিনথীয়া রোল নাম্বারে আমাদের মত পিছনের সারিতে ছিল। গত দুটার্মে রেজাল্টে সেটা মুছে ফেলেছে পুরোটাই। ফ্রেশম্যান ইয়ারে প্রথম দশে। এবার হয়তো আরো আগাবে। এর সাথে আবার ডিবেটিং ক্লাব, ফটোগ্রাফী ক্লাব, কত কি। এসব না করলে হয়তো আরো আগেই টপ থ্রীতে ঢুকে যেত। দেখতে এমন আহামরী কিছু না, এয়তো এবোভ এভারেজ, স্কিনি। প্রতিদিন হালকা করে সেজে আসে ইউনিতে, যতটুকু চেহারা আছে সেটাই সাজিয়ে রাখে।
রাতে নিতান্ত অনিচ্ছায় ওর কথা মত কি বলবো সেটা টুকে নিলাম, তিন ঘন্টা সময় নষ্ট করে। পরদিন দুপুরে সিনথী আমি আর শিবলী ওএবিতে গিয়ে মহড়া দিয়ে আসলাম। আমার আবার স্টেজ ভীতি আছে। লোকজনের সামনে বলতে গেলে কথা জড়িয়ে যায়। সিনথী জোর করে কয়েকবার বলিয়ে নিল। ও ব্যাকসীট নেবে। আমি স্লাইডগুলো দেখাবো আর শিবলী প্রজেক্ট ডেমো করবে।
বুধবার দুরুদুরু বুকে হাজির। সকালের সেশনে আমারদের গ্রুপেরটা হবে। হলওয়েতে ক্লাসের পোলাপান। কেউ চিন্তিত, কেউ হাসাহাসি করছে। সিনথী আমাকে দেখে বললো, একটু কাজ আছে উপরে চল। ছয় তলায় নিয়ে এলো আমাকে। এত সকালে ও গোসল টোসল করে স্নিগ্ধ হয়ে এসেছে। এই ফ্লোরে ক্লাসরুম কম। দুটো ব্লকের মাঝে ফাকা জায়গায় নিয়ে এসে আমাকে বললো, ভয় পাস নে, কীপ কাম, এ্যান্ড স্টে কুল। আমি তো আছি। কিন্তু তুই একটানা বলে যাবি, কিউ এ করবি শেষে। মোমেন্টাম হারাবি না। ওকে?
– আচ্ছা
– তোর চেহারা দেখে মনে হচ্ছে তুই ভয় পেয়েছিস
এই বলে সিনথিয়া কাছে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো। আমি তো ঘটনার আকস্মিকতায় একটু হতচকিত। ও তারপর মুখ উচু করে ঠোটে শুকনো একটা চুমু দিয়ে বললো, যা, এখন মন শক্ত করে কথাগুলো বলে আয়।
আমি কি দিয়ে কি হলো তখনও গ্রাস্প করার চেষ্টা করছি। মেয়েটার দিকে তাকিয়ে দেখলাম। ডিসেন্ট একটা সাজ দিয়ে এসেছে আজকে ও। এমনকি চোখে কাজল দিয়ে থাকলেও অবাক হব না। আয়রন লেডির সফট কোর? আমি এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ওকে দেখলাম। দুষ্টুমী ভরা ঠোটে এখনও হাসি। সিনথী আবার বললো, আমাকে দেখতে হবে না, আরো দেখার সুযোগ পাবি, এখন যেটা করতে বলছি সেটা ভালোমত কর।
একে বলে ওয়ার্ল্ড আপসাইড ডাউন ইন এ মোমেন্ট। ওয়াও গার্ল ওয়াও। ইউ আর রিয়েলী সামথিং।
রিটেন একজামের আগে দু সপ্তাহের বন্ধ শুরু হয়ে গেল। আমি নিজেই এখন সিনথীকে ফোন করি দিনে কয়েকবার। সিনথীও করে, একটু কম। কিভাবে যেন পড়াশোনায় ভীষন আগ্রহ পাচ্ছি। সেই প্রেজেন্টেশনটা একটু ভালো হওয়ার পর থেকে আমাকে নিউ ফাউন্ড কনফিডেন্স চেপে ধরেছে।অথবা। যেটা স্বীকার করতে চাই না। সিনথীর চুমুটার কারনেও হয়ে থাকতে পারে। বন্ধের মধ্যে একদিন লাইব্রেরীতে গেলাম। ম্যাথের অনেক এক্সারসাইজের সল্যুশন করতে পারি নি। সিনথী বেশীরভাগই করেছে, ওরও কয়েকটা বাকী। লাইব্রেরীতে চোথা পাওয়া যায়, ক্লাসে বেশ কিছু নার্ড আছে যারা সব ম্যাথই সল্ভ করতে পারে, ওদেরটা জোগাড় করতে হবে। সিনথীর কথা বলতে বলতে ওএবিতে ঘুরছিলাম। বন্ধে কর্মচারীরা ছাড়া তেমন লোকজন নেই। ক্ষীন আশা মনে মনে যদি আরো কিছু হয়। একটা ফাকা ক্লাশরুমে ঢুকে সিনথী বললো, কেমন হচ্ছে প্রিপারেশন
– আহ, আমার প্রিপারেশন। থ্রী পয়েন্ট ফাইভ হলো টার্গেট, তোর কি অবস্থা
– ভাল
– ফোর?
– জানি না, পরীক্ষা না দেয়া পর্যন্ত কিভাবে বলি, তবে গত টার্মের চেয়ে ভালো হবে
– হুম। কেন, বেশী পড়ছিস এবার
– ও নাহ। পড়ছি একইরকম, তবে একটু চার্জড আপ হয়েছি
– সেটা আবার কি রকম
সিনথী এদিক ওদিকে তাকিয়ে আমার মাথাটা ধরে আবার ঠোটে একটা চুমু দিল। ভেজা। ওর মুখের মিন্টের চমৎকার গন্ধটা এসে নাকে লাগল। বললো, এই যে এরকম, তুই ফীল করিস না কিছু
– করি তো
– তো তাহলে বলিস না কেন?
– তুই খেপে যাবি এজন্য বলি নি
– হায়রে বোকা ছেলে, সারাদিন একশবার কল দিচ্ছিস, আমার কি আর বুঝতে বাকি আছে
ক্লাসরুমের এক কোনায় গিয়ে আবার চুমু দিলাম। দু হাত দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম মেয়েটাকে। কাপড়ের ওপর দিয়ে হাড়গোড় টের পাওয়া যায়। না খেয়ে থাকে মনে হয়। ও কাধে মাথা রেখে চুল শুকতে লাগলাম। ও জানে কি না জানি না, ওর চুলগুলো সবসময় খুব সেক্সী মনে হতো আমার কাছে। একটু কোকড়ানো, পিঠ পর্যন্ত চলে আসা রেশমী চুল। ঘাড়ে কাধে চুমু দিয়ে আবার ঠোটে।
ভালোলাগায় ভরা অনুভুতি নিয়ে পরীক্ষার সময়টা কাটলো। পরীক্ষার হলে ও আমার দু বেঞ্চ সামনে। লিখতে লিখতে ও পিছনে তাকায়। আমিও চোখ তুলে মুচকি হাসি। ইনভিজিলেটর দুজনকেই দেখে নেয়।
পরীক্ষার পর একদিন দুজনে মিলে দৃক এ একজিবিশন দেখতে গেলাম। গ্যালারী থেকে বের হয়ে হাটতে হাটতে ধানমন্ডি লেকের পারে। সিনথী বললো, আচ্ছা আজকে কি আমার ডেটিং এ এসেছি?
– কি জানি, হয়তো, মানে সেরকমই তো লাগছে
ওর কথামত তুই বাদ দিয়ে তুমিতে গিয়েছি ইতোমধ্যে। সিনথী বললো, জানো একটা কৌতুহল সবসময় আমার মধ্যে, খুব জানতে চাই, হাউ ডাজ ইট ফীল হোয়েন ইউ আর এ গাই
– কি ফীল?
– লাইক লাভ
– তুমি যেমন ফীল করো আমিও তাই, অল দা সেইম
– ক্যান্ট বি সেইম। কিছু পার্থক্য তো থেকেই যায়। যেমন তুমি ছেলে, মোস্টলী আনইনহিবিটেড, করার আগে ভাবতে হয় না, করে হয়তো দরকার পড়লে ভাবো
– নাহ, নট ট্রু। আর এযুগে ছেলে আর মেয়েতে কি এমন তফাত
– বাংলাদেশে এখনও অনেক রাস্তা পার হতে হবে। কিন্তু তোমার কথা বলো, গার্লস টেইকিং চার্জ, টেইকিং ওউনারশীপ তুমি কিভাবে দেখো?
– আহ, এর আবার উত্তর দিতে হবে নাকি। আমাদের দুজনের মধ্যে তুমিই ইন চার্জ। তুমি আমার চেয়ে প্রায় সবদিকে ভালো করছ, পড়াশোনা, গ্রেডস, ম্যাচুরিটি। আমার কোন অস্বস্তি লাগছে না। অনেস্টলী একটু রিল্যাক্সড ফিল করি মাঝে মাঝে
– রিয়েলী। নট জেলাস অর এনিথিং
– মেই বি জেলাস, এ লিটল বিট। আই হোপ, এমন কিছু খুজে পাবো যেখানে আমি তোমার চেয়ে ভালো। বাট আই থিংক ইটস ওকে। তুমি আমার চেয়ে পড়াশোনায় ভালো, এটা রিয়েলীটি, আমাকে একসেপ্ট করতে হবে
– আমি এমন একটা রিলেশনশীপ চাই যেটা আনইনহিবিটেড। এবং জেলাসী ফ্রী। এই দেশে ছেলেরা একরকম সুপিরিওরিটি কম্প্লেক্স নিয়ে বড় হয়, মেয়েরা যতই ভালো করুক তাদেরকে হেয় করতে চায়
– কালচারাল ফ্যাক্টর মেই বি
– অফ কোর্স। তুমি দেশের এসিড সন্ত্রাস নাহলে ইভটিজিং ভিক্টিমদের প্রোফাইল দেখ। বেশীর ভাগ গ্রামাঞ্চল, মফস্বল নাহলে লো মিডলক্লাসে ঘটে। একজাক্টলী যেখানে ছেলে আর মেয়েরা টীনএজ থেকে অবাধ মেলামেশার সুযোগ পায় না। প্রেডিক্টেবলী, ছেলেদের মধ্যে মেয়েদের সমন্ধে অসংখ্য ভুল ধারনার সৃষ্টি হয়
– ট্রু। আমি কখনো ইভ টিজিং করি নি। দরকার হয় নি আসলে। ছোটবেলা থেকে নাগালের মধ্যে এনাফ মেয়ে ছিল। হোপফুলী আমার মধ্যে সুপিরিয়রিটি কমপ্লেক্স নেই
– হা হা, দেখা যাবে। কালকে বাসায় আসো আম্মু থাকবে না, গল্প করবো নে, আর আমি কিভাবে থাকি দেখে যাও
– আর কেউ থাকবে না তো? আমার আবার মেয়েদের বাসায় যেতে ভয় করে। প্রায় বড় ভাই নাহলে আব্বু মার্কা কারো সাথে দেখা হয়ে যায়
– ইউ আর রিয়েলী ফানি গাই। নাহ, ভাইয়া গত বছর থেকে বাইরে। আব্বু রাতের আগে আসবে না। নো ওরিস
সকালে উঠে গোসল দিয়ে, চুলে জেল মেখে সিনথীর বাসায় হাজির। চারতলায় ওদের ফ্ল্যাট। বাসাটায় কেমন মেয়ে মেয়ে গন্ধ। একাধিক মেয়ে থাকে মনে হয়। ও খাটে পা তুলে চাদর মুড়ে বসলো। আমি ওর চেয়ারটায়। কোন সাজগোজ ছাড়া এলোমেলো চুলের সত্যিকার সিনথীকে দেখছি। মিথ্যেও হতে পারে। প্রতিবার প্রেমে পড়ার পর প্রেমিকাকে আবার বিশ্ব সুন্দরী মনে হয়। অটিমেটিক এই অনুভুতি আসে, চেহারায় যা দেখি তাই ভালো লাগে। ঘুম থেকে উঠে সিনথীর মুখ ফুলে আছে। আরো বেশী সুন্দর লাগছে ওকে। নিজের বাসায় ও মনে হয় আসলেই “আনইনহিবিটেড”, বড় বড় চোখ মেলে যেভাবে আমাকে দেখছে। ইচ্ছে হয় গিয়ে জড়িয়ে ধরি বস্তুটাকে। সিনথীর ছোটবেলার এ্যালবাম দেখে হাসতে হাসতে সময় কাটছিলো। ও ছোটবেলা থেকেই টম বয়। আমি বললাম, ইউ আর এ নটি গার্ল
– দুষ্টুমীর আর কি দেখেছো
দুপুরে সিনথী খাবার গরম করছিল। আমিও ওর সাথে কিচেনে গেলাম। ওকে না জিজ্ঞাসা করে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলাম। আমার হাতগুলো ওর পেটে। নাক মুখ ঘষে নিচ্ছি ওর পিঠে। টের পাচ্ছি ও বড় বড় নিশ্বাস নিচ্ছে। ও নিজের হাতগুলো আমার হাতের ওপর রাখলো। এ মুহুর্ত কি ভেবে কোলে তুলে নিলাম মেয়েটাকে। সিনথী চোখ বন্ধ করে আছে। চুমু দেব কি দেব না ভাবছি। মনে মনে ভয় হয়, ও তো কোন সিগনাল দিচ্ছে না। মুখটা ওর মুখের কাছে এনে দেখছিলাম ওকে। এই মেয়েটা এখন আমার। ভাবতেই ভালো লাগায় মন ভরে যায়। সিনথী চোখ মেলে বললো, ইটস ওকে, দাও
চুমু দিতে দিতে ওর রুমে চলে এলাম। সিনথী বললো, আই হ্যাভ এ্যান আইডিয়া। জানালার পর্দা ফেলে চোখে ঠুলি দিয়ে বসে থাকি
– তারপর?
– দেখি কি হয় তারপর
ও একটা ওড়না দিয়ে আমার চোখ বেধে দিল। রিমোট চেপে হালকা মিউজিক অন করে দিয়েছে। আমি আন্দাজের ওপর ভরসা করে ওর চোখ বেধে দিলাম। আমি দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে আর সিনথি আমার কোলের ওপরে। কথা বলতে বলতে ও আমার একটা হাত ওর দুধের ওপর নিয়ে গেল। প্রথমে টের পাই নি ভাব ধরে কিছু বললাম না। সিনথী কয়েকবার হাত বোলানোর পর আমি নিজে থেকে একটু চাপ দিলাম দুধে। কয়েক স্তর কাপড়ের ওপর থেকেও নরম তুলতুলে বস্তুটা শরীরে শিহরন ধরিয়ে দিচ্ছিল। সিনথী পিঠ দিয়ে ছিল আমার দিকে, তারপর ঘুরে গিয়ে বললো, আমি তোমাকে আনড্রেস করবো। দেখবো না। জাস্ট ফিল করতে চাই
– করো
ও আমার দু পায়ের ওপর বসে শার্টের বোতামগুলো খুলে ফেলল এক এক করে। তারপর বুকে হাত দিয়ে অনুভব করার চেষ্টা করছিল। সেসময় অল্প অল্প করে বুকে লোম গাজাচ্ছে আমার। খামছি দিয়ে ধরতে চাইলো সিনথী, কিন্তু আমার লোমগুলো তেমন ঘন ছিল না। আমি বললাম, জাস্ট বগলে হাত দিও না, পরিষ্কার করে আসতে পারি নি
– মানা করলে কেন, এখনই হাত দেব
এক দফা কাতুকুতু দিল সিনথী, আমার এমনিতেই সুড়সুড়ি বেশী, আমি বললাম, একটা দুর্ঘটনা ঘটে যাবে, চোখ বাধা কিছু দেখতে পাচ্ছি না
– আচ্ছা ঠিক আছে। উঠে দাড়াও তাহলে
আমি উঠে দাড়ালাম।
– গোসল করে এসেছ নাকি? সাবানের স্মেল পাচ্ছি
– হু
– ঢং আছে তোমার
– ঢং এর কি, ডেটিং এ বেরোনোর আগে সবসময় গোসল করে আসি
ও হাতরে আমার প্যান্টের বাটনটা ধরে বললো, খুলবো?
– খুলো
প্যান্ট নামাতে গিয়ে জাঙ্গিয়ার ভেতরে খাড়া হয়ে থাকা ধোনটার উপস্থিতি টের পেয়ে সিনথী বললো, ও মা, ছি ছি, শক্ত হয়ে আছে
– তো? তুমি যে কান্ড করছো না হয়ে উপায় আছে
– হয়েছে, চুপ। এখন নিজের জাঙ্গিয়া নিজে খোল
ও পেছনে গিয়ে আমার পিঠে হাত দিল, পেছন থেকে বুকে হাত দিয়ে পিঠে ওর মুখটা ঘষলো কতক্ষন। আমার তখন সব লোম দাড়িয়ে গেছে। ও ঠোটা লাগাচ্ছে পিঠে আর সাথে সাথে গুজ বাম্প হয়ে শরীরটা রিয়্যাক্ট করে। আমার বুক পেট হাতাতে হাতাতে সাহস করে নুনুটার ওপর হাত দিল মেয়েটা। শক্ত হয়ে থাকা ধোন তেতে আছে তখন। শুরুতে অল্প করে হাত লাগিয়ে আবার পেট হাতড়াচ্ছিল সিনথি। তারপর সামনে এসে ধোনটা ভালোমত মুঠোয় নিল। আঠালো তরলের অস্তিত্ব টের পেয়ে বললো, ওহ গড, তোমার কি এখনই বের হয়ে যাচ্ছে নাকি?
– নাহ, তুমি যা ভেবেছ এগুলো সে জিনিশ না, উত্তেজিত হলে এই লালা ঝরে। তুমি যেটার কথা বলছো ঐ জিনিশ বের করতে অনেক কসরত করতে হবে
– তাই নাকি, আমার তো ধারনা তোমরা চাইলেই বের করতে পারো
– রং। ইনভলান্টারী প্রসেস, চেয়ে লাভ নেই
নুনু হাতিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে রইলো সিনথী।
রাতে সিনথী ফোনে বললো, ইউ আর রিয়েলী এ জেন্টলম্যান। আমাকে একা পেয়েও কোন ঝামেলা করলে না। নট দ্যাট আমি তোমাকে করতে দিতাম
– থেংকু। কমপ্লিমেন্টের জন্য। আসলে এ্যানিমাল ইন্সটিঙ্কট যে হয় নি সেটা বলবো না। কিন্তু তোমার সাথে রিলেশনশীপ ওয়ে টু ইম্পর্ট্যান্ট, এটা স্পয়েল করতে মন চাইছিলো না
– ভেরী গুড। তবে বাংলাদেশের বেশীরভাগ পুরুষকে দেখলে তা মনে হয় না। সেদিন পলাশী থেকে রিকসায় করে বাসায় আসছি, রিকসাওয়ালা এমনভাবে তাকাচ্ছিলো নিজের কাছেই নিজেকে নোংরা মনে হচ্ছিল। আমি ঠিক বুঝি না পুরুষজাতটার সমস্যা কি?
– ডিফিকাল্ট কোয়েশ্চেন। ইনকারেক্ট আপব্রিঙ্গিং একটা হতে পারে। মেয়েদেরকে বেশী অবজেক্টিফিকেশনের জন্যও হতে পারে। আই মীন, খুব সুন্দরী মডেল দেখলে আমি নিজেও অবজেক্টিফাই করি, ইন্সটিঙ্কট, কাকে দোষ দেব
– তোমরা তো মেয়েদেরকে এখনও প্রপার্টি ভাবো, মানুষ ভাবার আগে, মডেল হোক আর কুৎসিত হোক
– এগ্রি। এর কারন হয় মনে প্রচলিত ধর্মীয় অনুশাসন। এখানে ননঅবভিয়াস ওয়েতে এটা শেখানো হয়। মানে আমার যদি একশ ভরি সোনা থাকতো তাহলে যেমন কাপড়ে মুড়ে লুকিয়ে রাখতাম, সেরকম বৌ বা মেয়েকেও লোকে হিজাবে মুড়ে রাখে। ওয়ান্স ছোটবেলা থেকে একটা শিশু মেয়েদের ডিহিউম্যানাইজেশন দেখে বাই দা টাইম সে বড় হয় সে ভাবে মেয়েরা স্রেফ বাচ্চা বানানোর অবজেক্ট। এছাড়া কন্সট্যান্ট এন্টি উইমেন লেকচার তো আছেই। মেয়েদের বেহেশত ছেলেদের পায়ের নীচে, অথবা মেয়েরা লীডার হতে পারবে না, মেয়েরা কাজেকর্মে খারাপ
– স্টেরিওটাইপস। ইটস অল সোসাল স্টেরিওটাইপিং। এনিওয়ে, দেখবো তুমি মুখে যা বলো বাস্তবেও বিশ্বাস করো কি না
– গো এহেড বেইব, ছিড়ে খুড়ে দেখো আমাকে। হা হা
দেখতে দেখতে তিন সপ্তাহ বন্ধ শেষ হয়ে নতুন টার্ম শুরু হলো। আমি থ্রী পয়েন্ট সিক্স ফাইভ। সিনথী নাইন থ্রী। ও গতবারও এরকম পেয়েছিল। তবে আমি অনেক ভালো করেছি আমার তুলনায়। আনঅফিশিয়ালী সবাই আমাদেরকে লেটেস্ট কাপল হিসেবে ধরে নিয়েছে। শিবলী মাথা নেড়ে বললো, তুই একটা রাম ধরা খাবি। খুজে খুজে আর মেয়ে পেলি না। এদিকে আমাদের প্রকাশ্য বেলেল্লাপনা বেড়েই চলেছে। ক্লাসে হাত ধরাধরি তো অনেকেই করে একদিন চুমু দিলাম সবার সামনে। আরেকদিন ফাকা লিফট পেয়ে জড়িয়ে চুমু বিনিময় হচ্ছিল হঠাতই লিফটের দরজা খুলে গিয়ে ডিপার্টমেন্টের বুড়ো প্রফেসর দেখে ফেললেন। উনি অবশ্য কিছু বলেন নাই। বেশী সময় কাটাতাম বিকালে ওএবির ফাকা ক্লাসরুমে। সিনথী বললো, সত্যি করে বলো তো তুমি দিনে কতবার টেনশন রিলিজ করো?
– টেনশন রিলিজ, হোয়াটস দ্যাট?
– ছেলেরা যেটা করে
– মানে, হাত মারা বলতে চাচ্ছো
– বিশ্রী শব্দ, হ্যা ওটাই বলছি
– দিনে কয়েকবার থাক দুরের কথা সপ্তাহে হয়তো একবার করি, তাও মনে থাকে না
– যাহ মিথ্যা বলো না বুড়ো বয়সে
– মিথ্যা বলবো কেন তোমার কাছে বেইব, ইটস ট্রু। তুমি কতবার করো
– আমাদের তো ওরকম কিছু নেই। মানে আছে কিন্তু একদম ওরকম তো না
– কিন্তু তুমি করো না?
– বলবো না
– দ্যাটস আন ফেয়ার, আমি বললাম আর তুমি বলবে না কেন?
– আচ্ছা আচ্ছা। মাঝে মধ্যে, ধরো মাসে একবার, আই এ্যাম এ গার্ল ইউ নো। আমার ড্রাইভ কম
– হা হা, ঠিক আছে
– অনেস্টলী নিজে নিজে করতে আমার অস্বস্তি লাগে
– কেউ করে দিলে ভালো হতো?
সিনথী মুচকি হেসে বললো, তুমি জানো কিভাবে করতে হয়?
আমি ওকে কখনো আমার অতীত অভিজ্ঞতা বলি নি, বছরখানেক আগে রিমির সাথে এগুলো নিয়ে তিক্ততা হওয়ার পরে ঠিক করেছি এসব বিষয়ে অনেস্ট হলে সবাই কষ্ট পায়। হোয়াইট লাইজ বলতে হবে। আমি বললাম, পর্নে দেখেছি, বাস্তবে আর সুযোগ কোথায়
– সুযোগ দিলে?
– চেষ্টা করে দেখতে পারি
এরপর…